নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৫ মার্চ৷৷ রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর অসন্তোষ প্রকাশ নতুন নয়৷ শনিবার আবারো

ডাক্তারদের এসোশিয়েশনের বার্ষিক সম্মেলনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে চিকিৎসকদের ভূমিকায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন৷ তবে, এদিন তাৎপর্যপূর্ণভাবে পরিবার কল্যান দপ্তর এবং স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তাও চিকিৎসকদের কাজকর্মে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন৷ হয়ত, এদিন মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী চিকিৎসকদের সমালোচনা করেছেন বলেই স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তারাও সাহস পান বাস্তব পরিস্থিতি তুলে ধরে চিকিৎসকদের খামতিগুলি দেখিয়ে দিতে৷ তাতে, প্রমাণিত হয়েছে, একাংশ চিকিৎসক অত্যাধিক দামি ওষুধ ব্যবস্থাপত্রে লিখে থাকেন, ফলে সাধারণ রোগীদের উপর চাপ পড়ে এবং হাসপাতালের ডিউটি ছেড়ে প্রাইভেট প্র্যাকটিসেই তাঁরা ব্যস্ত থাকেন৷ এদিন, মুখ্যমন্ত্রী চিকিৎসকদের বিষয়ে অনেক কথা বলে ফেলেছেন তা উল্লেখ করে নতুন করে কিছু বলেননি স্বাস্থ্যমন্ত্রী৷ কিন্তু, চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সাথে তিনিও একমত, সেই কথা বলেছেন৷ এদিকে এসোসিয়েশনের দাবি, চিকিৎসক স্বল্পতার কারণে অধিকাংশ ক্ষেত্রে কর্মরত চিকিৎসকদের উপর অতিরিক্ত কাজের চাপ পড়ছে, যার কারণে কোন কোন ক্ষেত্রে অনিচ্ছাকৃত ভূল হয়ে যাচ্ছে৷ তাই, চিকিৎসক স্বল্পতা দূর করার জন্য এসোসিয়েশন রাজ্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে৷
রাজ্যে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নতুন নয়৷ তবে, সব অভিযোগ সঠিক তা মানতে রাজি নন রাজ্য সরকার এবং চিকিৎসক মহল৷ কিন্তু, গলদ কোথায় তার ময়নাতদন্ত এখন বিশেষভাবে প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে৷ চিকিৎসক স্বল্পতা এখন রাজ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা৷ বিশেষ করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ঘাটতি এরাজ্যে মূল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ কিন্তু, প্রশ্ণ উঠেছে রাজ্যে যত সংখ্যক চিকিৎসক রয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধে কর্তব্য পালনে গাফিলতির অভিযোগ উঠছে কেন৷ মুখ্যমন্ত্রী এজন্যই হয়ত আবারো সুযোগ পেয়ে ডাক্তারদের এসোসিয়েশনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে তাঁদের কর্তব্য মনে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন৷ একটি উদাহরণ তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দেন, উত্তর তৈবান্দাল প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিবেশ এবং স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে কারোর অভিযোগ না থাকলে বাকি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিরও একই অবদান থাকা উচিৎ৷ কিন্তু, রাজ্যের স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির অবস্থা কি পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে তা জি বি হাসপাতালে গেলে স্পষ্ট বুঝা যায়, উষ্মা প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর৷ তাঁর মতে, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি সঠিক স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে সক্ষম হলে স্বাভাবিকভাবে মহকুমা হাসপাতালের উপর চাপ কমবে৷ ফলে, জেলা হাসপাতালগুলির উপরও কম চাপ পড়বে৷ কিন্তু দেখা যাচ্ছে, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে সোজা জি বি হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে রোগীদের৷ তাই, মুখ্যমন্ত্রী এদিন, রোগীদের সাথে চিকিৎসকদের সুসম্পর্ক গড়ে তোলার পরামর্শ দেন৷ তাঁর বক্তব্য, রোগীদের চিকিৎসা করার বিষয়টি আন্তরিকতার সাথে দেখতে হবে৷ তবেই রাজ্যে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠবে না, মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী৷

