হামলা হুজ্জুতির খোঁজ নিতে আনন্দবাজারে আয়েঙ্গার, শরণার্থীদের যেকোন মূল্যে মিজোরামে ফেরত পাঠাতে চায় রাজ্য সরকার

DSCN8696নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৬ মে৷৷ কাঞ্চনপুর আনন্দবাজার থানার অধীন কাশীরামপুরে রিয়াং শরণার্থীদের একাংশের হামলা হুজ্জুতির ঘটনায় সোমবার সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে গিয়েছেন গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের প্রধান সচিব জি এস জি আয়েঙ্গার৷ সেখানে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির সাথে সাক্ষাৎ করে কথা বলেছেন৷ পাশাপাশি জেলা শাসক এবং পুলিশ সুপারের সাথেও বৈঠক করে ঘটনার বিস্তারিত তথ্য নিয়েছেন৷ শ্রীআয়েঙ্গার জানিয়েছেন, জেলা শাসককে এই ঘটনার একটি রিপোর্ট পাঠানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ এই রিপোর্টের ভিত্তিতে সমস্ত কিছু বিবেচনা করে প্রয়োজনে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে৷ এদিকে, সূত্রের খবর রাজ্য সরকার চাইছে অবিলম্বে কাঞ্চনপুরের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে অবস্থানরত রিয়াং শরণার্থীদের মিজোরামে ফেরত পাঠাতে৷ এই ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনা আগামীদিনে যাতে না ঘটে সেজন্য রিয়াং শরণার্থীদের স্বভূমে ফেরত পাঠানোর তাগিদ বেড়েছে বলে মহাকরণ সূত্রের দাবি৷ জানা গিয়েছে, শীঘ্রই এই নিয়ে কেন্দ্রে ফের দরবার চালানো হবে৷ রাজ্য সরকারের তরফে রিয়াং শরণার্থীদের যেকোন মূল্যে ফেরত পাঠানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা হবে বলেও সূত্র অনুসারে জানা গিয়েছে৷ মহাকরণ সূত্রের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে সহায়সম্বলহীন রিয়াং শরণার্থীরা নিজেদের ভিটে মাটি ছেড়ে কাঞ্চনপুরে লাঞ্ছনা ও বঞ্চনা সহ্য করে পড়ে রয়েছেন৷ মাঝে মধ্যেই ঐ শরণার্থী শিবিরে বিক্ষিপ্ত ঘটনাও ঘটে৷ এক যুবকের আত্মহত্যাকে কেন্দ্র করে রিয়াণ শরণার্থী শিবিরের একাংশ অউপজাতিদের উপর যেভাবে হামলা চালিয়েছে তা কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না৷ তাদের স্বভূমে ফেরত পাঠানো হলে অন্তত এই ধরনের ঘটনাগুলি এড়ানো সম্ভব হবে৷
এদিকে, রবিবারের ঘটনার প্রেক্ষিতে কাঞ্চনপুর মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে চলেছে জেলা প্রশাসন৷ প্রসঙ্গত, নাইসিংপাড়া শিবিরের এক যুবকের কাশীরামপুর সমতল এলাকায় গিয়ে অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন শরণার্থীরা৷ তাদের বক্তব্য ঐ যুবককে খুন করা হয়েছে৷ এই অভিযোগ এনে ছয় সহস্রাধিক শরণার্থী রবিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত আনন্দবাজার থানার অধীন কাশীরামপুর এলাকায় অউপজাতি অংশের জনগণের বাড়িতে হামলা চালায়৷ বাড়ি ঘরে ভাঙচুর চালানো হয়৷ একুশটি বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ উত্তেজনকর পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে পুলিশ লাঠিচার্জও করেছে৷ এদিকে, গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের প্রধান সচিব জি এস জি আয়েঙ্গার জানিয়েছেন, শরণার্থীরা ঐ যুবককে খুন করা হয়েছে বলে যে দাবি করা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন৷ কারণ ঐ যুবকের মৃতদেহের পাশে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে৷ ঐ সুইসাইড নোটে উল্লেখ করা হয়েছে তার মৃত্যুর জন্য কেউই দায়ি নয়৷
এদিকে, সোমবার আমরা বাঙালী এক সাংবাদিক সম্মেলন করে এই ঘটনার নিন্দা জানায়৷ এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা প্রদান করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে দাবী জানিয়েছেন৷