কর্মনাশা বনধে রাজ্যে সফল বামফ্রন্ট

left-strikeনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, খোয়াই, তেলিয়ামুড়া, চুড়াইবাড়ি, ২৮ নভেম্বর৷৷ নোট বাতিল ইস্যুতে বামফ্রন্টের ডাকা ত্রিপুরা বনধ সর্বাত্মক সফল হয়েছে৷ তবে, এই কর্মনাশা বনধকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে৷ নোট বাতিল ইস্যুতে বনধ ডেকে জনগণের হয়রানি আরো বাড়ানো হয়েছে বলে বিভিন্ন মহল থেকে মন্তব্য করা হয়েছে৷ বনধকে কেন্দ্র করে ছোটখাটো বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া সর্বত্র বনধ মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে অতিবাহিত হয়েছে৷ বনধের সমর্থনে এবং বনধের বিরোধিতা করে রাজধানী সহ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে পিকেটিং পাল্টা মিছিল, প্রধানমন্ত্রীর কুশপুতুল দাহ সহ বিক্ষোভ সংগঠিত করা হয়েছে৷ রাজ্যের শাসক দল সিপিআইএম বনধ সর্বাত্মক সফল হয়েছে বলে দাবি করেছে৷ পক্ষান্তরে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি এই রাজ্যে বনধ রাজ্যের জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালন করেননি বলে অভিযোগ করেছে৷ শাসক দলের ক্যাডার বাহিনীর ভয়ভীতির কারণেই নানাস্থানে দোকানপাট, অফিস আদালত বাজারহাট বন্ধ ছিল৷ রাস্তায় যানবাহন নিয়ে বেরুতে সাহস পাননি অনেকেই বলেও অভিমত ব্যক্ত করেছেন বিজেপি নেতৃবৃন্দ৷
[vsw id=”7FmdufPrBEg” source=”youtube” width=”425″ height=”344″ autoplay=”yes”]বামফ্রন্টের ডাকা নোট বাতিল ইস্যুতে সোমবার সকাল সন্ধ্যা ১২ ঘন্টার ত্রিপুরা বনধ কিছু বিক্ষিপ্ত হিংসাত্মক ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবেই অতিবাহিত হয়েছে৷ বনধের ফলে রাজ্যের সার্বিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে৷ রাজধানী আগরতলা সহ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে সকাল থেকে যানবাহন চলাচল করেনি৷ রাস্তাঘাট ছিল শুনশান৷ দোকানপাট, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, শিল্প প্রতিষ্ঠান, সুকল, কলেজ অফিস ইত্যাদি বন্ধ ছিল৷ কোন কোন স্থানে দোকানপাট খোলার চেষ্টা হলেও শাসক দলের সমর্থকদের রক্তচক্ষুর ভয়ে দোকানপাট খুলেননি ব্যবসায়ীরা৷ কারণ গত কয়েকদিন ধরেই বনধ সর্বাত্মক করার আহ্বান জানিয়ে রাজ্যজুড়ে ব্যাপকপ্রচার চালিয়েছে শাসক দল৷ অবশ্য, বিজেপি এই বনধের বিরোধিতা করে পাল্টা প্রচারও করেছে৷ বনধ চলাকালে বিজেপি আগরতলা সহ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ বিক্ষোভ মিছিল সংগঠিত করেছে৷ বেশ কিছু সংখ্যক বিজেপি নেতা কর্মী সমর্থক বিক্ষোভে সামিল হয়ে গ্রেপ্তার বরণ করেছেন৷ বনধের ফলে সোমবার বিভিন্ন সুকলের বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হয়নি৷ তাতে বিপাকে পড়েছে ছাত্রছাত্রীরা৷ সোমবার অনেক বাড়িঘরে বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল৷ অনেকের বাড়িতে বৌভাত উপলক্ষ্যে আগাম অতিথি নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল৷ বনধের ফলে বিপাকে পড়েছেন তারাও৷ বনধের কারণে রাস্তায় যানবাহন চলাচল না করায় বিয়ে বাড়িতে নিকট আত্মীয়রাও আসতে পারেননি৷ এনিয়ে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে বনধ ডাকার যৌক্তিকতা নিয়ে নানা প্রশ্ণ উঠেছে৷ নোট বদল ইস্যুতে বনধ ডেকে জীবনযাত্রা স্তব্ধ করে দেওয়ার নৈতিক অধিকার কারোর নেই বলেও বিভিন্ন মহল অভিমত ব্যক্ত করেছে৷ এধরনের বনধকে কর্মনাশা ও সর্বনাশা বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে৷ রাজনৈতিক দলগুলি যেকোন বিষয়কে কেন্দ্র করে বনধ হরতাল ইত্যাদি ডেকে যেভাবে জীবনযাত্রা স্তব্ধ করে দেওয়ার উদ্যোগ নিচেছ তা সর্বসাধারণের মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে৷ এই ধরনের বনধ সাধারণ মানুষজন কখনই স্বতর্স্ফুত াবে সমর্থন করেননা৷ সম্পদহানি ও সম্মান হানির আশঙ্কাতেই ব্যবসায়ীরা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, শিল্প কলকারখানা খুলেন না৷ যানবাহনের মালিক ও চালকরা যানবাহন নিয়ে রাস্তায় বের হন না৷ অহেতুক গালমন্দের ভয়ে সরকারি কর্মচারীরা অফিসমুখী হননা৷ কেননা সরকারপক্ষ বনধ আহ্বান করলে সুকল, কলেজ অফিস আদালতে না গেলেও তাদের মাস মাইনের ওপর কোন ধরনের আঘাত আসে না৷ স্বাভাবিক কারণেই সরকারি কর্মচারীরা এই ধরনের বনধকে অনেকটা পিকনিকের মেজাজে কাটিয়ে থাকেন৷ সোমবার এরই চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে নানা স্থানে৷
এদিকে, নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে রাজ্যে বামফ্রন্ট বনধের ডাক দেওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে এবং এই বনধের প্রতিবাদ জানিয়ে সোমবার সকাল থেকে রাজধানী আগরতলা সহ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে পাল্টা প্রতিবাদ বিক্ষোভ মিছিল সংগঠিত করেছে বিজেপি৷ বিজেপি কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের নানা স্থানে ধস্তাধস্তি হয়েছে৷ রাজধানী আগরতলা শহরের কর্ণেল চৌমুহনীতে বিজেপির শতাধিক কর্মী সমর্থক মিছিল করার চেষ্টা করলে পুলিশ বাহিনী তাদের মিছিল আটকে দেওয়ার চেষ্টা করে৷ ঘটনার খবর পেয়ে জেলা পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সহ অন্যান্য আধিকারিকরা ছুটে আসেন৷ বিজেপির কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের কর্মকর্তাদের প্রচন্ড বাকবিতন্ডা হয়৷ এমনকি পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটে৷ এরই প্রতিবাদ জানিয়ে বিজেপির কর্মসমর্থকরা কর্ণেল চৌমুহনী এলাকায় বেশ কিছুক্ষণ পথ অবরোধ করেন৷ শেষ পর্যন্ত পুলিশ তাদেরকে গ্রেপ্তার করে সেখান থেকে তুলে নিয়ে যায়৷ তাদেরকে এডিনগর পুলিশ লাইনে বেশ কিছুক্ষণ আটকে রাখার পর বিশেষ আদালতের মাধ্যমে প্রত্যেককে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়৷ এদিকে, বিজেপির মিছিল ও অবরোধ চলাকালেই কর্ণেল চৌমুহনী এলাকায় এসইউসিআই মিছিল সংগঠিত করার চেষ্টা করে৷ কেন্দ্রের মোদি সরকার নোট বাতিলের যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে তার প্রতিবাদ জানিয়েই এসইউসিআই দেশব্যাপী আন্দোলন কর্মসূচীর অঙ্গ হিসেবে সোমবার আগরতলায় প্রতিবাদ বিক্ষোভ মিছিল সংগঠিত করে৷ বিজেপির মিছিল ও বিক্ষোভ চলাকালে একই এলাকায় এসইউসিআই মিছিল সংগঠিত করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়৷ এনিয়ে পুলিশের সঙ্গে তাদেরও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে৷ শেষ পর্যন্ত এসইউসিআইয়ের কর্মী সমর্থকদের গ্রেপ্তার করে পশ্চিম থানায় নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখান থেকে তাদেরকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়৷ এদিকে কামান চৌমুহনী থেকে বিজেপির ৩০-৪০ সমর্থক বামফ্রন্ট আহত বনধের প্রতিবাদ জানিয়ে শহরে মিছিল করার চেষ্টা করে৷ মিছিলটি কামান চৌমুহনী থেকে পথ পরিক্রমা করে পশ্চিম থানার দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের গতিরোধ করে৷ তাদেরকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করে৷ পরবর্তী সময়ে তাদেরকেও জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়৷ নোট বাতিলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে আগরতলা শহরে মিছিল সংগঠিত করেছে তৃণমূল কংগ্রেসও৷ সন্ধ্যা নাগাদ তৃণমূল কংগ্রেসের জ্যাকশন গেইটস্থিত রাজ্য প্রধান কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়৷ মিছিল শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে পুনরায় জ্যাকশন গেইটে তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসে ফিরে আসে৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নোট বাতিলের যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন তা প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য দলের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়েছে৷ অন্যথায় এই ইস্যুতে আরো বৃহত্তর আন্দোলন সংগঠিত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে৷
এদিকে, কেন্দ্রের মোদি সরকার নোট বাতিলের যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে তার প্রতিবাদ জানিয়ে রাজবাড়ির উত্তর গেইট থেকে কংগ্রেসের এক মিছিল শুরু হয়৷ মিছিলটি বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে কংগ্রেস ভবনের সামনে এসে সমবেত হয়৷ সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কুশপুতুল দাহ করা হয়৷ কেন্দ্রের মোদি সরকার নোট বাতিলের যেসিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে তাকে জনস্বার্থ বিরোধী বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে৷ এই ধরনের সিদ্ধান্তের ফলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে বলে অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে৷ এই ইস্যুতে কংগ্রেস দল আরো বৃহত্তর আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে৷
নোট বাতিলের ক্ষেত্রে মানুষের হয়রানির প্রতিবাদে এবং নতুন নোটের পর্যাপ্ত যোগানের বিকল্প ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত পুরনো পাঁচশ ও হাজার টাকার নোট ব্যবহারের অনুমতি দেবার দাবিতে সোমবার সারা দেশ আক্রোস দিবস পালিত হচ্ছে৷ কেরালা, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা এবং মণিপুরে বামপন্থীদের ডাকে ১২ ঘন্টার ধর্মঘট পালিত হচ্ছে৷ খোয়াইতেও বনধের ব্যাপক সাড়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ তবে ব্যাঙ্ক খোলা থাকায় ব্যাঙ্ক এবং এটিএম কাউন্টারের সামনে ভীড় লক্ষ্য করা যায় সোমবার সকাল থেকেই৷ অন্যদিকে সুকল-কলেজের পরীক্ষা এই বনধের আওতার বাইরে থাকায় ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌছতে অসুবিধার মুখে পড়তে হয়নি৷ ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য যানবাহনের ব্যবস্থা থাকায় কোন অসুবিধা হয়নি৷ তাছাড়া রোগীদেরও হাসপাতালমুখী হতে কোন অসুবিধা হচ্ছেনা৷ নোট বাতিলের ইস্যুতে সকল স্তরের মানুষই প্রতিবাদে সামিল৷ বামফ্রন্টের ডাকা ১২ ঘন্টার বনধ শান্তিপূর্ণভাবেই খোয়াইতেও পালিত হচ্ছে৷
হটকারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বামেদের ডাকা ১২ ঘন্টার সাধারণ ধর্মঘট কল্যাণপুর ব্লক এলাকায় স্তব্ধ জনজীবন৷ ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে সিপিএম ও বিজেপির নেতাদের মধ্যে মতবিরোধ তুঙ্গে৷ দিনের পর দিন নতুন নতুন জনবিরোধী নীতি চাপিয়ে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ ব্যাঙ্কগুলিতে প্রয়োজন সংখ্যক টাকার যোগান না দিয়ে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের হটকারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ও সাধারণ মানুষের নাজেহাল হওয়ার প্রতিবাদে এদিন সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল সিপিএম তথা বামদলগুলি৷ বনধের ফলে কল্যাণপুর বাজার এলাকায় নিস্তব্ধতা কায়েম হয়৷ কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছিল৷ বন্ধ আহ্বানকারী সিপিএম কর্মী সমর্থকরা এদিন কল্যাণপুরে পিকেটিং করেছে৷ সিপিএমের স্থানীয় নেতা সমির চক্রবর্তী জানিয়েছেন, কেন্দ্রীেয় সরকারের নোট বাতিলের ফলে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে৷ কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে জনগণ বন্ধ সফল করেছেন৷ অন্যদিকে, বিজেপির স্থানীয় নেতা হরিশঙ্কর পাল জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকার কালো টাকা মজুতদারদের লাগাম টানার জন্য নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ তাতে সাফল্য আসছে৷ দেশের সাধারণ অংশের জনগণ এতে উপকৃত হবে৷ বনধের ফলে রাজ্যের গরীব মেহনতী অংশের জনগণের ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হয়েছে৷ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ব্যবসায়ীরা, যান চালকরা৷ অনেক সুকলে পরীক্ষা বাতিল হয়েছে৷ এই বন্ধ জনবিরোধী বলে আখ্যা করেছে বিজেপি নেতা হরিশঙ্কর পাল৷
সারা রাজ্যের সাথে তেলিয়ামুড়া মহকুমায় বনধ সর্বাত্মক সফল৷ তবে বিক্ষিপ্তভাবে এক দুটি দোকান পাঠ খোলা থাকলেও তেলিয়ামুড়ার বনধ সম্পূর্ণ সফল৷ সকাল থেকেই বাজার এলাকায় মানুষ জড়ো হতে দেখা যায়৷ ব্যবসায়ীরাও একদিনের বনধ পেয়ে নিজেরা ঘর পরিবার নিয়ে ব্যস্ত৷ তবে আজ ছিল বাজারবার তাই কিছু লোক সমাগম হয়েছিল তেলিয়ামুড়া শহরে৷ ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস ছাড়া অন্যান্য সরকারি দপ্তরগুলিও ছিল বন্ধ৷ এদিকে দুভাবে তেলিয়ামুড়ায় বিজেপি দল বনধের বিরোধিতা করে একবার কাল ১০টায় পিকেটিং করে ১৫ জন গ্রেপ্তার হয়৷ পরবর্তী সময়ে আবার বিকাশ দেববর্মার নেতৃত্বে ১০ জনের একটি দল দুপুর ১২টায় আবার পিকেটিং করে বনধের বিরোধিতা করে গ্রেপ্তার হয়৷ এদিকে বিজেওয়াইএম এর খোয়াই জেলা কমিটির সভাপতি ইন্দ্রজিৎ সাহা, বিজেপির খোয়াই জেলা সম্পাদক বিকাশ দেববর্মা, নারী নেত্রী বিভা দেব গ্রেপ্তার বরণ করেন৷ তাদের তেলিয়ামুড়া চিত্রাঙ্গদা কলা কেন্দ্রে নিয়ে রাখা হয়৷ এদিকে সিপিএম তেলিয়ামুড়া মহকুমা সম্পাদক সুধীর সরকার বলেন, তেলিয়ামুড়ার জনগণ বামফ্রন্টের ডাকা ১২ ঘন্টার বনধে সাড়া দিয়েছে৷
বামেদের ডাকা ১২ ঘন্টা ত্রিপুরা বনধের প্রভাব উত্তর জেলায় তেমন লক্ষ্য করা যায়নি৷ পিকেটারদের গুন্ডামির জন্য যান চলাচল করতে না পারলেও অধিকাংশ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান তথা দোকানপাট খোলা ছিল৷ ব্যবসায়ীদের বক্তব্য হচ্ছে সিপিএম সমর্থিত হলেও এই ধরনের বনধের রাজনীতি মানছেন না তারা৷ তাই দোকান খোলা রেখেছেন৷ পাশাপাশি কেন্দ্রের মোদি সরকার ৫০০ ও ১০০০ টাকার পুরনো নোট বাতিলের সমর্থনে গলা মিলিয়েছেন তারা৷ এমনকি মোদি সরকারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন কদমতলা, চুড়াইবাড়ি, নতুনবাজার, পানিসাগর সহ বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ীরা৷
অন্যদিকে, আসাম ত্রিপুরা সীমান্ত চুড়াইবাড়িতে পণ্যবাহী শত শত ট্রাক যাত্রীবাহী গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে৷ দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন চালক, সহচালক ও যাত্রীরা৷ খাবার সহ পানীয় জলের জন্য চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় তাদের৷ নাজেহাল হয়েছেন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা সহ শিশু মহিলারা৷ অপরদিকে সুকল-কলেজ, পোস্টফিস, ব্যাঙ্ক খোলা ছিল৷ এদিকে কদমতলা উচ্চ মাধ্যমিক সুকল এদিন বন্ধ ছিল৷ তাই সুকলের নবম ও দশম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীরা সুকলে আসলেও পরীক্ষা দিতে পারেনি৷ তাতে তীব্র সমস্যায় পড়ে যান পরীক্ষার্থীরা৷ এই ব্যাপারে প্রধান শিক্ষকের কোন প্রতিক্রিয়া না পাওয়া গেলেও সুকলের এক শিক্ষক কোন কথা বলেননি এই বিষয়ে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *