BRAKING NEWS

তাওয়ং কাণ্ড : বরখাস্ত জেলাশাসক, পুলিশ সুপার ও ওসি

Arunachal Pradeshতাওয়াং (অরুণাচল প্রদেশ), ০৫ মে, (হি.স.) : নদীবাঁধ-বিরোধী ‘সেফ মন রিজিওন ফেডারেশন’-এর কারারুদ্ধ নেতাকে মুক্তির দাবিতে আন্দোলনকারী জমায়েত জনতার ওপর বিনা প্ররোচনায় গুলিচালনার দায়ে রাজ্যের তিন পদস্থ আধিকারিককে তৎকালীনভাবে সাময়িক বরখাস্ত করেছে অরুণাচল প্রদেশ সরকার। যে তিন আধিকারিককে বরখাস্ত করা হয়েছে তাঁরা তাওয়াঙের জেলাশাসক ডুলি কামাত, পুলিশ সুপার অ্যালটো আনফোনস এবং তাওয়াং থানার ওসি সাব-ইনস্পেক্টর লান জন্ডুক। রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী কামেং দোলো এই তথ্য দিয়ে বলেছেন, প্রাথমিক তদন্ত করে এই অফিসারদের বিরুদ্ধে কর্তব্যে অবহেলার তথ্য-প্রমাণ তাঁর হাতে আসলে এঁদের সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, বরখাস্ত জেলাশাসক ডুলি কামাত এবং পুলিশ সুপার অ্যালটো আনফোনসের স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে যথাক্রমে কাশিস মিত্তাল ও আইজিপি তাওয়া তুষারকে। পরবর্তী স্থায়ী পুলিশ সুপার নিয়োগ না-হওয়া পর্যন্ত আইজিপি তুষার জেলার পুলিশ সুপারের কাজকর্ম দেখভাল করবেন বলেও জানান উপ-মুখ্যমন্ত্রী।

তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার তিনি তাওয়াঙের খোঁজখবর নিতে আসলে জেলাশাসক বা পুলিশ সুপার, কেউই তাঁর সঙ্গে দেখা করেননি। গুলিচালনার সবিশেষ জানতে তিনি তাঁদের দুজনকে বার বার ফোন করেন। কেউ তাঁর ফোন ধরেননি। তাছাড়া বিনা প্ররোচনায় আন্দোলনকারী মিছিলের ওপর গুলির নির্দেশ দিয়েছিলেন পুলিশ সুপার। কেবল এ-ই নয়, নিহতদের বাড়িতে গিয়ে এবং আহতদের সঙ্গে দেখা করতে গেলেও তাঁকে বাধা দিয়েছিলেন তাঁরা।

এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, নদীবাঁধ-বিরোধী ‘সেফ মন রিজিওন ফেডারেশন’-এর সম্পাদক লামা গিয়েৎজ আন্নাকে মুক্তি দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পুলিশের গুলিতে মহিলা-সহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছিল তাওয়াঙে। সোমবারের এ-ঘটনায় একজন বৌদ্ধভিক্ষুও মারা গেছেন।

অসমের প্রতিবেশী অরুণাচল প্রদেশে ইতিমধ্যে ছোট-বড় বেশ কয়েকটি নদীবাঁধের কাজ শুরু করেছে রাজ্য। এরমধ্যে তাওয়াঙে অবস্থিত ‘নিয়ামজংসু’তে ৭৮০ মেগাওয়াট এবং ৩,৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষম নদীবাঁধও রয়েছে। এই নদীবাঁধ নির্মাণের বিরোধিতা করে আন্দোলন শুরু করেছিল ‘সেভ মন রিজিওন ফোরাম’ নামের এক সংগঠন। গত ২৮ এপ্রিল আন্দোলনকারী ফোরামের সম্পাদক লামা গিয়েৎজ আন্নাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সোমবার তাঁর মুক্তির দাবিতে বিশাল মিছিল বের করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন সংগঠনের অসংখ্য সমর্থক-কর্মকর্তা। একসময় পরিস্থিতি বিগড়ে যায়। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশকে প্রথমে লাঠিচার্জ পরে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়তে হয়। এতেও বিক্ষোভ শান্ত হয়নি। মারমুখি আন্দোলনকারীদের ক্ষান্ত করতে পুলিশকে শূন্যে গুলি ছুঁড়তে হয়। এতে জনৈক বৌদ্ধভিক্ষু, এক মহিলা-সহ তিনজনের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ১৮জন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *