নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৭ জুন৷৷ রাজ্য সরকার মহার্ঘভাতা প্রদানে যে বঞ্চনা করছে তার বিরুদ্ধে ত্রিপুরা সরকারী
কর্মচারী ফেডারেশন আন্দোলন অব্যাহত রাখবে৷ শুক্রবার আগরতলায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে একথা জানান সমিতির নেতৃবৃন্দ৷ সংগঠনের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিগত ২৮-০৪-২০১৬ ইং তারিখে মহামান্য ত্রিপুরা হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতি শুভাশিষ তলাপাত্র এক ঐতিহাসিক রায়ে ত্রিপুরা সরকারী কর্মচারী ফেডারেশনের পক্ষে শিশিরেন্দ্র সাহা, প্রাক্তন মহাসচিব, রাজ্য সরকারী কর্মচারীরা বকেয়া সহ ১-১-২০০৯ ইং থেকে ৬-৭-২০১১ ইং পর্যন্ত ২৪ শতাংশ মহার্ঘভাতা পাওয়ার জন্য আদালতের কাছে যে আবেদন করেছিলেন, আদালত সেই রিট পিটিশন গ্রহন করে রাজ্য সরকারকে ২৭-৮-২০১১ ইং পর্যন্ত হিসাব করে রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে যে মহার্ঘভাতা পাওনা (১-১৭-২০১১ সালে কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মচারীদের ৭ শতাংশ মহার্ঘভাতা মঞ্জুর করেন)৷ অর্থাৎ ৩১ শতাংশ মহার্ঘভাতা তিন (৩) কিস্তিতে প্রতি ৬ মাস অন্তর অন্তর মিটিয়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন৷ সেই নির্দেশের প্রথম কিস্তি শুরু হবে ০১-০৭-২০১৬ ইং থেকে৷
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, ত্রিপুরা সরকারের রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের প্রতি মহার্ঘভাতা নিয়ে যে বঞ্চনা তা নিরসনে ত্রিপুরা সরকারী কর্মচারী ফেডারেশন নিরন্তর সংগ্রাম করার পরেও রাজ্য সরকার বকেয়া মহার্ঘভাতা মিটিয়ে না দেওয়ায় শিশিরেন্দ্র সাহা, প্রাক্তন মহাসচিব বাধ্য হয়ে ২৪ শতাংশ মহার্ঘভাতা বকেয়া সহ পাওয়ার জন্য আদালতের শরণাপন্ন হন৷
এখানে আরো উল্লেখ্য, মহার্ঘভাতা নিয়ে পূর্বেও রাজ্য সরকারের বঞ্জনার পরিপ্রেক্ষিতে ত্রিপুরা সরকারী কর্মচারী ফেডারেশনের পক্ষে শশিরেন্দ্র সাহা তৎকালীন মহাসচিব ১৯৯৫ সালে ৪৪ শতাংশ বকেয়া সহ মহার্ঘভাতা পাওয়ার জন্য মহামান্য গৌহাটি হাইকোর্টের আগরতলা বেঞ্চে রিট পিটিশন দাখিল করেছিলেন৷ উক্ত মামলার নম্বর সিভিল রুল নম্বর ৫২৫/১৯৯৫৷ উক্ত মামলা চলাকালীন রাজ্য সরকার কর্মচারীদের জন্য ১২ শতাংশ মহার্ঘভাতা মঞ্জুর করেন৷ ফলে ৩২ শতাংশ মহার্ঘভাতা পাওনা হয়৷ উক্ত মামলায় মাননীয় বিচারপতি এন জি দাশ বিগত ৭-২-১৯৯৬ ইং তারিখে আদেশমূলে ৩২ শতাংশ মহার্ঘভাতা ৩ কিস্তিতে ৬ মাস অন্তর অন্তর দেওয়ার জন্য আদেশ দিয়েছিলেন এবং উক্ত মহার্ঘভাতা ৩ বৎসরের জন্য জি পি এফে রাখার আদেশ করেছিলেন এবং তা বাস্তবায়িত হয়৷ এবার ও মামনীয় বিচারপতি ৩ কিস্তিতে বকেয়াসহ ৬ মাস অন্তর অন্তর বকেয়া সহ ২৭-০৮-২০১১ ইং পর্যন্ত হিসাব করে (অর্থাৎ ২৪ শতাংশ প্লাস ৭ শতাংশ -৩১ শতাংশ) দেওয়ার যে আদেশ করেছেন সেই বকেয়াও জি পি এফে তিন বৎসরের জন্য জমা রাখার আদেশ করেন৷
ত্রিপুরা সরকারী কর্মচারী ফেডারেশনের পক্ষে দীপক বিশ্বাস, অ্যাডভোকেট, মামলাটি পরিচালনা করেন৷ রাজ্য সরকারের পক্ষে কোলকাতা হাইকোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট টি কে রায় ছিলেন৷
ত্রিপুরা সরকারী কর্মচারী ফেডারেশনের পক্ষে শিশিরেন্দ্র সাহা ও সমর রায় মহাসচিব রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন রাখছেন, যেন অতি সত্বর ত্রিপুরা হাইকোর্টের নির্দেশ মূলে আগামী ১লা জুলাই ২০১৬ ইং থেকে বকেয়া সহ মহার্ঘভাতা রাজ্য সরকারী কর্মচারী ও পেনশনারদের ১লা আগষ্ট ২০১৬ ইং এর বেতনে ও পেনশনের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়ার জন্য সমস্ত প্রকার প্রশাসনিক উদ্যোগ গ্রহন করেন৷