BRAKING NEWS

বিধানসভায় জোর বিতর্ক, মন্ত্রীর আত্মপক্ষ সমর্থন, সপ্তম বেতন কমিশন কার্য্যকর হচ্ছে না, মহার্ঘ ভাতা নিয়ে দুঃশ্চিন্তা কর্মচারীদের

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৩ মে৷৷ মহার্ঘ ভাতা নিয়ে সরকারী কর্মচারী এবং পেনশনার্সদের চিন্তায় ফেললেন কংগ্রেস বিধায়ক রতন লাল নাথ৷ সাথে অর্থমন্ত্রীর জবাবে স্পষ্ট হয়ে গেছে সপ্তম বেতন কমিশন রাজ্যে এবছর কার্য্যকর হচ্ছে না৷ ফলে, চিন্তা আরো বাড়ল কর্মচারীমহলের৷ বেতন কাঠামো পুনর্বিন্যাস নিয়ে চাপানউতোরের মধ্যে মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে প্রশ্ণোত্তর পর্বে বিধায়ক শ্রীনাথ নতুন নিয়ম চালু হলে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা গায়েব হয়ে যাবে কি না সেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন৷ অর্থমন্ত্রী ভানুলাল সাহা কৌশলী জবাব দিয়েছেন ঠিকই৷ কিন্তু, কংগ্রেস বিধায়কের আশঙ্কাকে ঘিরে কর্মচারীমহল দুঃশ্চিন্তাগ্রস্থ৷
এদিন বিধানসভায় প্রশ্ণোত্তর পর্বে পে এন্ড পেনশন রিভিশন কমিটি সংশ্লিষ্ট প্রশ্ণের জবাবে অর্থমন্ত্রী ভানুলাল সাহা বলেন, রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের এবং পেনশনার্সদের বেতন ভাতা পুনর্বিন্যাসের জন্য রাজ্য সরকার পে এন্ড পেনশন রিভিশন কমিটি গঠন করেছে এবং কমিটিকে ৪৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে৷ কমিটিকে বলা হয়েছে, রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের বেতন ও ভাতার পুনর্বিন্যাস, মহার্ঘ ভাতা প্রদানের ভবিষ্যত সূত্র সমূহ নির্ধারণ, পে রিভিশন-২০০৯ এর বেতনক্রম সমূহের বৈষম্য দূরীকরণে সুপারিশ প্রদান এবং পেনশনার্সদের পেনশনের হারের পুনর্বিন্যাস ইত্যাদি তৈরি করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য৷ ইতিমধ্যে ৪৫ দিন অতিক্রান্ত হয়ে গেছে৷ কমিটি আরও সময় চেয়েছে৷ ৩১ মে’র মধ্যে কমিটি রিপোর্ট রাজ্য সরকারের কাছে জমা দেবে৷
অর্থমন্ত্রীর এই জবাবে কংগ্রেস বিধায়ক অতিরিক্ত প্রশ্ণে জানতে চান, মহার্ঘ ভাতা প্রদানে রাজ্য সরকার নতুন নিয়ম চালু করছে কিনা৷ অর্থমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুসরণ করে সাধ্যের মধ্যে মহার্ঘ ভাতা প্রদান করে থাকে৷ এবার রিভিশন কমিটিকে মহার্ঘ ভাতা প্রদানে কোন নতুন ফর্মুলা নেওয়া দরকার কিনা সে বিষয়ে পরীক্ষা নিরিক্ষা করে সুপারিশ করতে বলা হয়েছে৷ তাতে, কেন্দ্রকে অনুসরণ করেই মহার্ঘ ভাতা প্রদান চালু রাখা হবে, নাকি নতুন নিয়ম আনবে কমিটি সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না৷ তবে, নতুন নিয়মের সুপারিশ কমিটি রাজ্য সরকারকে করলে তা পুণরায় পরীক্ষা নিরিক্ষা করা হবে৷ তারপরই এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, জানান অর্থমন্ত্রী৷ সাথে তিনি যোগ করেন, কেন্দ্রীয় সরকার আগে ৪ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা বাড়াত, এখন ২ শতাংশ হারে বাড়ানো হচ্ছে৷ ফলে, রিভিশন কমিটি কি সুপারিশ করে, তার রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ অর্থমন্ত্রীর এই জবাবে বিধায়ক শ্রীনাথ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এর আগেও দেখা গেছে কর্মচারীদের ১২ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা গায়েব হয়ে গেছে৷ এবারও কি তাই ঘটতে চলেছে কি না প্রশ্ণ তুলেন তিনি৷ সাথে বলেন, কোন কোন রাজ্য হুবহু সপ্তম বেতন কমিশন বা নিজস্ব বেতন কমিশন চালু করেছে৷ কিন্তু এরাজ্যে রিভিশন কমিটি গঠন করে কর্মচারীদের বেতন ভাতা পুনর্বিন্যাসে ৬০০ কোটি টাকা বেঁধে দেওয়া হয়েছে৷ তাঁর প্রশ্ণ, কমিটিকে দেওয়া নির্দেশের শর্তাদিতে সপ্তম বেতন কমিশন কার্য্যকরের বিষয়টি রাখা হয়নি কেন৷ তিনি আরও জানতে চান, কোন কোন বিষয়কে রাখা হয়েছে এবং ৬০০ কোটি টাকার মধ্যেই কি কমিটিকে বেতন ভাতা পুনর্বিন্যাসে সুপারিশ করতে বলা হয়েছে কি না৷ সাথে যোগ করেন, একটি রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসলে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে সপ্তম বেতন কমিশন কার্য্যকর করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে৷ তবুও রাজ্য সরকার সপ্তম বেতন কমিশন কার্য্যকর করতে চাইছে না কেন? জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, কমিটিকে দেওয়া নির্দেশের শর্তাদিতে সপ্তম বেতন কমিশন কার্য্যকরের বিষয়টি নেই৷ তাঁর যুক্তি, চতুর্দশ অর্থ কমিশন অর্থ প্রদানে যে বঞ্চনা করেছে তাতে দাবির তুলনায় প্রাপ্তিতে ঘাটতি রয়েছে৷ এই ঘাটতি আগামী দিনেও চলবে৷ ২০১৫-১৬ এবং ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে কম পেয়েছি৷ আগামীদিনেও কম পাব বলেই ধারণা৷ তাই বাস্তবতার সাথে মিল রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ অর্থমন্ত্রীর কটাক্ষ, সরকারে না থাকলে দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করা যায়৷ কিন্তু, সরকার পরিচালনার দায়িত্বে থেকে সপ্তম বেতন কমিশন কার্য্যকর নিয়ে যেমন খুশী মন্তব্য করা যায় না৷ অর্থমন্ত্রীর জবাবে স্পষ্ট যে, সপ্তম বেতন কমিশন রাজ্যে এবছর অন্তত কার্য্যকর হচ্ছে না৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *