নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৮ এপ্রিল৷৷ রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারীকের নিযুক্তি নিয়ে রাজ্য সরকার ভীষণ সমস্যায় পড়েছে৷ প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন আধিকারীক এস কে রাকেশ রাজ্য ছাড়ার পর এই পদটি বেশ কয়েকদিন ধরে খালি পড়ে রয়েছে৷ মহাকরণ সূত্রে খবর, রাজ্য প্রশাসনের প্রবীণ আইএএস আধিকারীকরা কেউই এই পদের দায়িত্ব নিতে চাইছেন না৷ অন্যদিকে, রাজ্য সরকার পছন্দের যাঁদের নাম সুপারিশ করেছে তাঁদের এই দায়িত্ব দিতে চাইছে না নির্বাচন কমিশন৷ আগামী বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে রাজ্যের জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতির মুখে প্রবীণ আইএএস আধিকারীকদের মুখ্য নির্বাচন আধিকারীক পদে দায়িত্ব নিতে অনিহা এবং রাজ্য সরকারের পছন্দের লোকদের প্রতি নির্বাচন কমিশনের আপত্তিতে রাজ্য সরকারের সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে৷
মহাকরণ সূত্রে খবর, রাজ্য সরকার জিএসজি আয়েঙ্গার, রাকেশ সরওয়াল এবং লোকরঞ্জনের নাম মুখ্য নির্বাচন আধিকারীক পদের জন্য সুপারিশ করে নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে৷ সূত্রের দাবি, ঐ সুপারিশে জিএসজি আয়েঙ্গারের নাম থাকায় নির্বাচন কমিশন পত্রপাঠ তা খারিজ করে দিয়েছে৷ জিএসজি আয়েঙ্গারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে৷ সিবিআই তদন্তও তাঁর বিরুদ্ধে চলছে৷ এমন আইএএস আধিকারীকের নাম মুখ্য নির্বাচন আধিকারীক পদের জন্য সুপারিশ করায় রাজ্য সরকারের উপর চটেছে নির্বাচন কমিশন৷ চিঠি পাঠিয়ে রাজ্য সরকারকে তরুণ আইএএস আধিকারীকদের নাম সুপারিশ করার জন্য বলেছে কমিশন৷ সূত্র অনুসারে জানা গিয়েছে, নির্বাচন কমিশন প্রবীণদের বাদ দিয়ে ১৯৯০ ব্যাচ অথবা তার পরের আধিকারীকদের নাম পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে৷ সেই মোতাবেক রাজ্য সরকার অপেক্ষাকৃত তরুণ আইএএস আধিকারীক শ্রীরাম তরুনীকান্ত, ভি কে সাহু এবং শান্তনুর নাম পাঠিয়েছে৷ অবশ্য নির্বাচন কমিশন এখনও এই বিষয়ে রাজ্য সরকারকে কিছুই জানায়নি৷
সূত্রের দাবি, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সুনিশ্চিত করতে কমিশন নিরপেক্ষ আধিকারীক খঁুজছেন৷ যাঁদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই এবং যাঁরা কোনও ভাবেই কোনও রাজনৈতিক দল দ্বারা প্রভাবিত নন তাঁদেরকেই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারীক পদে দায়িত্ব দিতে চাইছে নির্বাচন কমিশন৷ গত বিধানসভা নির্বাচনে মুখ্য নির্বাচন আধিকারীক আশুতোষ জিন্দালের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনেছিল বিরোধীরা৷ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে শ্রীজিন্দাল দলদাসের ভূমিকা পালন করেছিলেন বলেও অভিযোগ৷ তাই এবারের বিধানসভা নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে যাতে আঙুল না উঠে সেই দিকটিই কমিশনকে ভাবাচ্ছে৷ কারণ, ইতিমধ্যে ইভিএম নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দিকে অভিযোগের আঙুল উঠেছে৷ তাই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারীক বাছাইয়ে কমিশন কোন ঝঁুকি নিতে চাইছে না বলেই ধরণা করা হচ্ছে৷ বিগত দিনগুলিতে রাজ্য সরকার যাঁদের নাম সুপারিশ করেছে তাঁদের মধ্য থেকেই মুখ্য নির্বাচন আধিকারীক বাছাই করা হয়েছিল৷ এবার কমিশনের এই ব্যতিক্রমী ভূমিকা নিশ্চিতভাবে সেই বিষয়গুলিই ইঙ্গিত দিচ্ছে৷