BRAKING NEWS

প্রাণবন্ত অনুষ্ঠানে জাগরণ এর ১৪২৩ বঙ্গাব্দের বিশেষ সাহিত্য সংসৃকতি সংখ্যার আবরণ উন্মোচন

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৬ জুলাই৷৷ রাজ্যের প্রথম দৈনিক সংবাদপত্র জাগরণ ১৪২৩ বঙ্গাব্দের বিশেষ সংখ্যা মঙ্গলবার

মঙ্গলবার আগরতলায় জাগরণ ভবনে জাগরণ এর ১৪২৩ বঙ্গাব্দের বিশেষ সাহিত্য সংসৃকতি সংখ্যার আবরণ উন্মোচিত হয়৷ ছবি নিজস্ব৷
মঙ্গলবার আগরতলায় জাগরণ ভবনে জাগরণ এর ১৪২৩ বঙ্গাব্দের বিশেষ সাহিত্য সংসৃকতি সংখ্যার আবরণ উন্মোচিত হয়৷ ছবি নিজস্ব৷

জাগরণ ভবনে এক সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয়৷ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ডঃ রবীন্দ্রনাথ দাশ শাস্ত্রী ও প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী, লেখক প্রাণতোষ কর্মকার৷ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাগরণ সম্পাদক পরিতোষ বিশ্বাস৷ মূলতঃ বাংলাভাষা ও বাংলা সাহিত্যের অঙ্গনকে আরো সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে রাজ্যের প্রথম দৈনিক সংবাদপত্র জাগরণ এই উদ্যোগ গ্রহণ করে৷ অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিবৃন্দ জাগরণ পত্রিকার এই সৃজনশীল কর্মকান্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেন৷ বরাবরই সৃজনশীল কাজের সঙ্গে রাজ্যের প্রথম দৈনিক সংবাদপত্রটি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে সাহিত্য সংসৃকতিকে সঠিকপথে পরিচালনা করার মুখ্য ভূমিকা পালন করে চলেছে বলেও তারা অভিমত ব্যক্ত করেন৷ এদিন জাগরণ এর ১৪২৩ বঙ্গাব্দের বিশেষ সংখ্যার আবরণ উন্মোচন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রবীন্দ্রনাথ দাশ শাস্ত্রী৷
[vsw id=”pzQ2gEAVVQo” source=”youtube” width=”425″ height=”344″ autoplay=”yes”]জাগরণ এর বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি অধ্যাপক ডঃ রবীন্দ্রনাথ দাশ শাস্ত্রী তাঁর মূল্যবান ভাষণে বলেন, সংবাদপত্র বাংলা সাহিত্যকে চিরকালই সমৃদ্ধ করে চলেছে৷ সংবাদপত্র হল সাহিত্যের মুকুটমণি৷ কবি সাহিত্যিকদের আবির্ভাব ঘটে সংবাদপত্রের মধ্য দিয়ে৷ লেখকদের প্রসঙ্গে আলোকপাত করতে গিয়ে ডঃ শাস্ত্রী বলেন, নব্য লেখকরা প্রবীণদের সম্মান করতে অনেক সময় ভুলে যান৷ প্রবীণ লেখক শিল্পীদের নাম তাদের লেখায় উল্লেখ করেন না৷ তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এধরনের প্রবণতা বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করার ক্ষেত্রে অনেকটাই অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ কারণ ইতিহাসকে বাদ দিয়ে নতুন প্রজন্মকে বাংলা সাহিত্য সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেওয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়৷ প্রকৃত লেখক হলে এসব বিষয় মননে চিন্তনে অবশ্যই গ্রথিত হতে হবে৷ তা না হলে প্রকৃত লেখক হওয়া সম্ভব নয়৷ প্রসঙ্গক্রমে তিনি আরো বলেন, সম্পাদককে আসল কথা সঠিকভাবেই বলতে হবে৷ তা না হলে ভালো লেখক তৈরি করা যাবে না৷ জাতীয় জীবনে সংবাদপত্রের ভূমিকা চিরন্তন বলেও তিনি উল্লেখ করেন৷ জাতীয়তাবোধ ও সভ্যতা সংসৃকতিকে অটুট রাখতে হলে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে লেখনিতে তার প্রকাশ ঘটাতে হবে৷ এক্ষেত্রে সংবাদপত্রের ভূমিকা অপরীসীম৷ সংবাদপত্রের মাধ্যমেই লেখক, শিল্পী সাহিত্যিকদের গুণের বর্হিপ্রকাশ ঘটে বলেও তিনি উল্লেখ করেন৷ রাজ্যের প্রথম দৈনিক সংবাদপত্র জাগরণ এক্ষেত্রে সুদীর্ঘকাল ধরে যথাযথ দায়িত্ব পালন করে আসছে৷ আজকের এই বই আকারে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ এরই প্রতিফলন বলে তিনি উল্লেখ করেন৷
অনুষ্ঠানের সভাপতি জাগরণ সম্পাদক পরিতোষ বিশ্বাস জাগরণ এর বিশেষ সংখ্যা বই আকারে প্রকাশ অনুষ্ঠানকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য ক্ষুদ্র আয়োজনে উপস্থিত অতিথি ও লেখক-লেখিকা-শিল্পী প্রত্যেকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং পরবর্তী প্রতিবছর এধরনের বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন৷ তিনি বলেন, বই আকারে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ অনুষ্ঠানের মুহূর্তকে স্মরণীয় করে রাখতেই এই আয়োজন৷ জাগরণ ত্রিপুরার প্রথম দৈনিক সংবাদপত্র হিসেবে যথেষ্ট গৌরবের পথ অতিক্রম করে চলেছে৷ এর কলেবর কতটা কিংবা মানুষের সুখ দুঃখের কথা, সমাজকে সঠিকপথে পরিচালনা করার ক্ষেত্রে কতটা দায়িত্ব পালন করছে তা পাঠক-পাঠিকা সহ সমাজের গুণীজনরাই ভালোভাবে বলতে পারবেন৷ জাগরণ শুধু নিজ দায়িত্ব সীমিত পরিকাঠামোর মধ্যে পালন করার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷ তবে একথা নির্দ্ধিধায় বলা যেতে পারে প্রবীণরা এই কাগজকে যথেষ্ট স্নেহের চোখে দেখেন৷ জাগরণ ত্রিপুরার হেরিটেজ হিসেবে পরিগণিত হয়েছে৷ জাগরণ এর প্রথম বই আকারে ১৪২৩ বঙ্গাব্দ সংখ্যা প্রকাশের ঘরোয়া অনুষ্ঠানে আন্তরিকতার ছোঁয়াই পরিলক্ষিত হচ্ছে৷ তিনি বলেন, এই সংখ্যা প্রকাশের একটি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য রয়েছে৷ বিভিন্ন সংবাদপত্র শারদ সংখ্যা প্রকাশ করে থাকে৷ শারদ সংখ্যার নিশ্চয়ই গুরুত্ব রয়েছে৷ কিন্তু বাংলা সাহিত্য সংসৃকতি ও বাংলা ভাষাকে অবক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য জাগরণ ক্ষুদ্র পরিসরে হলেও এই বইটির প্রকাশ ঘটানোর উদ্যোগ নিয়েছে৷ তিনি বলেন, বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় প্রতিযোগিতার ইঁদুর দৌঁড়ে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে ইংরেজির প্রতি ঝোঁক ব্যাপকহারে বেড়েছে৷ বাংলা ভাষা হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দিন দিন বাড়ছে৷ একই ভাবে বাংলা সংবাদপত্রও একদিন হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে৷ ইংরেজি মাধ্যম সুকলের রমরমা পরিলক্ষিত হচ্ছে৷ আমাদের নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা বাংলা শেখা প্রায় ভুলেই যাচ্ছে৷ বাংলা না জানলে বাংলা সংবাদপত্র চালানো কোনভাবেই সম্ভব হবে না৷ বাংলা ভাষা মায়ের ভাষা, জীবনের সঙ্গে রক্তের সঙ্গে, প্রতিটি মুহূর্তের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলা ভাষা৷ এই ভাষাকে অবক্ষয়ের কবল থেকে রক্ষা করতে হবে৷ সেই মহৎ উদ্দেশ্যকে পাথেয় করেই রাজ্যের প্রথম সংবাদপত্র জাগরণ এই প্রত্যেক বাংলা বর্ষে বই আকারে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে৷
অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন বিশেষ সংখ্যার অতিথি সম্পাদক ডঃ ভাস্কর রায় বর্মণ৷ তিনি বলেন, আমাকে এই গুরু দায়িত্ব দেয়ায় আমি অভিভূত হয়েছি৷ জাগরণ সম্পাদকের এই উদ্যোগকে তিনি ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, আজ একটি ইতিহাস রচিত হল৷
বক্তব্য রাখতে গিয়ে বরিষ্ঠ সাংবাদিক সঞ্জীব কুমার দেব বলেন, জাগরণের এই উদ্যোগ সময়োপযোগী৷ এই পত্রিকার সম্পাদকের বরাবরই নূতনত্বের বিষয়ে আগ্রহ৷ সে আগ্রহকেই তিনি এই বিশেষ সংখ্যা বই আকারে প্রকাশের মাধ্যমে বাস্তবায়িত করেছেন৷ শ্রী দেব জাগরণ এর বিশেষ সংখ্যা আগামী দিনেও প্রকাশ জারি রাখার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন৷ পাশাপাশি তিনি বলেন, জাগরণ এর এই প্রয়াস গঠনমূলক চিন্তার প্রকাশ৷ পাঠকদের মধ্যেও তার প্রভাব দারুণভাবে পড়বে৷ রাজ্যের প্রথম দৈনিক সংবাদপত্র হিসেবে জাগরণ এর একটি দায়বদ্ধতা রয়েছে রাজ্যবাসীর প্রতি৷ আর এই দায়বদ্ধতার তাগিদেই বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ বলে সঞ্জীব দেব মন্তব্য করেন৷
অনুষ্ঠানের সম্মানিত অতিথি বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী শিক্ষক প্রাণতোষ কর্মকার গান গেয়ে অনুষ্ঠানকে মাতিয়ে দেন৷ বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী সুদীপ্ত শেখর মিশ্রের সংগীতাঞ্জলি উপস্থিত অতিথিদের মুগ্দ করে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *