গুয়াহাটি, ২৮ মে, (হি.স.) : দেশ তথা রাজ্যের জনসাধারণের সঙ্গে প্ৰতারণা করছে বিজেপি। এই অভিযোগের ভিত্তিতে গুয়াহাটিতে আজ প্রবঞ্চনা-বিরোধী দিবস পালন করেছে প্রদেশ কংগ্রেস। এ উপলক্ষে দিশপুরে মানবেন্দ্র শর্মা কমপ্লেক্সে আয়োজিত দলীয় এক সভায় কেন্দ্র ও রাজ্যে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে দেদার অকর্মণ্যতার অভিযোগ তোলে বক্তব্য পেশ করেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ।
তাঁর অভিযোগ, ক্ষমতায় এসেই বিদেশি তাড়াবেন বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সেই গালভরা প্রতিশ্রুতি কোথায় গেল? এখন পর্যন্ত কতজন এবং কোথাকার বিদেশি বিতাড়ন তিনি করেছেন, তার জবাব চাইছেন তরুণ গগৈ। মাস-আটেক আগে কাজিরঙা থেকে ‘বিদেশি’র নামে যাদের উচ্ছেদ করা হয়েছিল তাঁরা এখন কোথায়? উচ্ছেদের শিকার মানুষজনকে কোথাও পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে কি না, অথবা বর্তমানে তাঁরা কোথায় রয়েছেন, জানতে চেয়েছেন তিনি।
জিনিসপত্রের দাম কমানোর আশ্বাস দিয়ে মানুষের ভোট আদায় করেছিলেন মোদী। কোন জিনিসের দাম কমেছে, তা-ও জানতে চান তরুণবাবু। বলেন, দাম কমা-তো দূরঅস্ত্, প্রায় সব সামগ্রীর দাম হু হু করে বাড়ছে বলে তীর্যক মন্তব্য করেছেন প্ৰাক্তন মুখ্যমন্ত্ৰী।
কংগ্ৰেসের মন্ত্ৰীরা দুৰ্নীতিবাজ বলে বিজেপি সবসময় অভিযোগ করে। দুর্নীতির জুজু দেখিয়ে রাজপাট করছেন বিজেপি নেতারা। দুর্নীতির যদি সঠিক তদন্ত করার সৎসাহস থাকে, তা হলে কেন সিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করানোর সাহস দেখাচ্ছেন না মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ? কেন তুলিরাম রংহাঙের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না বিজেপি? প্রশ্ন সাবেক মুখ্যমন্ত্রীর।
প্ৰধানমন্ত্ৰীর সাম্প্রতিক অসম সফরে কত টাকা খরচ করা হয়েছে বলে প্রশ্ন তুলে তার হিসাবও চেয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। জনসমক্ষে তার হিসাব তুলে ধরার দাবিও তিনি তুলেছেন। ধলায় সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্যান্ডেল তৈরিতে পাঁচ কোটি টাকা খরচ কার স্বার্থে করা হয়েছে? এত টাকা এল কোথা থেকে বলে প্রশ্ন করে তার উত্তর নিজেই দিয়েছেন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, পুলিশের কাছ থেকে ‘বিজেপির লিডাররা’ অবৈধভাবে দেদার টাকা তুলেছেন। প্রয়োজন হলে কোন কোন পুলিশ অফিসারের কাছ থেকে চাঁদার নামে কত টাকা আদায় করা হয়েছে তা খোলসা করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন তরুণ গগৈ।
আরও বলেন, অসম সচিবালয়-এর নাম বদল করে তাকে জনতা ভবন করেছেন সৰ্বানন্দ সনোয়াল। কিন্তু সেই জনতা ভবন-এ ঢোকার পর থেকে হেলিকপ্টার ছাড়া ঘুরতে পারেন না সর্বানন্দ। তাছাড়া পঞ্চতারকা অতিথিশালাকে নিজের সরকারি আবাস হিসেবে ব্যবহার করছেন তিনি। এ সব কি ভিআইপি সংস্কৃতি নয়, প্রশ্ন তরুণবাবুর।
বিজেপি ও প্ৰাক্তন কংগ্ৰেসিদের দ্বারা গঠিত রাজ্য সরকারকে একটি খিচুরি সরকার বলে আখ্যাও দিয়েছেন তিনি। বলেন, আমাদের কাছ থেকে শিক্ষা-দীক্ষা নিয়ে এখন কিনা আমাদেরই শেখানো হচ্ছে? কংগ্রেসকে কোন্দলে জর্জরিত বলে বিজেপি অভিযোগ করে। আখেরে কাদের অন্দরে কোন্দল তা রাজ্যের মানুষ দেখছেন বলে তাঁর কটাক্ষ, এখন পর্যন্ত কেন পূর্ণাঙ্গ মন্ত্ৰিসভা গঠন করতে পারছে না বিজেপি সরকার তা আর গোপন নয়। মনে করেন অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ।
2017-05-28