নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২০ জুলাই৷৷ ভারত সহ প্রতিবেশী বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন আইএস এর অস্তিত্ব প্রমাণিত৷ গোটা বিশ্বে এই জঙ্গী সংগঠন বিস্তার করে চলেছে৷ বাংলাদেশে শুলশানে হামলার পর ভরাত-বাংলাদেশ ত্রিপুরা সীমান্তে নজরদারী কঠোর করা হয়েছে৷ মঙ্গলবার রাতে যাত্রাপুর থানার অধীন কাঁঠালিয়ায় ১২ জন সন্দেহভাজন আইএস চরকে আটক করেছে পুলিশ৷ তাদেরকে জোর জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে৷ প্রাথমিকভাবে ধৃতরা জানিয়েছে তাদের বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার রঘুনাথগঞ্জ থানার মঙ্গলজন এলাকায়৷
সংবাদে প্রকাশ, গোপন সূত্রের ভিত্তিতে পুলিশের কাছে খবর আসে সীমান্তের ওপাড় থেকে বেশ কয়েকজন অনুপ্রবেশ করেছে৷ তারা বর্তমানে কাঁঠালিয়ায় ঘুরাফেরা করছে সন্দেহ জনক অবস্থায়৷ গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ ১২ জন সন্দেহভাজন আইএস চরকে আটক করেছে৷ তারা হল, আব্দুল বৈদ্য, রবিওল এস কে, নুরুল বৈদ্য, সফিকুল বৈদ্য, রাফিক বৈদ্য, কাসেম আলি বৈদ্য, হাফিজুল শেখ, মহম্মদ বিন ইসলাম, রুসুল বৈদ্য, তারা বৈদ্য, মহম্মদ সাদ্দাম হুসেন এবং মারুক হুসেন৷
অভিযুক্তরা পুলিশের কাছে তথ্য দিয়েছে যে তারা কবিরাজি ওষুধ ব্যবসার জন্য এখানে এসেছে৷ পুলিশ তাদেরকে জোর জিজ্ঞাসাবাদ করে চলেছে৷ পুলিশ তাদের কাছ থেকে কিছু তাবিজ, কবজ, কড মাছের তেল ও মাছের হাড় উদ্ধার করেছে৷ কিন্তু, পুলিশের সন্দেহ রয়েই গিয়েছে৷ একসাথে ১২ জন কবিরাজি ব্যবসার জন্য সীমান্ত এলাকায় পৌঁছেছে পশ্চিমবঙ্গ থেকে৷ বিষয়টিকে স্বাভাবিক চোখে দেখছে না পুলিশ৷ এদিকে গত পরশুদিন বিলোনীয়াতেও এক সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে৷ তার সাথে এই ১২ জনের কোন যোগাযোগ রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷ একই সঙ্গে ধৃতরা তাদের বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার রঘুনাথগঞ্জ থানার অধীন বলেছে৷ পুলিশ রঘুনাথগঞ্জ থানার সাথে যোগাযোগ করে তাদের সম্পর্কে খোঁজ খবর নিচ্ছে৷
প্রসঙ্গত, ভারতীয় গোয়েন্দা বিভাগের কাছে খবর রয়েছে বাংলাদেশ থেকে বেশ কিছু আইএস জঙ্গী ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা করছে৷ এমনকি বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন জঙ্গীর ছবি সহ নামের তালিকা ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে যারা এপাড়ে অনুপ্রবেশ করতে পারে৷ বাংলাদেশের গুলশানে হামলার পর ত্রিপুরার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে আইএস এর ছায়া পড়েছে৷ পুলিশ সহ গোয়েন্দারা দীর্ঘদিন ধরেই এই আশঙ্কা করে আসছে৷ এবার তা শুধু প্রমাণের অপেক্ষা৷ গত কয়েক মাস আগে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান বোমা কান্ডের সঙ্গে জড়িত জাহাঙ্গিরের নামে এক জঙ্গীকে যাত্রাপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ এনআইএ এর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে৷ এদিকে, এদিন ধৃত ১২ জন কবিরাজি ব্যবসার অন্তরালে তারা আইএস এর স্নিপার সেলের এজেন্ট হিসেবে কাজ করতে পারে বলে বিভিন্ন মহল থেকে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ এদিকে, বাংলাদেশে জঙ্গী হামলার পর ভারত-বাংলাদেশ ত্রিপুরা সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে৷ বেশ কয়েকটি সীমান্ত এলাকায় ১৪৪ ধারা জারী করেছে ত্রিপুরা সরকার৷ পাশাপাশি বিএসএফকেও সতর্ক করা হয়েছে৷ সীমান্তে কঠোর নজরদারী চালানোর জন্য৷ এমনিতে ত্রিপুরার সিংহভাগ ইন্দো-বাংলা সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করা হয়েছে৷ কিছু কিছু এলাকায় এখনও কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের কাজ শেষ হয়নি৷ যেসব এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়নি সেখানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে৷
2016-07-21