BRAKING NEWS

জল সংকট খোয়াইতে তীব্র আকার ধারন করতে চললেও দপ্তর নীরব

Water Crisis Khowaiনিজস্ব প্রতিনিধি, খোয়াই, ১৯ এপ্রিল৷৷ খোয়াই জেলায় চলছে পানীয় জলের তীব্র অভাব৷ শুখা মরশুম শুরু হওয়ার আগেই জলের জন্য হাহাকার শুরু হয়ে গেছে৷ রামচন্দ্রঘাট – আশারামবাড়া, খোয়াই বিধানসভা এলাকাজুড়ে জনগন বিশেষ করে গ্রামীন এলাকার জনসাধারন খুব শেবী ভোগান্তির স্বীকার৷ গ্রামীণ এলাকার জনগন জলের অভাবেই শুধুমাত্র নাকাল হচ্ছেন না, পাশাপাশি কৃষকরা কৃষি কাজের জন্য জল পাচ্ছেন না৷ বেশীরভাগ পাম্প মেশিনগুলির দরজা বন্ধ বলে অনেকটা ক্ষোভের সাথেই জানালেন ঐসব এলাকার কৃষকরা৷ তৎসঙ্গে জানালেন পাম্প মেশিনগুলির জন্য বিদ্যুৎ নেই৷ কিছু পাম্প মেশিন অকেজো৷ রয়েচে পাম্প অপারেটরদের খামখেয়ালীও৷ এতসব সমস্যার মধ্যে ব্যহত হচ্ছে কৃষিকাজ৷ জল সংকটের মুখে তীব্র সমস্যায় গ্রামীন এলাকার মানুষ৷ অথচ ডি-ডাব্লিউ -এস দপ্তর সমগ্র খোয়াই জেলায় বড় বড় হোর্ডিংয়ে বিজ্ঞাপনের ব্যবস্থা করেই দায়িত্ব খালাস বলে মনে করছে৷ রাস্তায় রাস্তায় হোর্ডিং বা জনসচেতনতা শিবিরে সরকারী অর্থ ব্যয় হচ্ছে৷ সেজন্যই কি জনগনের সেরা করার দায়ভার নিতে নারাজ সেবকগন? প্রশ্ণ জনগন৷ আমলা নির্ভর সরকার অতি বিপ্লবী কর্মচারীদের দ্বারা কোন কাজ করতে পারছেনা বলে অভিযোগ খোয়াই জেলার জনসাধারনের৷ অথচ সামান্য কিছু কাজ যেমন, মোটর সারাই, সঠিক সময়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা, পাম্প অপারেটরদের দ্বারা সঠিক সময়ে জল দেওয়ার ব্যবস্থা করা ইত্যাদি বিষয়গুলি দেখার মতো কেউ নেই৷
অপরদিকে খোয়াই জেলার বৈধ, অবৈধ রাবার বাগান রয়েছে৷ সেগুলির মধ্যে সরকার অনুমুদিত যেমন রয়েছে অনুমোদনহীন রাবার বাগানও রয়েছে৷ যে কারনে জল স্তর নেমে যাচ্ছে৷ কারন বিজ্ঞান বা বৈজ্ঞানিক তত্ব বলছে, প্রতিটি রাবার গাছ প্রতিদিন ৯০ লিটার ভূগর্ভস্থ জল শুষে নিচ্ছে৷ তাই ভাবতেই অবাক লাগছে ৩৬৫ দিনে এর পরিমান কি গিয়ে দাঁড়াচ্ছে? তবে তথ্য অনুযায়ী ত্রিপুরা রাজ্যে সরকারীভাবে ৭৫ হাজার হেক্টর জমিতে রাবার বাগান রয়েছে৷ সেই সাথে অনুমোদনহীন আরও ৫০ হেক্টর রাবার বাগান রয়েছে৷ এবার রাবার বাগানের বাড়-বাড়ন্তের সাথে রাজ্যে বৃষ্টিপাতের অনুপাত যাচাই করলে বিষয়টি আরও মারাত্মক আকার ধারন করে৷ বছরে ত্রিপুরা রাজ্যে গড় বৃষ্টিপাত প্রায় ১৮৮১ মিলিলিটার৷ এবার ভাবতেই পারা যায়, এভাবে চলতে থাকলে ভারতের অন্যান্য রাজ্যের মতো ত্রিপুরাতেও তীব্র জল সংকট যেকোন সময় দেখা দিতে পারে৷
একদিকে জলস্তর নামছে অন্যদিকে ভূমিকম্প প্রবন এলাকা হিসাবে ত্রিপুরা রাজ্যের ৫নং জোনে থাকা৷ সুতরাং ঘোর বিপদ আসন্ন৷ তাই অচিরেই রাজ্য সরকার এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে এখন থেকেই তা ভাবনা-চিন্তার মধ্যে রাখা উচিত বলেই মনে করছেন শূভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ৷ যদিও খোয়াই জেলার পক্ষে যে তথ্য হাতে এসেছে তা কোনভাবেই সুখপ্রদ নয়৷ খোয়াই জেলায় সরকারী তথ্য অনুযায়ী ৬৪৪টি পাড়ায় জল সংকট রয়েথে৷ কিন্তু জনগন বলছেন নতুন করে সার্ভে করলে এই পরিসংখ্যান বৃদ্ধি পাবে৷ কারন খোয়াই পুর পরিষদ এলাকার মধ্যেই অনেক এলাকায় জল সংকট রয়েছে৷ যেমন মাষ্টার পাড়া, ঘোষ পাড়া, লালছড়া, গনকী, বনকর, দুর্গানগর, সহ বাজার-হাঁটগুলিতে জল সংকট রয়েছে৷ বিশেষ করে সুভাষপার্ক বাজার৷ জলের তীব্র সংকটের মধ্যে ডি-ডাব্লিউ- এস দপ্তর যেমন খুশী কাজ করছে৷ দপ্তরের জ্ঞানী কর্মচারীগন সাজিয়ে গুছিয়ে এমন মিথ্যা অজুহাত তুলে ধরে যা শুনে মৃত মানুষও জেগে উঠবে৷ অথচ জনগন বলছেন সবেই আছে, নেই শুধু সেবার মনোভাব৷ কর্মে ফাঁকি দেওয়াই যেন উনাদের মুল কাজ৷ অথচ অফিসটিলায় প্রতিটি অফিস বা কোয়ার্টারগুলিতে প্রতিদিন জলের ট্যাঙ্ক ভরে জল উপচে পড়তে থাকে ঘন্টার পর ঘন্টা৷ হাজার হাজার লিটার জল বিনষ্ট হচ্ছে৷ অথচ উনারাই শহরে গ্রামে গিয়ে সচেতনতা শিবিরে নানান উপদেশ দিয়ে চলছেন৷ খোয়াই পুর এলাকায় প্রায় ১৩৮টি মটর জলের পাইপে লাগানো আছে৷ যা অবৈধ৷ জল ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মোটর দিয়ে প্রথম, দ্বিতীয় এমনকি তৃতীয় তালায় জল তুলা হচ্ছে৷ সাথে রয়েছে শখের ফুল বাগানটি৷ বাবুয়ানা খেতেও এভাবেই জল দেওয়া হচ্ছে৷ যার ফলে পাইপ লাইনে জল টিমটিম করে গড়িয়ে পড়ছে৷ এবিষয়ে দপ্তরকে জানিয়েও কোন লাভ হচ্ছেনা৷ জনগন বলছেন, তবে কি মোটর চালিয়ে যারা জল তুলেন তাদের সাথে গোপন লেনদেন, বোঝাপড়া কিংবা যোগ-সংযোগ রয়েছে দপ্তরের৷ নয়তো কেন অবৈধ মোটরগুলি খোলা হচ্ছেনা? বিদ্যুৎ থাকলেও কেন পুর এলাকার জনগনই জল সংকট ভোগবেন? গোটা বিষয়ে, তীব্র জল সংকটের মুখে থাকা সমস্ত অংশের মানুষের স্বার্থে রাজ্য সরকার কি পদক্ষেপ গ্রহন করেন এখন তাই দেখার৷ অন্তত জনগন সেদিকেই তাকিয়ে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *