রোজভ্যালি পার্কের বিনোদন কর নিয়ে অর্থমন্ত্রী বিধানসভায় এড়িয়ে গেলেন বিরোধীদের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৮ ফেব্রুয়ারি৷৷ বিরোধীদের চাপাচাপি সত্ত্বেও বিধানসভায় অর্থমন্ত্রী ভানুলাল সাহা জানালেন না

ভানুলাল সাহা৷

রোজভ্যালি পার্ক থেকে ১৮ মাস ধরে কেন রাজস্ব আদায় হয়নি৷ এমনকি এই ঘটনায় কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন সে বিষয়টিও কৌশলে এড়িয়ে গেছেন তিনি৷ তাতে, বিরোধীদের অভিযোগ রোজভ্যালির প্রতি দুর্বলতা রয়েছে রাজ্য সরকারের৷

মঙ্গলবার বিধানসভায় বিধায়ক রতন লাল নাথের উত্থাপিত প্রশ্ণের উত্তরে অর্থমন্ত্রী জানান, সদর মহকুমার অন্তর্গত আমতলীস্থিত রোজভ্যালি পার্ক থেকে ২০১৩ অর্থবর্ষে ১১ লক্ষ ৯৮ হাজার ৬০৯ টাকা, ২০১৪ অর্থবর্ষে ১২ লক্ষ ১১ হাজার ৩৬৬ টাকা এবং ২০১৫ অর্থবর্ষে জুন মাস পর্যন্ত ৪ লক্ষ ৩৫ হাজার ৭৮৫ টাকা বিনোদন কর আদায় হয়েছে৷ রাজ্য সরকারের অর্থদপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি কর্তৃক জারি করা আদেশমূলে সদর মহকুমা প্রশাসন গত ২১ জানুয়ারি রোজভ্যালি পার্কের দখল নিয়েছে৷ রোজভ্যালি পার্ক কর্তৃপক্ষ ২০১৫ সালে জুলাই মাস থেকে রাজ্য সরকারকে বিনোদন কর দেওয়া বন্ধ করেছিল৷ রোজভ্যালি পার্কের বিনোদনকর বাবদ রাজ্য সরকারের পাওয়া উক্ত সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত বিবরণের ভিত্তিতে নির্ধারণ হয়৷ কিন্তু এধরনের কোন বিবরণ ২০১৫ সালের জুলাই মাস থেকে সদর মহকুমা শাসকের অফিসে দাখিল করেনি পার্ক কর্তৃপক্ষ৷ তাই রোজভ্যালি পার্কের বিনোদনকর বাবদ রাজ্য সরকার কত পাওনা রয়েছে তা এখনই বলা সম্ভব নয়৷ অর্থমন্ত্রীর দেওয়া উত্তরে বিধায়ক রতনলাল নাথ অসন্তোষ প্রকাশ করেন৷ অতিরিক্ত প্রশ্ণ উত্থাপন করে তিনি জানতে চান ১৮ মাস ধরে পার্কটি চলছিল কিনা৷ যদি পার্কটি চালু থাকে তাহলে তার দায়িত্বে কে ছিল এবং বিনোদন কর না দেওয়া সত্ত্বেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা কেন নেওয়া হয়নি৷ তিনি কটাক্ষের সুরে প্রশ্ণ ছঁুড়ে দিয়ে জানতে চান, বিনোদন কর না নেওয়ার পিছনে কোন অদৃশ্য হাত রয়েছে কিনা৷ উত্তরে অর্থমন্ত্রীর পাল্টা কটাক্ষ অদৃশ্য হাত কোথা থেকে খোঁজে পাব৷ রোজভ্যালির বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের মামলা চলছে৷ জমি সংক্রান্ত মামলার কারণে তাদের কাছ থেকে বহুবার এবিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে৷ কিন্তু কোন উত্তর পাওয়া যায়নি৷ অবশেষে রোজভ্যালি পার্কটি দখল নিয়েছে রাজ্য সরকার৷ তাতে, রতনবাবুর অভিযোগ তুলে বলেন, অর্থমন্ত্রী প্রশ্ণ এড়িয়ে যাচ্ছেন৷ তিনি জানান, পশ্চিম আগরতলা থানায় রোজভ্যালির বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রয়েছে৷ ২০১৩ সালের ২৭ মে রোজভ্যালির বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের জন্য রাজ্য সরকার আবেদন জানিয়েছিল৷ তা সত্ত্বেও ২ বছর ধরে পার্কটির দখল কেন নেওয়া হল না, প্রশ্ণ তুলেন তিনি৷ একই সাথে তৃণমূল বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ জানতে চান, ২০১৫ সালের জুলাই মাস থেকে ২০১৭ সালের ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত রোজভ্যালি পার্ক যে ব্যবসা করছিল তা বৈধ নাকি অবৈধ৷ অর্থমন্ত্রী এর কোনটারই সুনির্দিষ্ট উত্তর দেননি৷ বরং জানিয়েছেন, সমস্ত কিছু খোঁজ নিয়ে পরবর্তী সময়ে জানানো হবে৷

উল্লেখ্য, রোজভ্যালি পার্কের বিনোদন কর আদায় করছে না রাজ্য সরকার, বিধায়ক রতন লাল নাথের এই অভিযোগের ভিত্তিতে বেশ কয়েকদিন আগে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, সাংবাদিক সম্মেলনে কোন অভিযোগ উঠলেই তার খন্ডন করতে তিনি বাধ্য নন৷ বিধানসভায় বিষয়টি উত্থাপিত হলে সমস্ত তথ্য দেওয়া হবে৷ কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে এদিন বিধানসভায় অর্থমন্ত্রীর কাছে সমস্ত তথ্য ছিল না৷ বিরোধীদের অভিযোগ রোজভ্যালির প্রতি দুর্বলতার কারণেই অর্থমন্ত্রী বহুবিষয় চেপে গেছেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *