BRAKING NEWS

তিন তালাক প্রথা রদ নিয়ে বিরোধীতা হলেও ভারত সরকার সংবিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে, জানালেন আইন রাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৫ এপ্রিল৷৷ নারী পুরুষ উভয়কেই সংবিধান সমানাধিকার দিয়েছে৷ তাই তিন তালাক প্রথা রদ

মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী পি পি চৌধুরী৷ ছবি নিজস্ব৷

নিয়ে বিরোধীতা হলেও ভারত সরকার সংবিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে৷ স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী পি পি চৌধুরী৷ তাঁর মতে, কিছু ধর্মীয় সংগঠন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যে ধরনের ধারণা পোষণ করে চলেছে তা সুস্থ সমাজের পক্ষে সহায়ক নয়৷
মঙ্গলবার রাজ্য সফরে এসে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিন তালাক নিয়ে প্রশ্ণের উত্তরে আইন মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিন তালাক ইস্যুটি বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে বিবেচনাধীন৷ কেন্দ্রীয় সরকার সাংবিধানিক ব্যবস্থার মধ্যে থেকেই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে৷ তিনি বলেন, সংবিধানে নারী ও পুরুষের সমানাধিকারের কথা বলা হয়েছে৷ আর এই অধিকার খর্ব হবে এমন কিছুই মেনে নেওয়া যায় না৷ তাঁর মতে, এই ধরনের বিবাহ বিচ্ছেদের পদ্ধতি মহিলাদের স্বার্থের অনুকূলে নেই৷ নিজের বক্তব্যের সপক্ষে উদাহরণ দিয়ে তিনি আরও বলেন, ভারত ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র৷ কিন্তু, ইসলামিক রাষ্ট্রগুলি যেমন আফগানিস্তান, ইরান, সৌদিআরব, পাকিস্তান প্রভৃতি দেশেও এই ধরনের বিবাহ বিচ্ছেদ পদ্ধতি অনেকটাই প্রত্যাখ্যান করে নেওয়া হয়েছে৷ আর এদেশে কিছু ধর্মীয় সংগঠন যেভাবে এই প্রথার পক্ষে সওয়াল করছেন তা কোনও ভাবেই ঐ জনগোষ্ঠীর স্বার্থের অনুকূলে যাবে না৷ তিনি জোর গলায় বলেন, সংবিধান মেনে মুসলীম সম্প্রদায়কে আইন তৈরী করতে হবে৷ এদিকে, মুসলীম পার্সোন্যাল ল বোর্ড এর দাবি, গত দুই বছরে ভারতে হিন্দু সমাজে সর্বাধিক বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে৷ তিন তালাক প্রথা চালু থাকা সত্বেও মুসলীম সমাজে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা অনেক কম৷ এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য, ল বোর্ডের ঐ তথ্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন৷ তাদের দাবি সংবিধান সম্মত নয়৷
এদিকে, একদিনের রাজ্য সফরে এসে তথ্য প্রযুক্তি দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী পি পি চৌধুরী রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় প্রকল্প সঠিক বাস্তবায়ন না করার অভিযোগ তুলেন৷ একই সঙ্গে তিনি রাজ্যে আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতির অভিযোগও তুলেন৷ মঙ্গলবার সকালে আগরতলা বিমান বন্দরে অবতরণের পর তার জন্য বরাদ্দ তিনটি গাড়িতে লাল বাতি লাগানো আছে দেখে তিনি তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন৷ তিনি রাজ্য সরকারের আধিকারীকদের জানিয়েছেন আদালতের নির্দেশের পর এমনটা হওয়া কোনও ভাবেই উচিত হয়নি৷ পরে লাল বাতি খুলে দিয়ে তিনি গাড়িতে উঠেন৷
পরে বিজেপির রাজ্য কার্য্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, কেন্দ্রে বিজেপি সরকার আসার পর রাজ্যের উন্নয়নে সব থেকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে৷ গত ষ৬০-৬৫ বছরে যা হয়নি তা তিন বছরে বিজেপি শাসনে সম্পূর্ণ হয়েছে৷ জাতীয় সড়কের সংখ্যা তিন বছরে এক থেকে পাঁচটি হয়েছে৷ একেই সঙ্গে স্মার্ট সিটি, নতুন করে কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র স্থাপন, তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্র সহ বিভিন্ন বিষয়ে বহু প্রকল্পের ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ কিন্তু, কোন প্রকল্পেরই সঠিক বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলে তিনি অভিযোগ করেছেন৷ তিনি জানান, কেন্দ্রীয় সরকার আগে ৮০ শতাংশ অর্থ দিত রাজ্যকে৷ কিন্তু, বিজেপি সরকার আসার পর ৯০ শতাংশ অর্থই দিচ্ছে কেন্দ্র৷ তারপরও কেন্দ্র দিচ্ছে না বলে জিগির দেওয়া হচ্ছে৷ উপজাতিদের ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দ সঠিক ভাবে পৌঁছায় না৷ তিনি রাজ্যের কর্মচারীদের বঞ্চনার অভিযোগ তুলে রাজ্য সরকারকে তুলো ধুনো করেছেন৷ তিনি বলেন, নারী নির্যাতন, খুন, সন্ত্রাস ক্রমেই এরাজ্যে বেড়ে চলেছে৷ তবে জনমনের ক্ষোভ এখন ফেটে পরার সময় হয়েছে৷ এবং আগামী বিধানসভা নির্বাচনে এর প্রতিফলন ঘটবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *