BRAKING NEWS

সোমা মজুমদার নির্যাতন মামলায় চারজনকে চার ও তিনজনকে দুই বছরের সশ্রম কারাদন্ড

Soma Majumderনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৭ মে৷৷ রাজধানীতে চাঞ্চল্যকর সোমা মজুমদার নির্যাতন মামলায় আদালত সাতজনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে৷ তাদের চারজনকে চার এবং তিনজনকে দুই বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং দশ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছে৷ অনাদায়ে অতিরিক্ত ছয় মাসের কারাবাসের সাজা শুনিয়েছেন ফাস্ট ট্রেক কোর্টের বিচারক এস কে মজুমদার৷ মঙ্গলবার আদালত সুশীল মজুমদার, দেবব্রত মজুমদার, দীপঙ্কর মজুমদার এবং পার্থ মজুমদার, সুমতি মজুমদার, সীমা মজুমদার এবং শিল্পী মজুমদারকে চন্দ্রপুরে টাটা কালীবাড়ি সংলগ্ণ এলাকার বাসিন্দা সোমা মজুমদার নিগ্রহ কান্ডে দোষী সাব্যস্ত করেছে৷ এই মামলায় অভিযুক্ত অন্য তেরজনকে আদালত বেকসুর খালাস করে দিয়েছে৷ এদিন আদালত মহিলা আসামীদের ভারতীয় দন্ডবিধি ১৪৩ ধারায় তিনমাসের, ১৪৭ ধারায় ১ বছরের, ২২৩ ধারায় ছয়মাসের, ৩৪২ ধারায় ছয়মাসের, ৩৫৪ ধারায় দুইবছরের কারাবাসের নির্দেশ দেয়৷ [vsw id=”_OzCfiMYw30″ source=”youtube” width=”425″ height=”344″ autoplay=”yes”]পুরুষদের ক্ষেত্রে ৩৫৪(বি) ধারায় চার বছরের কারাবাসের সাজা শোনানো হয়৷ এদিকে আদালত নির্দেশ দিয়েছে আসামীদের কাছ থেকে জরিমানা বাবদ প্রাপ্ত অর্থ নির্যাতিতা সোমা মজুমদারকে দেওয়ার জন্য৷ এদিকে, জেলা লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটির তরফেও আর্থিক অনুদান হিসেবে দশ হাজার টাকা দেওয়া হবে সোমা মজুমদারকে৷ এই মামলায় মোট সাক্ষী ছিলেন ১৮ জন৷ সমস্ত সাক্ষ্যবাক্য এবং তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এদিন আদালত সাতজনকে দোষী সাব্যস্ত এবং বাকি অভিযুক্ত তেরজনকে বেকসুর খালাস করেছেন৷ সাজা ঘোষণার পর তিন মহিলা আসামী আদালত থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে যান৷
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ছয় অক্টোবর বিজয়া দশমীর পরদিন সোমা মজুমদারকে এলাকার লোকজন খঁুটির সাথে মারধর করেন৷ এই ঘটনায় ঐদিন থানায় মামলা দায়ের করা হয়৷ কিন্তু পুলিশ জামিনযোগ্য ধারায় মামলা নেওয়ায় অভিযুক্তরা সাত অক্টোবর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়ে যান৷ এই ঘটনায় পুলিশ লঘু ধারায় নেওয়ায় নানাদিক থেকে চাপ সৃষ্টি হয়৷ সমালোচনার মুখে পুলিশ এই মামলায় নতুন ধারা প্রয়োগ করেন৷ পাশাপাশি আদালতে অভিযুক্তদের জামিন বাতিল করার আবেদন জানায়৷ ২০১৪ সালের ১১ই অক্টোবর এই মামলায় পুলিশ ৩৫৪(বি) এই ধারাটি যুক্ত করে৷ এরপর ১৩ অক্টোবর আদালতে নির্যাতিতা সোমা মজুমদারের ১৬৪ মোতাবেক বয়ান রেকর্ড করা হয়৷ এরপর পুলিশ বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়েও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হয়৷ শেষে ২০ অক্টোবর সকলে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন৷ এরপর তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়৷ এই ঘটনায় সমস্ত সাক্ষীর বয়ান রেকর্ড করার পর উচচ আদালত থেকে অভিযুক্তরা জামিন পেয়ে যান৷ ২০১৫ সালের ১১ মার্চ অভিযুক্তরা জামিনে ছাড়া পান৷ এরই মধ্যে ৪ মার্চ সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছিল৷ পুলিশ অবশ্য এই মামলায় ২০জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৪ সালের ১৭ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট জমা দেন৷ ভারতীয় দন্ডবিধি ১৪৩/১৪৭/১৪৯/১২০(বি)/৩৪১/৩৪২/৩৫৪/৩৫৪(বি)/৩২৫/৩৮৫/৩৯৭ এবং ৫০৬ ধারায় পুলিশ আদালতে চার্জশিট জমা দেয়৷
উল্লেখ্য, সোমা মজুমদার কান্ডে পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছিল৷ তৎকালীন সময়ে সোমা মজুমদার তদানীন্তন রাজ্যপাল পি বি আচারিয়ার দ্বারস্ত হয়েছিলেন৷ রাজ্যপাল তাতে হস্তক্ষেপ করেছিলেন৷ রাজ্যপালের হস্তক্ষেপে পুলিশ প্রশাসন আরো নড়েচড়ে বসে৷ অবশেষে আদালতে মামলা শুরু হয়৷ মঙ্গলবার এই মামলার সাজা ঘোষণা করা হয়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *