গোলকগঞ্জ (অসম), ০৪ সেপ্টেম্বর, (হি.স.) : নিম্ন অসমের ধুবড়ি জেলার গোলকগঞ্জের বিধায়ক বিজেপি-র অশ্বিনীকুমার রায় সরকারের বাড়ির সম্মুখবর্তী সড়ক-সহ এলাকার বিভিন্ন চার জায়গায় পাকিস্তানি পতাকা লাগানোকে কেন্দ্র করে জেলায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। দেশবিরোধী এমন কার্যের খবর পেয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকা থেকে পতাকাগুলি খোলে নিয়েছে পুলিশ। ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুষ্কৃতীকে আটক-সহ মামলা সম্পর্কে তদন্তকার্যে নেমে পড়েছে গোলকগঞ্জ ও জেলা পুলিশ।
ঘটনার খবরে প্রকাশ, গতকাল শনিবার রাতে বিধায়কের বাড়ির সম্মুখবর্তী রাস্তায় দুটি, এবং একটি করে ছাগলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয় চত্বরে, হালকুরা গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয় চত্বরে ও আরেকটি গোলকগঞ্জ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে পাকিস্তানি পতাকা লাগিয়েছে কোনও দুষ্কৃতী। সব জায়গা থেকেই এই পতাকাগুলি নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্রের বিভিন্ন চার জায়গায় (বাড়ি সংলগ্ন রাস্তা-সহ) পাকিস্তানি পতাকা লাগানো সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে এই দুষ্কর্মের সঙ্গে কোনও সমাজবিরোধীর জড়িত থাকার সন্দেহ করছেন বিজেপি বিধায়ক অশ্বিনী রায় সরকার। এই ঘটনার সঙ্গে জেহাদি-সম্পর্ক রয়েছে কিনা হিন্দুস্থান সমাচার-এর এক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে সরাসরি এ-ঘটনায় জেহাদি-সম্পর্ককে একেবারে নস্যাৎ করেননি তিনি। বলেছেন, ধুবড়ি-সহ রাজ্যের অন্যান্য অঞ্চলে জেহাদি তৎপরতা যে রয়েছে তা সকলেই জানেন। তবে গত রাতের পাকিস্তানি পতাকা কাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জেহাদিদের জড়াতে চান না তিনি। এই ঘটনার সঙ্গে কোনও দুষ্টচক্র জড়িত, যারা জেলায় সামাজিক সম্পর্কে চির ধরিয়ে অশান্তি কায়েম করতে তৎপর। এর আগেও ধুবড়ির মন্দিরে গো মাংসের টুকরো ফেলে অশান্তি ছড়ানোর প্রক্রিয়া হয়েছিল। কিন্তু সাধারণ ও পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি জেলার সচেতন নাগরিকদের তৎপরতায় তাদের অভিসন্ধি বিফল হয়েছে। আজকের ঘটনায়ও পূর্বের মতো সমাজবিরোধীদের অভিসন্ধিকে বিফল করে জেলায় শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে সকলকে আহ্বান জানানোর পাশাপাশি এবারেও সাধারণ প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতাকে স্বাগত জানিয়েছেন বিধায়ক আশ্বিনীকুমার রায় সরকার।
প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে, ভারত-বাংলাদেশে সীমান্তঘেঁষা ধুবড়ি জেলার বিভিন্ন এলাকায় চোরাকারবারের পাশাপাশি এই সব সীমান্ত দিয়ে ঢালাও অনুপ্রবেশ চলছে। গত দুদিন এইসব সীমান্ত পরিদর্শন করে উদবেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল। জেলায় বেশ কয়েকটি সীমান্ত একেবারে উন্মুক্ত দেখেও গভীর উদবিগ্ন তিনি।
রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বর্তমান বিজেপি জোট সরকারের আমলে কিছুটা উন্নত হলেও তলে তলে মৌলবাদী শক্তিদের চক্রান্ত সমানেই চলছে। তাই কেউ কেউ মনে করছেন, পাকিস্তান সীমান্তবর্তী কাশ্মীরের ধাঁচে এই রাজ্যেও পাকিস্তানি পতাকা উত্তোলন করে আশন্তি কায়েম করতে চাইছে এইসব মৌলবাদী শক্তিগুলি। তাঁরাও রাজ্যবাসীকে এ ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।