নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩ জুলাই৷৷ রাজ্যের সরকারী শিক্ষক কর্মচারীদের মুখে অতি সহজে হাসি ফুটবে না৷ অর্থমন্ত্রী ভানুলাল সাহার বক্তব্যে একথাই স্পষ্ট৷ রবিবার মহাকরণে সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন, বকেয়া ডিএ প্রদান এবং নয়া বেতন কমিশন চালু করার বিষয়ে রাজ্য সরকার ক্ষমতা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে৷ এর জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন রয়েছে৷ এদিকে, বকেয়া ডিএ প্রদান নিয়ে উচ্চ আদালতের রায় মানতে গেলে আরও অনেক টাকার প্রয়োজন৷ ফলে এই বিষয়ে রাজ্য সরকার এখনই কোন চিন্তা ভাবনা করেনি৷ আর্থিক সংকটের কারণে নানা দিক বিবেচনা করেই রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেবে বলে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন৷
এদিন তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার নতুন বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুমোদন দিয়েছে৷ কেন্দ্র কর বাবদ যা পেয়ে থাকে তা প্রচুর টাকা৷ তা সত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার সপ্তম বেতন কমিশনের মোতাবেক কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের বেতন দিতে চিন্তায় পড়েছে৷ রাজ্যের সরকারী শিক্ষক কর্মচারীদের বিষয়ে রাজ্য সরকার কোন আলোচনা এখনও পর্যন্ত করেনি৷ বেতন ভাতা পেনশন ইত্যাদি মিটাতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার যা অর্থ দেওয়ার কথা তা সবটা দিচ্ছেনা বলে তিনি অভিযোগ করেন৷ সুনির্দিষ্ট তথ্য তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী জানান, গত বছর ঐ খাতে পাঁচশ কোটি টাকা কম পেয়েছে রাজ্য সরকার৷ এবছর মাসিক গড় হিসাবে যা পরিমাণ অর্থ মিলছে তাতে ১১৫৬ কোটি টাকা রাজ্য কম পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ তিনি জানান, কাগজে কলমে কেন্দ্রীয় সরকার যা দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সেটাও পাওয়া যাচ্ছে না৷
এদিন তিনি রাজ্যের আর্থিক সংকটের প্রসঙ্গটি তুলে ধরে বলেন, সরকারী শিক্ষক কর্মচারীদের বকেয়া ৪৬ শতাংশ ডিএ প্রদান করতে হলে প্রতি বছর অতিরিক্ত ১৬০০ কোটি টাকা প্রয়োজন রাজ্যের৷ বর্তমানে ৭৯ শতাংশ ডিএ দেওয়া হচ্ছে সরকারী শিক্ষক কর্মচারীদের৷ আর্থিক সংকটের বিষয়ে তথ্য তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারী শিক্ষক কর্মচারীদের সমস্ত বকেয়া মিটিয়ে দিতে গেলে গড়ে মাথাপিছু ১ লক্ষ টাকা করে বাড়াতে হবে প্রতিবছরে৷ বর্তমানে রাজ্যে প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার নিয়মিত কর্মচারী, ৪৯ হাজার চুক্তিভিত্তিক কর্মী এবং ৫০ হাজারের মতো পেনশনার রয়েছে৷ ফলে প্রায় দুই লক্ষাধিক সরকারী শিক্ষক কর্মচারী ও পেনশারদের গড়ে মাথাপিছু ১ লক্ষ টাকা করে বাড়াতে গেলে যে বিপুল অর্থের প্রয়োজন তা এখনই বন্দোবস্ত করা রাজ্য সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়৷ তাই সরকারী শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন সংক্রান্ত সমস্ত দাবী দাওয়া এই মুহুর্তে পূরণ করার কোন প্রতিশ্রুতি দেওয়া সম্ভব নয়৷ কারণ, প্রতিশ্রুতি দিলে তা পূরণ করতে রাজ্য সরকার বাধ্য৷ আবার রাজ্যের ঋণের বোঝা বাড়ানো সম্ভব নয়৷ তাই তিনি বলেন, অর্থের যোগান হলেই সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ তাতে সরকারী শিক্ষক কর্মচারীদের খুশি কিংবা অখুশি হওয়ার কোন কারণ নেই বলে অর্থমন্ত্রী মনে করেন৷ পাশাপাশি জানান, আর্থিক সীমাবদ্ধতার মধ্যে যা করা সম্ভব তা রাজ্য সরকার নিশ্চই করবে৷
2016-07-04