গনিখানের দুর্গে থাবা, তৃণমূলে যোগ দিল মালদা জেলা পরিষদের বাম-কংগ্রেসের ১৫ জন সদস্য

মালদা, ২২ আগস্ট (হি.স): গনিখানের কংগ্রেসী দুর্গে থাবা বসালো তৃণমূল| কংগ্রেস এবং বাম সদস্যদের তৃণমূলে যোগ দান tmcকরিয়ে মালদা জেলা পরিষদ দখল নিল তৃণমূল কংগ্রেস| সোমবার দুপুরে কলকাতার তৃণমূল ভবনে মালদা জেলা পরিষদের বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের মোট ১৫ জন সদস্যের হাতে দলীয় ঝান্ডা দিয়ে দলে যোগ দেওয়ার ঘোষণার কথা জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মালদার পর‌্যবেক্ষক তথা রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারি| সেই সঙ্গে মালদায় কংগ্রেস এবং বাম দুর্গে পঞ্চায়েত স্তরে দুর্বল হয়ে পড়ল বিরোধী জোট নেতৃত্ব|
মালদা জেলা পরিষদের মোট ৩৮টি আসনের মধ্যে কংগ্রেসের দখলে রয়েছে ১৬ জন, বামফ্রন্টের দখলে রয়েছে ১৬ জন এবং তৃণমূলের দখলে রয়েছে ৬ জন| বামেদের বাইরে থেকে সমর্থন নিয়ে জেলা পরিষদ ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস| আর সভাপধিপতি ছিলেন সরলা মুর্মু| কিন্তু সভাপধিপতির নেতৃত্বেই এবার কংগ্রেসের পাঁচ সদস্য তৃণমূল যোগ দিলেন| দলত্যাগ পাঁচ সদস্যরা হলেন সরলা মুর্মু (সভাপধিপতি), দুর্গেশ সরকার, চন্দনা সরকার, মহম্মদ আশাদুল্লা এবং শ্যামল মন্ডল| পাশাপাশি সিপিএমের ৭ জন সদস্য যথা- জ্যোতি চৌধুরী, সাবিনা পারভিন, জাসমিরা খাতুন, দিলরুবা জাসমিন, খুশি বিশ্বাস, দ্বীজেন্দ্রনাথ মন্ডল এবং সাধনা মন্ডল তৃণমূলে গিয়েছেন| এছাড়াও বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের মর্জিনা খাতুন এবং সোস্যালিস্ট পার্টির মিলন দাস ও কাঞ্চন বিশ্বাস তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন| এছাড়াও তৃণমূলের আগের থেকেই নির্বাচিত ৬ জন সদস্য রয়েছেন| ফলে ২১ সদস্যের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে মালদা জেলা পরিষদে ক্ষমতায় এল তৃণমূল কংগ্রেস|
এদিন কলকাতা থেকে টেলিফোনে দলত্যাগী কংগ্রেস নেতা সৌমিত্র রায় জানিয়েছেন, মালদা জেলায় কংগ্রেস ধ্বংসের দিকে এগোচ্ছে| দুই সাংসদ নির্বাচনের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়ে কোনও কথা রাখে নি| মানুষ আমাদের কাছে কৈফিয়ত চাইছে| কংগ্রেস পরিচালিত জেলা পরিষদ ঠিকভাবে কাজ করতে পারছিল না| ফলে জেলার অগ্রগতি অন্য জেলা থেকে পিছিয়ে যাচ্ছিল| মানুষের ভাবনাকে সম্মান জানিয়ে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে|
এদিক, তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, কংগ্রেস ও বাম দলের মোট ১৫ জন সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন| একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে আমরা মালদা জেলা পরিষদ পাচ্ছি| আগামীতেও কংগ্রেস এবং বাম শিবির ছেড়ে অনেক প্রতিনিধিরাই দলে আসার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন| সেটি রাজ্য নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হবে|
রবিবার মৌসম নূর জানিয়েছিলেন, তাদের দলের কয়েকজন সদস্যকে ভয়ভীতি এবং প্রলোভন দেখিয়ে নিজেদের দলে টানার চেষ্টা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস| আমরা এর তীব্র বিরোধীতা করছি| আমার আশা কোনও সদস্যরাই দল ছাড়বেন না| তবে একদিন পরেই তাকে আশাহত করে তৃণমূলে যোগ দিলেন দলীয় সদস্যরা|
এদিকে সিপিএমের জেলা সম্পাদক মন্ডলীর অন্যতম সদস্য তথা বিধায়ক খগেন মুর্মু জানিয়েছেন, সারদা আর নারদার টাকায় দলের সদস্যদের টানার চেষ্টা চালাচ্ছে শাসকদল তৃণমূল| এমনকি ভয়ভীতিও দেখানো হচ্ছে| এর জবাব বাংলার মানুষ দিবে| তবে যারা দলত্যাগ করেছে তাদের বিরুদ্ধে রাজ্য নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিবে|

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *