ঢাকা/নয়াদিল্লি, ২ জুলাই ঃ অবশেষে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় গুলশানের ক্যাফেতে বন্দুকধারীদের বিরুদ্ধে কমান্ডো অভিযান সমাপ্ত হয়েছে৷ তবে, এর আগেই সন্ত্রাসবাদীরা ২০ জন পণবন্দীকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে৷ অবশ্য ১৩ জন পণবন্দীকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে৷ শুক্রবার রাত থেকে শুরু হওয়া জঙ্গি বিরোধী অভিযান দীর্ঘ ১৩ ঘন্টা পর শনিবার সকালে সমাপ্ত হয়েছে৷ কমান্ডো অভিযানে ৭ জঙ্গীর মধ্যে ৬ জন মারা গেছে, অপর একজনকে আটক করা সম্ভব হয়েছে৷ এই অভিযানে দুই পুলিশকর্মীও শহীদ হয়েছেন৷ বাংলাদেশ সেনার তরফে জানানো হয়েছে, শুক্রবার রাতেই পণবন্দীদের মধ্যে ২০ জনকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে৷ নিহতদের প্রত্যেকের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত পাওয়া গেছে৷ সেনা কর্তা জানিয়েছেন, নিহতদের প্রত্যেকেই বিদেশী৷ এছাড়া যাদের উদ্ধার করা হয়েছে, তাদের মধ্যেও তিনজন বিদেশী৷ তিনি জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে ২ জন ইতালীর কৃটনীতিক ছিলেন৷ যাদের জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে তাদের মধ্যে ১ জন জাপানের এবং দু’জন শ্রীলঙ্কার নাগরিক৷
বাংলাদেশ সেনা কর্তা জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত ৯টার দিকে গুলশানের আর্টিজান বেকারীতে গুলি ছুড়তে ছুড়তে বন্দুকধারীরা প্রবেশ করে৷ এই ক্যাফেটি বিদেশীদের কাছে ভিষণ জনপ্রিয়৷ ফলে, শুক্রবার রাতে পণবন্দীদের মধ্যে অধিকাংশই বিদেশী ছিলেন৷ সেনা কর্তা জানান, জঙ্গীদের কাছ থেকে চারটি পিস্তল, একটি ফোল্ডেট বাট একে-২২ রাইফেল, চারটি তাজা আইইডি এবং প্রচুর ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে৷ শুক্রবার রাতেই পুলিশ যখন ক্যাফেটি ঘিরে ফেলে তখন জঙ্গিরা বোমা এবং গুলি ছুড়েছিল৷ তাতে দুই পুলিশ কর্মী নিহত হয়েছেন৷ সেনা কর্তা জানান, বাংলাদেশ পুলিশের কাছ থেকে সমস্ত খবর জানার পরই সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায়৷ এরই মধ্যে র্যাব গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে৷ এরপর বাংলাদেশ সেনা, নৌ, বিমান বাহিনী সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছানোর শুরু হয় কমান্ডো অভিযান৷ অপারেশন থান্ডার বোল্ট নামে এই অভিযানে নেমে কমান্ডো বাহিনী সাফল্য অর্জন করে৷ অবশেষে জঙ্গিদের নিধন করতে সক্ষম হন কমান্ডো বাহিনী এবং একজনকে আটক করে৷ জঙ্গি অভিযান শেষ হওয়ার পর মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে স্থানীয় হালপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে৷ এই হামলার দায় আইএস জঙ্গি গোষ্ঠী স্বীকার করেছে৷
এদিকে, বাংলাদেশে এই হামলার জের ভারতেও সীমান্তবর্তর রাজ্যগুলিতে হাই এলার্ট জারি করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক৷ পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা প্রভৃতি রাজ্যগুলিকে বিমান বন্দরে নজরদারী বাড়ানো হয়েছে৷ তার সাথে তল্লাশিও করা হচ্ছে৷