নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৫ জুন৷৷ জ্বালানী সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি আসাম সরকারের কড়া সমালোচনা করেন পরিবহণ মন্ত্রী মানিক দে৷ শনিবার আসাম-আগরতলা জাতীয় সড়কের লোয়ারপোয়া অংশের বেহাল দশা নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় পরিবহণমন্ত্রী বলেন, অত্যাবশ্যকীয় ক্ষেত্রে যেকোন সরকারের উচিত এগিয়ে আসা৷ কিন্তু, ত্রিপুরা বিপন্নের মুখে পড়লেও আসাম সরকারের তরফে কার্য্যকরী উদ্যোগ নেওয়া হয়নি এতদিন৷ জাতীয় সড়কের বেহাল দশা নিয়ে বহুবার কেন্দ্রীয় সরকারেরও দৃষ্টিতে আনা হয়েছে বিষয়টি৷ বর্ষা শুরু হতেই জাতীয় সড়ক পঙ্গু হয়ে যাবে আগাম জানানো হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারকে৷ অথচ রাজ্যের একমাত্র লাইফ লাইন বর্ষা শুরু হতেই বিপর্য্যস্ত হয়ে পড়লেও কেন্দ্রীয় সরকার এবং আসাম সরকারের কোন হেলদোল লক্ষ্য করা যাচ্ছে না৷ আসামের নতুন সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে শীঘ্রই লোয়ারপোয়ায় জাতীয় সড়কের বেহাল দশা কাটিয়ে তোলা হবে৷ তবে, এই প্রতিশ্রুতি কতটা পূরণ হবে এবং কবে নাগাদ ত্রিপুরার দুর্দশা মিটবে তা বলা মুশকিল৷
এদিন পরিবহণমন্ত্রী ক্ষোভের সুরে বলেন, রাজ্যের প্রতি দায়বদ্ধতা ভুলে গেছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রককে পেট্রোল, ডিজেল এবং এলপিজি এই তিনটি অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী পর্যাপ্ত পরিমাণে যোগানের অনুরোধ জানানো হয়েছিল৷ কারণ বর্ষা শুরু হলেই জাতীয় সড়ক স্তব্ধ হয়ে গেলে রাজ্যে পেট্রোপণ্যের আকাল দেখা দেবে৷ তা আগাম অনুমান করা গিয়েছিল৷ অথচ, কাঁঠালতলী দিয়ে যে বিকল্প সড়ক রয়েছে তার সংস্কারও হাতে নেওয়া হয়নি৷ ফলে লোয়ারপোয়া দিয়ে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হওয়ায় কাঁঠালতলী দিয়ে বিকল্প সড়কটিও সুবিধাজনক অবস্থায় না থাকায় জ্বালানী তেলের ট্যাঙ্কার ও এলপিজি’র বুলেট এর সাথে পণ্য সামগ্রী গাড়ি আটকে রয়েছে৷ আলো, ফল ইত্যাদি পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে৷ তিনি জানান, উপায় না দেখে গতকাল রাজ্যের পূর্ত দপ্তর উদ্যোগ নিয়ে কাঁঠালতলীতে ফেঁসে যাওয়া দুটি গাড়ি উদ্ধার করে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করা হয়৷ ফলে, শনিবার পেট্রোল ডিজেলের চল্লিশটি ট্যাঙ্কার রাজ্যে ঢুকতে পেরেছে৷ বিকল্প সড়ক মুক্ত করা হয়েছে৷ ফলে, প্রায় তিন শতাধিক যানবাহন ঐ সড়ক দিয়ে রাজ্যে প্রবেশ করেছে৷
এদিন তিনি বলেন, বাংলাদেশ দিয়ে এলপিজি’র বুলেট আনার বিষয়ে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল৷ জলপথে সম্ভব না হলে হলদিয়া থেকে সড়ক পথে যেন এলপিজি’র বুলেট আনার ব্যবস্থা করা হয়৷ সেই দাবীও জানানো হয়েছিল৷ অথচ কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক রাজ্যের এই দাবী পাত্তা দেয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী মানিক দে৷ রেল লাইনেও ভারী বর্ষনের কারণে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে৷ ফলে, চিনি, চাল বোঝাই বহু ওয়াগন দাঁড়িয়ে রয়েছে৷ এমতাবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকার আন্তরিকভাবে রাজ্যের অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রীর সংকট মোচনে ব্যবস্থা নেওয়ার জোরালো দাবী জানান পরিবহণ মন্ত্রী৷
2016-06-26