BRAKING NEWS

ঝড়-বৃষ্টিতে রাজ্যে কৃষির ব্যাপক ক্ষতি, নদীগুলির জল বিপদ সীমার কাছে, সতর্ক করল মৌসম বিভাগ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২২ এপ্রিল৷৷ টানা বর্ষণে জনজীবনে বিরাট প্রভাব পড়েছে৷ শুক্রবারের পর শনিবার দিনভর বৃষ্টিপাত হয়েছে৷ মৌসম বিভাগ জানিয়েছে, রবিবারও দিনভর ভারী বৃষ্টিপাত হবে৷ সাথে বজ্রপাতও হবে৷ মৌসম বিভাগের আশঙ্কা অনুযায়ী, আগামীকাল ভারী বৃষ্টিপাতে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে৷ কারণ, আগামীকাল সারা দিনে ১০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হবে৷ তাই রাজ্যের বিভিন্ন নদীগুলির পাশ্ববর্তী স্থানে বসবাসকারীদের সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য বলা হয়েছে৷
শনিবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ এদিন রাত নয়টা পর্যন্ত ৬৪ মিলমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে৷ দিনভর ভারী বৃষ্টিপাতে জনজীবনে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে৷ রাজধানী আগরতলায় কিছু স্থান জলমগ্ণ হয়ে পড়েছে৷ রাতে বজ্রপাতে কিছু সময়ের জন্য মোবাইল পরিষেবা স্তব্ধ হয়ে পড়েছিল৷ রাজ্যের বহু এলাকায় বিদ্যুৎ নেই বলে খবর পাওয়া গেছে৷ রাজধানী আগরতলাতেও কিছু কিছু স্থানে দফায় দফায় বিদ্যুৎ পরিষেবায় সমস্যা দেখা গেছে৷
মৌসম বিভাগ আগামীকালও ভারী বৃষ্টিপাত হবে বলে জানিয়েছে৷ প্রাপ্ত রিপোর্টে জানা গেছে, রবিবার দিনের বেলায় ৫৬ মিলিমিটার এবং রাতের বেলায় ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হবে৷ সবমিলিয়ে মোট ১০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হবে আগামীকাল৷ টানা বর্ষণে বিভিন্ন নদীর জল বিপদসীমা অতিক্রান্ত করতে পারে অনুমান করা হচ্ছে৷ ফলে, নদীগুলির পাশ্ববর্তী বসবাসকারীদের সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে৷
এদিকে, সাম্প্রতিক ভারী ঝড় বৃষ্টিতে রাজ্যে কৃষি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে৷ এর ফলে মাথায় হাত পড়েছে রাজ্যের কৃষকদের৷ শাক সব্জির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির প্রভাব পড়েছে রাজ্যের বাজারে৷ যার দরুন শাক সব্জির দাম অনেক বেরে গেছে৷ যোগান কমে গেছে৷ পাশাপাশি ফর্মালিনের প্রভাবে বাজারে মাছের দাম আকাশছোঁয়া হয়ে পড়েছে৷ মাছের সঙ্গে সম্প্রতি পাল্লা দিয়ে দাম বেড়েছে মাংসের৷ জানা গেছে সম্প্রতি ভারী ঝড় বৃষ্টির প্রভাবে গোটা রাজ্যে শাক সব্জির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে৷ কৃষি দপ্তরের মহকুমা ও জেলা অফিস সূত্রে জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে পশ্চিম, খোয়াই, ধলাই ও সিপাহীজলা জেলায়৷ তবে বাকি জেলাগুলিতেও কম বেশী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে৷ এদিকে সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে শাক-সব্জির ক্ষয়ক্ষতির মোট পরিমাণ এখনো নির্ধারণ করতে পারেনি কৃষি দপ্তর৷ সোমবারের মধ্যে হিসাব চূড়ান্ত হয়ে যাবে বলে দপ্তর আধিকারিকরা জানান৷
অন্যদিকে, সম্প্রতি ঝড় বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত ৭০ টি পরিবারকে সোনামুড়া মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩০০০ টাকা করে সহায়তা দেওয়া হয়েছে৷ প্রচন্ড ঝড় বৃষ্টিতে মতিনগর, বাতাধোলা, বিজয়নগর ও আনন্দনগর এলাকার এই পরিবারগুলির বসতঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে৷ সোনামুড়ার মহকুমা শাসক জানিয়েছেন, ঝড়ে বিজয়নগরে একই পরিবারের পায়েল দেববর্মা ও পিংকি দেববর্মা আহত হয়৷ প্রশাসনের পক্ষ থেকে পিংকি দেববর্মাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আই জি এম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে৷ এই পরিবারটিকে চার হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে চিকিৎসার জন্য৷ মহকুমা শাসক জানিয়েছেন ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের কাজ চলছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *