গুয়াহাটি, ২৫ মে, (হি.স.) : রুটিন মহড়ায় আকাশে উড়ে নিখোঁজ সুখই-৩০ যুদ্ধবিমানকে নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। ৩০০০ কিলোমিটার বেগী যুদ্ধবিমানখানা দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়েছে না-অন্য কিছু, তা নিয়ে ঘণীভূত হচ্ছে শঙ্কা। কেউ কেউ তাকে ভারত-চীন সীমান্তে পড়তে পারে বলে মনে করলেও পড়শি দেশ তা সরাসরি নস্যাৎ করে দিয়েছে।
গতকাল বুধবার স্থানীয়দের কথায় ধারণা করা হয়েছিল, অসমের শোণিতপুর জেলার মিসামারি ভারতীয় সেনা ছাউনির উত্তর দিকে অরুণাচল প্রদেশের কেলং সংরক্ষিত ঘন জঙ্গলের গভীর খাদে যুদ্ধবিমানটির অস্তিত্ব পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু জঙ্গলাকীর্ণ এলাকার উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত বাসিন্দাদের কাছে প্রাপ্ত খবরের ভিত্তিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সহায়তায় সুখই-৩০ যুদ্ধবিমানের খোঁজে কেলঙে বায়ুসেনার জওয়ানরা তালাশি অভিযান চালিয়ে এর কোনও অস্তিত্ব পাননি।
এদিকে গতকাল আরেক খবরে পদাতিক সেনা ও বায়ুসেনার অফিসার-জওয়ানরা অসম-অরুণাচল প্রদেশ সীমান্তবর্তী মাজবাট থেকে কিছু দূরে আশ্রাবাড়ি নামের এক দুর্গম অঞ্চলে নিখোঁজ সুখই-৩০ যুদ্ধবিমানের তালাশি চালান। সেখান থেকেও এখন পর্যন্ত সে রকম কোনও খবর আসেনি। তাই এ ব্যাপারে নিখোঁজ যুদ্ধবিমানের সন্ধান সম্পর্কে সরকারিভাবে কোনও তথ্য দিতে পারছে না সেনাবাহিনীর জনসংযোগ দফতর বা শোণিতপুর জেলা পুলিশ প্রশান।
আশ্রাবাড়ির ওই দুর্গম জঙ্গলে বিস্ফেরণজনিত বিকট শব্দ সেদিন (২৩ মে) তারা শুনেছিলেন বলে এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছিলেন। প্রাপ্ত খবরের ভিত্তিতেই ওই ঘন জঙ্গলে তালাশি চালানো হচ্ছে।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ শোণিতপুরের জেলা সদর তেজপুরের শালিনিবাড়ি বায়ুসেনা ঘাঁটি থেকে দুই পাইলটকে নিয়ে রুটিন মহড়ায় আকাশে উড়েছিল সুখই-৩০ যুদ্ধবিমানটি। ঘণ্টাখানেক সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু বেলা প্রায় সাড়ে এগারোটার পর থেকে তার সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় রাডার ও বেতারের। শেষ সম্পর্ক হয়েছিল শোণিতপুর ও লখিমপুরের সীমান্তবর্তী নারাইনপুরের বরডুবিয়া এলাকায়।
যুদ্ধবিমানখানা নিশ্চিত দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে বলে শংকা প্রকাশ করে এর সন্ধানে লাগোয়া জেলা প্রশাসন এবং প্রতিবেশী অরুণাচল প্রদেশ সরকারের সহায়তা চেয়েছিল তেজপুর বায়ুসেনা কর্তৃপক্ষ। নিখোঁজ সুখই-৩০-এর সন্ধানে সম্ভাব্য জায়গাগুলিতে তালাশি অভিযান চালাচ্ছে বায়ুসেনার সি-১৩০ বিমান এবং চেতক হেলিকপ্টার-সহ তাঁদের চার, ভারতীয় পদাতিক সেনাবাহিনীর নয়, এসএসবি, আইটিবিপি, সিআরপিএফ জওয়ানদের পাশাপাশি অসামরিক বিভাগের ১৬টি দল। সঙ্গে রয়েছেন সংশ্লিষ্ট স্থানীয় মানুষজন। ভুটান সীমান্তবর্তী ভালুকপুং, অরুণাচল প্রদেশের কালাকতাং, সেলাপাস, অরুণাচল প্রদেশের পশ্চিম কামেং জেলার সম্ভাব্য অরণ্যাঞ্চলে তালাশি চলছে।