নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা/চড়িলাম/ কমলাসাগর/খোয়াই, ১ জানুয়ারী৷৷ ইংরেজী নববর্ষের প্রথম দিনটি আনন্দ উল্লাসেই

কাটালেন রাজ্যবাসী৷ বাংলা নববর্ষের মতো ইংরেজী নববর্ষের তেমন জৌলুস না থাকলেও আধুনিকতার ছোয়ায় ইংরেজী নববর্ষ ক্রমে বাঙালী প্রাণ মানুষের কাছেও যথেষ্ট আপন হয়ে উঠেছে৷ বাঙালীরাও আজকাল ইংরেজী নববর্ষ নিয়ে রীতিমতো ব্যস্ত হয়ে উঠেন৷ নববর্ষের সকাল থেকেই বিভিন্ন স্থানে পিকনিক করার ধুম পড়ে৷ রাজ্যের বিভিন্ন পার্কে এবছর পর্যটকদের ভিড়ও পরিলক্ষিত হয়৷ তবে, ইংরেজী নববর্ষ যাতে শান্তিপূর্ণভাবে অতিবাহিত হতে পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করা হয়৷ ফলে, এখনো পর্যন্ত কোথাও থেকে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর মিলেনি৷
১৮৫৩ বর্গকিলো স্থান জুড়ে এক বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য রয়েছে সিপাহীজলায়৷ আগরতলা থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরে৷ রবিবার সকাল ৯টা থেকে বিভিন্ন স্থান থেকে বনভোজন করতে মানুষের সমাগম ঘটে সিপাহীজলা পিকনিক স্পটে৷ সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৫টা পর্যন্ত সিপাহীজলা মূল গেইটে পিকনিক পার্টি ও অভয়ারণ্যের দর্শনকারীদের কাজ থেকে মোট ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা সংগ্রহ করেছে বলে জানান সিপাহীজলা অভয়ারণ্যের টিকিট কাউন্টারের কর্মীরা৷ তাছাড়া এই অভয়ারণ্যের সামনে বসানো হয়েছে পুলিশ সহায়তা কেন্দ্র৷ পুলিশের এএসআই উত্তম কুমার দেব জানান প্রায় ২৫০ টি গাড়ির নাম্বার নথি করা হয়েছে, নতারপর গাড়ি গুলি তল্লাশি করে, সিপাহীজলা অভয়ারণ্যের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে৷ সবমিলিয়ে সিপাহীজলা নৌকাঘাট, পিকনিক স্পট এবং অভয়ারণ্যে ১লা জানুয়ারীতে মানুষের জনঢল ছিল খুবই লক্ষ্যনীয়৷ পুলিশ যদিও গাড়িগুলো তাল্লাশি করে

বেশ কিছু বিলোতি মদ উদ্ধার করেছে৷ অন্যদিকে মেলাঘরের দর্শনীয় স্থান নীরমহল ছিল সিপাহীজলা থেকেও বেশি ভীড়৷ নীরমহলের ট্যুরিজম বোর্ডের সেক্রেটারী তথা সত্যবান দাস জানা রবিবার সকাল ৯টা থেকে প্রচুর দর্শনার্থীর ভীড় দেখে আমরা অবাক৷ কারন সাগারমহলের পাশেই ট্যুরিজম বোর্ডের কর্তৃপক্ষরা ১৫টি পিকনিক সেট তৈরী করেছেন৷ ১টি সেটের ভাড়া যাবৎ ৫০ টাকা করে নির্ধারিত করা হয়েছে৷ ১৫টি সেটের মধ্যে একটিও ফাঁকা নেই রবিবারে ১লা জানুয়ারীতে৷ তিনি জানান নৌকা করে সাগারমহল থেকে নীরমহলে পৌঁছানো ২৫ টাকা করে মাথা পিছু ভাড়া৷ সবমিলিয়ে বিকাল ৬টা পর্যন্ত হিসাব কষে বলেন গত বছরের তুলনায় এবার একটু বেশি আর্থিক আয় হয়েছে৷ মোট ৮৪০০০ টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে৷ মানুষের পথ প্রদর্শনের জন্য রয়েছে ট্যুরিজন বোর্ডের বিভিন্ন কর্মীরা৷ খুব নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে তারা কাজ করছে বলে জানান৷ অন্যদিকে সাথে কোন উশৃঙ্খলতা না ঘটে পুলিশ ও টিএসআর জওয়ানরা দায়িত্ব পালন করছে৷
এদিকে, রবিবার ২০১৭ সালের আগমনের সাথে কমলাসাগরস্থীত কমলেশ্বরী মাতার মন্দিরে জনঢল দেখা যায়৷ তাছাড়া কমলাসাগর তারা পুর সিমান্ত হাটে ও লম্বা লাইনে দাড়িয়ে৷ পুরুষ ও মহিলারা সিদ্ধান্ত হাঁটে কেনা কাটা করিতে ও বাংলাদেশের প্রাকৃতির পরিবেশের সৌন্দর্য্য দেখতে যায়৷ রবিবার ইংরেজী নতুন বছরের আগমনে কমলাসাগরে কালি মন্দিরের ও ভারতের

প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের মনোরম প্রকৃতিক পরিবেশের সৌন্দর্য্য দেখার জন্য৷ রাজ্যের দুর দূরান্ত থেকে শীত মরশুমে আসে পর্যটকরা৷ অন্যদিকে, কমলাসাগরের দিঘীর পারে গড়ে উঠা পিকনিক স্পট গুলিতে বনভোজনে মেতে উঠেছে৷ পিকরনিক স্পটগুলি৷ সকাল ৮ টা থেকেই শুরু হয় কমলাসাগরে দর্শনার্থীদের আগমন৷ আস্তে আস্তে দর্শনার্থীদের ভীর বাড়তে থাকে৷ তবে কমলাসাগরে পিকনিক স্পট গুলিতে জায়গা কম হওয়াতে একটু অসুবিধার সম্মুখিন হতে হয়৷ এখানকার স্পট গুলির দায়িত্ব কারিদের৷ কমলাসাগর ব্যবসাইদের কাছ থেকে যানা যায় কমলাসাগরের যে পার্কগুলি রয়েছে সেগুলিকে সঠিক ভাবে যদি পরিচালনা করা যেত বা এই পর্যটন স্থানটিকে আরো উন্নয়ন করা হত৷ পার্কগুলিতে জঙ্গল হয়ে অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে৷ সেইগুলির দিকে কোন রকম পদক্ষেপ নিচ্ছে না৷ অথচ সেই পর্যটন স্থান থেকে অনেক অনেক টাকা রোজগার হচ্চে৷ কোনো রকম উন্নয়নের ভূমিকা নেই৷ বিশালগড় সমষ্ঠি উন্নয়ন আধিকারিকের দৃষ্টি আর্কষন করে অভিযোগ উঠছে ব্যবসাইদের৷ বিশালগড় সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক যদি সেই বিষয়টা ভেবে দেখেন৷ তাহলে হয়তো আগামী দিনে কমলাসাগরে দর্শনার্থীদের আরো জনঢল নামবে৷
এদিকে, পর্যটন মানচিত্রে খোয়াইয়ের বনবিথি ইকো পার্ক ইতিমধ্যে স্থান করে নিয়েছে৷ খোয়াইয়ের প্রসিদ্ধ অপর একটি পর্যটন

স্থল হল জঙ্গল মহল৷ বিভিন্ন সময় দূর দূরান্ত থেকে পর্যটকরা এখানে আসেন৷ যে কারণে পর্যটন ক্ষেত্র হিসাবে খোয়াইয়ের সুনাম এখন রাজ্য, বহিঃরাজ্য থেকে ছড়িয়ে গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে৷ বিনোদন স্থল হিসাবে বিভিন্ন মহকুমা এবং জেলার জনগণ এখানে আসেন৷ শীতে মরশুম শুরু হতেই বিভিন্ন পিকনিক পার্টি ভীড় জমান জঙ্গল মহল কিংবা বনবিথি ইকো পার্কে৷ সারা রাজ্যেই যেখানে বিভিন্ন পিকনিক স্পটে পুলিশের প্রচেষ্টায় নেশা সামগ্রী নিয়ে প্রবেশ না করার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে এবং এতে অনেকটাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চালানো হচ্ছে৷ সেখানে কিন্তু খোয়াই ব্যতিক্রম৷ দুটি পিকনিক স্পটেই ৭০-৮০ দল যেতে পারে৷ তাই বেশী রোজগারের ধান্দায় প্রায় ডবল পিকনিক পার্টি প্রবেশ করিয়ে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরী করা হচ্ছে৷ এইসব পিকনিক স্পটগুলিতে প্রবেশ করলেই দেখা যায় যত্রতত্র পাওয়া যায় নেশা সামগ্রী৷ খোয়াইয়ের পুলিশ সব জেনেশুনেও নীরব৷ শুধু লোক দেখানো দায়িত্ব পালন করে চলেছেন৷ এনিয়ে উদ্বিগ্ণ অভিভাবকরা এবং দাবী উঠেছে পিকনিক স্পটগুলিতে নেশার রমরমা বন্ধ করতে পুলিশের কঠোর পদক্ষেপ৷