জল সংকটে ত্রিপুরা

জল সংকটের কবলে পড়িবে গোটা বিশ্ব৷ এই ভয়াল সংকট হইতে কি সহসা মুক্তি মিলিবে৷ ইতিমধ্যে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মারাত্মক জল সংকট দেখা দিয়াছে৷ মহারাষ্ট্রের লাতুরে রেলের মাধ্যমে জল পৌঁছানো হইতেছে৷ দিনে দিনে গোটা বিশ্বই গরম হইতেছে৷ তাপ প্রবাহ বাড়িয়া চলিতেছে৷ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে প্রচন্ড তাপে মৃত্যু শতাধিক ছাড়াইয়াছে৷ প্রতি বছর তাপ প্রবাহে মৃত্যুর ঘটনা থাকিলেও এই বছর পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ৷ পৃথিবীর তিন ভাগ জল থাকা সত্বেও tripura_state_map_districtsজল সংকট বাড়িয়া চলিয়াছে৷ মিষ্টি জলের অভাবই তীব্র হইতেছে৷ সংবাদে প্রকাশ পাইয়াছে যে, ত্রিপুরায় জল সংকটের জন্য সবচাইতে বেশী দায়ী রাবার চাষ৷ একটি সমীক্ষাতে জানা গিয়াছে যে, রবার গাছ বিপুল পরিমানের ভূগর্ভস্থ জল টানিয়া নিতেছে৷ ত্রিপুরায় মাটির নীচের জলস্তর দেড় মিটার নীচে চলিয়া গিয়াছে৷ রাবার গাছ বিপুল পরিমান জল টানিয়া নেওয়ার কারণে আগামী দিনে রাজ্য ভয়াল জল সংকটের সামনে হাবুডুবু খাইবে সন্দেহ নাই৷
সোজা কথায়, রাবার চাষ ত্রিপুরার জলবায়ু ও আবহাওয়াকে মারাত্মক ভাবে দুষিত করিয়াছে৷ পরিবেশের উপর যে ক্ষতি আনিয়া দিয়াছে তাহা কোনও মতেই পূরণ হইবার নহে৷ অনেকেই প্রশ্ণ তুলিতে পারেন কেরালাতে তো বিস্তর রাবার গাছ হইতেছে, সেখানে এমন জল সংকটের আওয়াজ নাই কেন? এই প্রশ্ণের উত্তরে বলা হইয়াছে সেখানে জল সংকটের তেমন পরিস্থিতি এখনও দেখা যায় নাই৷ এর জন্য বিশেষজ্ঞদের মতে কেরালায় বৃষ্টিপাত ত্রিপুরার তুলনায় অনেক বেশী৷ ২০১৫ সালের শেষ রিপোর্ট মোতাবেক কেরালার গড় বৃষ্টিপাত ৩০৫৫ মিলিমিটার৷ তাহার তুলনায় ত্রিপুরার গড় বৃষ্টিপাত মাত্র ১৮৮১ মিলিমিটার৷ সুতরাং ইহা মানিয়া নিতেই হইবে যে, ত্রিপুরার ভূগর্ভস্ত জল নীচে নামিতেছে৷ রাবার গাছের কল্যাণে পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়িতেছে৷ রাবার গাছের কল্যাণে ত্রিপুরার আবহাওয়ার যদি  পরিবর্তন হয়, জল সংকটের সৃষ্টি করে তাহা হইলে কাল বিলম্ব না  করিয়া রাবার চাষ বা রাবার বাগান বন্ধ করিয়া দেওয়া যায় কিনা তাহাই গুরুতর প্রশ্ণ৷
এক সময় ত্রিপুরায় রাবার চাষের বিরুদ্ধে আন্দোলন হইত৷ সেই ষাটের দশকে বিদ্যুতিক চ্যানেল ছিল না৷ সেই সময় রাবার বাগান পোড়াইয়া দেওয়া হইত৷ কিন্তু পরবর্তী সময়ে কমিউনিস্টরা সেই রাবার বাগান রক্ষার জন্য বড় ভূমিকা নেন৷ সময় খুব সংকীর্ণ৷ মানব সভ্যতাকে বাঁচাইতে হইলে রাবার গাছ লাগানোর বিরুদ্ধে জন সচেতনতা সৃষ্টি করিতে হইবে৷ মানব সভ্যতা বাঁচাইতে এক সময় রাবার চাষে তাগদা ছিল৷ এখন আবার সেই জন জোয়ার৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *