BRAKING NEWS

তেলিয়ামুড়ায় নিম্নমানের কাজের খেসারত, সামান্য বৃষ্টিতেই ভেঙ্গে পড়ল কোটি টাকার সেতুর পিলার

scamনিজস্ব প্রতিনিধি, তেলিয়ামুড়া, ৮ জুন৷৷ প্রায় কোটি টাকার ব্রিজ অল্প বৃষ্টিতেই ভেসে গেল খোয়াই নদীতে৷ অতি নিম্নমানের কাজের ফলেই ব্রিজটির একটি পিলার ভেঙ্গে খোয়াই নদীর জলে ভেসে যায়৷ ঘটনা তেলিয়ামুড়া সহ কুমার হলদিয়া এডিসি ভিলেজের ছনবাড়ি এলাকার খোয়াই নদীর উপর তৈরি সেতু৷
তেলিয়ামুড়া আর ডি দপ্তর থেকে তেলিয়ামুড়া এক ঠিকেদারকে দিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলের গিরিবাসীদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য৷ কাজ শুরু হয়েছিল খোয়াই নদীর উপর এই সেতুটির ৯৫ লক্ষ টাকা ধার্য করা হয় এই কাজটির জন্য৷ সে মোতাবেক ঠিকেদারবাবুকে সেতুটি সম্পূর্ণ নির্মাণের শেষ দিন ধার্য করা হয় ৩-১২-২০১৫ সালের মধ্যে৷ কিন্তু এক বছরে মাত্র ৬০ শতাংশ কাজও হয়নি এই সেতুটির৷ এর মধ্যেই সেতুটির চারটি পিলারের মধ্যে একটি পিলার সামান্য বৃষ্টিতেই ভেঙ্গে নদীর জলে ভেসে যায়৷
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই আঠারমুড়া পাহাড়ের বেশ কয়েকটি গ্রাম এর জনগণ রাজ্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিল দুই পারের জনগণের যাতায়াতের সুবিধার জন্য ঐ এলাকায় খোয়াই নদীর উপর একটি সেতু করে দেওয়ার৷ কারণ তাদের নদীর এক পার থেকে অন্য পারে যেতে হলে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হল কাঠের তৈরি নৌকা আর তা না হলে জলে ভিজে পায়ে হেঁটে নদী পার হতে হত৷ এলাকার উন্নয়নে যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে তেলিয়ামুড়া আর ডি সে কাজে হাত দেয়৷ কিন্তু কাজটি শুরুতেই ছিল গলদ৷ এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলে কাজের শুরুতেই সেতুটি তৈরির উপাদানগুলি গুণগত মানের ছিল না৷ না ছিল তৈরির সঠিক পন্থা অবলম্বন যে কারণে অল্প বৃষ্টিতেই সেতুটির একটি পিলার জলে ভেসে যায়৷
খবর পেয়ে মহকুমা শাসক বিম্বিসার ভট্টাচার্য সহ একদল প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ছুটে যায় ভগ্ণদশার ব্রিজটিকে দেখার জন্য৷ অপরদিকে কাজের বরাত পাওয়া ঠিকেদার বাবুকে পাওয়া যায় ঐ এলাকায় উনাকে ব্রিজের অবস্থা সম্পর্কে বলতেই তিনি অহরহ করে বলে ফেলেন যে নদীতে বন্যা এসেছে বিশালাকার একটি গাছ জলে ভেসে এসে পিলারটিকে ভেঙ্গে নিয়ে যায়৷ ঠিকেদার রজন বণিক আরো বলেন, কাজের গুণগত মান ভাল ছিল৷ কিন্তু ঠিকেদার রজনবাবুর এই বিশাল গাছের গল্প এলাকাবাসী নস্যাৎ করে দিয়ে বলেন এলাকাবাসী আমরা ছিলাম তখন এলাকায় কোন বিশালাকার গাছ আসেনি৷ শুধুমাত্র নদীতে জল একটু বেশি ছিল আমাদের সামনেই এই পিলারটি ধীরে ধীরে ভেঙ্গে নদীতে তলিয়ে যায়৷ একটি পিলারকে যদি সঠিক পদ্ধতিতে ব্যবহার করে বসানো হত তাহলে এই দুর্ঘটনাটি হত না৷
অপরদিকে তেলিয়ামুড়া মহকুমা শাসকের সাথে কথা বললে তিনি আমাদের জানান, স্পেশাল সেন্ট্রাল এসোসিয়েশন প্রকল্পের টাকায় উপজাতি কল্যাণ দপ্তর থেকে ৭৮ মিটার লম্বা সেতু উপজাতিদের কল্যাণের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল৷ তিনি আরো বলেন, হলদিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত সহ ১৪ টি পাড়া বিশেষ করে অবিরাম পাড়া হলদিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল এই সেতুটি৷ প্রকৃত এই সেতুটিকে কেন্দ্র করে এলাকার সুকল এবং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি কে সচল রাখা এমন কি নির্বাচনের সময় ভোট কেন্দ্রগুলির সঙ্গে প্রতিটি পাড়ার দূরত্ব কমানোই ছিল প্রশাসনের মূল উদ্দেশ্য৷ তিনি আরো বলেন নিম্নমানের জন্য ব্রিজটি নষ্ট হয়ে যায়নি৷ সরকারি অর্থেরও প্রচুর ক্ষতি হয়েছে৷ তবে মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই ভেঙ্গে যাওয়া সেতুর ব্যাপারে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *