নয়াদিল্লি, ১৯ সেপ্ঢেম্বর৷৷ আন্তর্জাতিক ফোরাম ও গ্রুপ থেকে পাকিস্তানকে কূটনৈতিকভাবে একঘরে করার সিদ্ধান্ত নিল ভারত৷ সোমবার কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী নেতৃত্বে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷ এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিক্কর৷ জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনআইএ) সূত্রে খবর, উরি হামলায় পাকিস্তানের দায় প্রমাণ করতে সবরকম তথ্যপ্রমাণ পাকিস্তানের কাছে দাখিল করার সিদ্ধান্তও নিয়েছে ভারত৷ এমনকি আন্তর্জাতিক মহলেও এই তথ্যপ্রমাণ পেশ করা হবে বলেও জানা গিয়েছে৷ এরফলে আন্তর্জাতিক মহল থেকেও পাকিস্তানের ওপরও চাপ বাড়বে বলে কূটনৈতিক মহল মনে করছে৷ এই হামলায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সব প্রমাণই রয়েছে ভারতের হাতে৷ জিপিএস ট্র্যাকার খতিয়ে দেখে বোঝা যায়, যারা এসেছিল তারা যাত্রা শুরু করে পাকিস্তান থেকে৷ অস্ত্রতেও মিলেছে পাকিস্তানের ছাপ৷ এর আগে রবিবার অর্থাৎ হামলার দিন একটি জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং৷ সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সব উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা৷ সেনার তরফে গোটা ঘটনা বর্ণনা করা হয় রাজনাথ সিংকে৷
এদিকে, উত্তর কাশ্মীরের উরি সেনা ঘাঁটিতে ভয়ঙ্কর জঙ্গি হামলার প্রেক্ষিতে উত্তেজনা অব্যাহত ভারত পাকিস্তানের মধ্যে৷ উরি হামলার জন্য পাকিস্তানকে সরাসরি দায়ি করেছে ভারত৷ ভারতীয় সেনাবাহিনী একেবারে নিশ্চিত যে, উরি হামলার ছক কষা হয়েছিল পাকিস্তানে বসেই৷ যদিও পাকিস্তান ভারতের সমস্ত অভিযোগ নস্যাত করে দিয়েছে৷ সোমবার এক বিবৃতি প্রকাশ করে ইসলামাবাদের তরফে দাবি করা হয়েছে, কোনও প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানকে দায়ী করছে ভারত৷ পাক বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে উল্লেখ, ভারতের রাজনৈতিক এবং সামরিক নেতৃত্ব যে ভাবে কোনও প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করছে, তাতে পাকিস্তান অত্যন্ত উদ্বিগ্ণ৷ এদিকে ইসলামাবাদের বক্তব্যকে পাত্তাই দিল না ভারত৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু সোমবার বলেছেন, আমাদের অভিযোগকে পাকিস্তান মানল মা নস্যাত করল, তাতে সত্যিই কিছু যায় আসে না৷ পাকিস্তান কী বলল, সে নিয়ে আমাদের ভাবার কোনও প্রয়োজন নেই৷ সহ্যের একটা সীমা থাকে, ভারতীয় সেনাবাহিনীও এখন পাকিস্তানকে উপযুক্ত জবাব দিতে চাইছে৷
এদিকে, জম্মু-কাশ্মীরের বারামুল্লার উরি সেক্টরের সেনা ঘাঁটিতে জঙ্গি হামলার ঘটনার তদন্তভার গ্রহণ করল ন্যাশনাল ইনভেশটিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) এনআইএ কর্তাদের একটি দল রবিবার শ্রীনগরে পৌঁছে ঘটনাস্থলে ঘুরে দেখেন৷ উত্তর কাশ্মীরের উরি সেনা ঘাঁটিতে চার জঙ্গি সেনাদের গুলিতে মৃতুয হলেও প্রাণ হারিয়েছেন ২০ জন জওয়ান৷ এনআইএয়ের এক কর্তা জানিয়েছেন, এই হামলার পেছনে একটি বিশেষ কারণ রয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ কাশ্মীরের হিজবুল মুজাহিদিন কমান্ডার বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে কাশ্মীর৷ যদিও এই হামলায় পাকিস্তান তাদের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগকে অস্বীকার করেছে৷ এর আগে পাঠানকোটে জঙ্গি হামলার পর নান প্রশ্ণ উঠেছিল৷ তারপরও তাহলে কী সেনাদের তরফে কোনও ব্যবস্থায় নেওয়া হয়নি৷ উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে এরকমই একটি জঙ্গি হামলা হয উরি সেক্টরের৷ সেনা ঘাঁটিতে মহড়া চলাকালীন জঙ্গি হামলায় আট জওয়ান ও তিন পুলিশ অফিসারের মৃত্যু হয়৷
2016-09-20