অন্যতম প্রবীণ ব্যক্তিত্ব ত্রিপুরা দর্পণ এর প্রাণ পুরুষ সতীশ রায় প্রয়াত

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৯ এপ্রিল৷৷ ত্রিপুরা দর্পণ পত্রিকার সম্পাদক সমীরণ রায়ের পিতা তথা বিশিষ্ট সমাজসেবী সতীশ চন্দ্র রায় প্রয়াত হয়েছেন৷ ৯৭ বছর বয়সে আজ বেলা দেড়টা নাগাদ আগরতলার একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে শেষ নিঃশ্বাস

সতীশ চন্দ্র রায়
সতীশ চন্দ্র রায়

ত্যাগ করেন৷ তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন৷ মৃত্যু সংবাদ পেয়েই দুপুরেই প্রয়াতের বাড়ীতে ছুটে যান মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার, পূর্তমন্ত্রী বাদল চৌধুরী, মেয়র প্রফুল্লজিৎ সিনহা, বিভিন্ন সংবাদপত্রের সম্পাদক ও সাংবাদিকরা ছাড়াও ছুটে যান হাইকোর্টের বিচারপতি উৎপলেন্দু বিকাশ সাহা৷ মুখ্যসচিব যশপাল সিংহও সতীশ রায়ের প্রয়াণে গভীর শোক ব্যক্ত করেছেন৷ প্রয়াত সতীশ চন্দ্র রায় স্ত্রী, চার পুত্র, এক কন্যা সহ বহু আত্মীয় পরিজন গুণমুগ্দদের রেখে গেছেন৷ ত্রিপুরা দর্পণ এর সম্পাদক সমীরণ রায় তাঁর দ্বিতীয় পুত্র৷
১৩২৭ বঙ্গাব্দের ২রা জ্যৈষ্ঠ অধুনা বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলায় শ্রী রায়ের জন্ম হয়৷ পরবর্তী সময় তিনি ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় স্থানান্তরিত হন৷ রাজন্য আমল থেকেই আগরতলার নাগরিক সমাজে সতীশ রায়ের নাম গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে উচ্চারিত হত৷ ত্রিপুরা আঞ্চলিক পরিষদ বা টিটিসি’র আমলে রাজ্য সমাজ কল্যাণ পর্ষদের দীর্ঘ ৭ বছরের সম্পাদক ছিলেন তিনি৷ সমাজকল্যাণ পর্ষদের আওতাধীন মিলন সংঘস্থিত আতুর আশ্রমের সম্পাদক ছিলেন তিনি৷ ত্রিপুরা রাজ্যের প্রবীণতম এই নাগরিকের সমাজের সর্বস্তরে ছিল অবাধ যাতায়াত৷ প্রখ্যাত কমিউনিস্ট নেতা বীরেন দত্ত, রাজ পরিবারের লালু কর্তার মতো স্বনামধন্য লোকেরা ছিলেন সতীশ রায়ের পরম মিত্র৷ দীর্ঘদিন বনমালীপুরস্থিত রামঠাকুর আশ্রমের সম্পাদক ছিলেন শ্রীরায়৷

শুক্রবার আগরতলায় ত্রিপুরা দর্পণ পত্রিকার প্রাণপুরুষ প্রয়াত সতীশ চন্দ্র রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ নিজস্ব ছবি৷
শুক্রবার আগরতলায় ত্রিপুরা দর্পণ পত্রিকার প্রাণপুরুষ প্রয়াত সতীশ চন্দ্র রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ নিজস্ব ছবি৷

এদিকে সতীশ চন্দ্র রায়ের প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ এক শোক বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, প্রয়াত রায় জনদরদি ছিলেন৷ বরাবরই চিন্তা ভাবনায় এবং পরামর্শদানে ছিলেন গঠনমূলক৷ মুখ্যমন্ত্রী তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর আন্তরিক শ্রদ্ধা জানিয়েছেন এবং তাঁর পরিবার পরিজনদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানিয়েছেন৷
এদিকে, সমাজকল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এক শোকবার্তায় বলেছেন আগরতলা শহরের প্রবীণ নাগরিক সতীশ চন্দ্র রায় আমাদের সকলকে ছেড়ে চলে গেছেন৷ তিনি ত্রিপুরা সমাজ কল্যাণ উপদেষ্টা পর্ষদে দীর্ঘ বছর সাফল্যের সঙ্গে সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে গেছেন৷ তাছাড়া পূর্বতন আতুর আশ্রমেরও সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন৷ তাঁর মৃত্যুতে সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী বিজিতা নাথ এবং এই দপ্তরের সকলস্তরের কর্মীরা গভীরভাবে শোকাহত এবং মর্মাহত৷ আমরা তার বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি৷ তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি৷
সতীশ রায়ের মৃত্যুতে আগরতলা প্রেস ক্লাব, ত্রিপুরা ওয়ার্কিং জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন এবং ত্রিপুরা জার্নালিস্ট ইউনিয়নও গভীর শোক ব্যক্ত করেছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *