কলকাতা, ৫ মে৷৷ সাঙ্গ হল ভোট পর্ব৷ এখন অপেক্ষা ফল ঘোষণার৷ মোট ছয় দফায় পশ্চিমবঙ্গে ভোট পর্ব শেষ হয়৷ আগামী ১৯ মে অন্য চার রাজ্যের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গেরও ফল ঘোষণা হবে৷ এদিকে, এদিন প্রথমবারের মতো পশ্চিমবঙ্গে ভারত-

বাংলাদেশ সীমান্তে ছিটমহলের বাসিন্দারা ভোট দেন৷ অনেকটা উৎসবের মেজাজেই ভোট দিয়েছেন ছিটমহল বাসিন্দারা৷
উল্লেখ্য, নির্বিঘ্নেই শেষ হল ষষ্ঠ দফার নির্বাচন৷ বৃহস্পতিবার দুই রাজ্যের ২৫টি কেন্দ্রে গড়ে ভোট পড়ল ৮৪.২৪ শতাংশ৷ ষষ্ঠ তথা শেষ দফার নির্বাচনেও সক্রিয়ছিল কেন্দ্রীয় বানিহী দুএকটি ঘটনা ছাড়া, রাজ্য পুলিশের ভূমিকাও যথেষ্ঠ প্রশংসনীয়৷ আজ ষষ্ট দফার নির্বাচনের সঙ্গে শেষ হল রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন৷ এবার পালা ফলফল ঘোষণার ভোটের ফল গণনা হবে ১৯ মে৷ এই দিনই জানা যাবে ইভিএমে বন্দি হওয়া প্রার্থীদের ভাগ্য৷ সেই সঙ্গে ওই দিনই ঠিক হবে রাজ্যের ক্ষমতায় আসছেন কারা৷ বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে কড়া নিরাপত্তা ঘেরাটোপে পূর্ব মেদিনীপুরের ১৬টি এবং কোচবিহারের ৯টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়৷ প্রতিটি বুথে বুথে মোতায়েন ছিল আধা সেনা৷ সকাল সকাল বুথ গুলিতে দেখা মিলেছে ভোটারদেরও লম্বা লাইন৷ বুথে বুথে তো বটেই, বুথের বাইরেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়া নজরদারি ছিল৷ মানুষের জটলা দেখলেই তো সরিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ এদিনের ভোটগ্রহণের মধ্যে দিয়ে শেষ হচ্ছে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ পর্ব৷ স্বাধীনতার পর এই প্রথম ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পেয়েছে ভারতীয় ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত হওয়া ছিটমহলগুলি৷ সকাল থেকেই বুথে বুথে ছিল ভোটারদের লাইন৷ তবে, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনী যথেষ্ট কড়া ভূমিকা নিলেও বিক্ষিপ্ত কিছু অশান্তির খবর এসেছে৷ শীতলকুচির ২৭৬ নম্বর বুথে ভোটারদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে৷ এক ভোটারকে বাঁচাতে যাওয়ায় বাম এজেন্টকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ৷ ময়নার বিভিন্ন এলাকায় ভোটারদের বুথে যেতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে৷ অন্যদিকে, সিপিএম কর্মীর বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে৷ নন্দীগ্রামের তিনটি পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় কোনও বুথে বিরোধী দলের এজেন্টদের বসতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ৷ রামনগরের বিভিন্ন এলাকায় বহিরাগতদের ঢুকিয়েছে তৃণমূল, অভিযোগ করছেন বিরোধীরা৷ পাঁশকুড়া পশ্চিম কেন্দ্রের বিভিন বুথে বিরোধী এজেন্টদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে৷ ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ উঠেছে পটাশপুরের ২১৬ নং বুথে৷ জেলা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে নির্বাচন কমিশন৷ এদিন মেরুদন্ড সোজা রেখে যথেষ্ট প্রশংসা কুড়িয়েছে রাজ্য পুলিশ৷ পূর্ব মেদিনীপুরে ময়না কেন্দ্রের বাগচায় ভোট প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছিল শাসক দলের বিরুদ্ধে৷ অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই গ্রেফতার করা হয় তৃণমূলের তিন কর্মীকে৷ একই অভিযোগে দক্ষিণ হরবুলি থেকে দুই তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ পাঁশকুড়াতেও বাম এজেন্টদের বুথে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়৷ অভিযোগ উঠতেই পুলিশ হস্তক্ষেপ করে তাঁদের বুথে বসানোর ব্যবস্থা করে৷ এমন তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করে বেশ জায়গাতেই বাহবা কুড়িয়েছে রাজ্য পুলিশ৷ তবে ব্যতিক্রমে যে একেবারেই নেই, তা নয়৷ যেমন, পটাশপুরের বেশ কিছু বুথে মহিলাদের ভোট পুরুষরা দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠলেও তাতে খুব একটা আমল দেয়নি তারা৷ কোচবিহারেও বেশ কয়েকটি বূুথ থেকে বিরোধী এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে৷ অন্যদিকে, নন্দীগ্রামের বেশির ভাগ বূথেই এজেন্ট দিতে পারেনি বিরোধীরা৷ ২৭১ টি বুথের মধ্যে ২০১টিতেই কোনও এজেন্ট বসাতে পারেনি তারা৷ ষষ্ট তথা শেষ দফার ভোটে ভাগ্য নির্ধারণ হচ্ছে একগুচ্ছ হেভিওয়েট প্রার্থীর৷ যার মধ্যে আছেন নন্দীগ্রামের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী, রামনগরের বামফ্রন্ট প্রার্থী তাপস সিং, রামনগরের তৃণমূল প্রার্থী অখিল গিরি, কাঁথি দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী দিব্যেন্দু অধিকারী, কাঁথি উত্তরে বামফ্রন্ট প্রার্থী চক্রধর মেইকাপ, দিনহাটার বামফ্রন্ট প্রার্থী অক্ষয় ঠাকুর, মেখলিগঞ্জের বামফ্রন্ট প্রার্থী পরেশ অধিকারী, মাথাভাঙার তৃণমূল প্রার্থী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ, দিনহাটার তৃণমূল প্রার্থী উদয়ন গুহ, পাঁশকুড়া পশ্চিমের তৃণমূল প্রার্থী ফিরোজা বিবি, তমলুকের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী নির্বেদ রায়, পটাশপুরের তৃণমূল প্রার্থী জ্যোতির্ময় কর, মহিষাদলের তৃণমূল প্রার্থী সুদর্শন ঘোষদস্তিদায়৷

