BRAKING NEWS

বঙ্গে বামেদের সঙ্গে জোট নিয়ে কংগ্রেস দ্বিধাবিভক্ত

CONGWESTBANGALCPIMনয়াদিল্লি, ১ ফেব্রুয়ারি৷৷ বঙ্গে বামেদের সাথে জোটের প্রশ্ণে কার্য্যত দ্বিধাবিভক্ত কংগ্রেস৷ একদিকে যেখানে অধীর চৌধুরী ও প্রদীপ দাশগুপ্তরা বামেদের সাথে জোটের পক্ষে সওয়াল করেছেন৷ অন্যদিকে, দীপা দাশমুন্সি, সৌমেন মিত্র ও অভিজিৎ ভট্টাচার্যরা দ্বিমত পোষণ করেছেন৷ তাদের বক্তব্য পশ্চিমবঙ্গে বামেদের সাথে জোট হলেও বাম সমর্থিত ভোট কংগ্রেসের ঝুলিতে আসবে না৷ তবে, অধীর চৌধুরীদের মতে পশ্চিমবঙ্গে দলের যা অবস্থা তাতে বামেদের সাথে জোট না হলে দল সাইনবোর্ডে পরিণত হবে৷ রাহুল গান্ধী অবশ্য বঙ্গের কংগ্রেস নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে তৃণমূল কংগ্রেসের সাথে জোট গঠন ভুল সিদ্ধান্ত ছিল বলে স্বীকার করেছেন৷ পাশাপাশি বামেদের সাথে জোটের বিষয়টি সোনিয়া গান্ধীর সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন৷ বৈঠকে একদিকে অধীর চৌধুরীরা বামেদের সাথে জোটের পক্ষে অনঢ় থাকলেও দীপা দাশমুন্সিরা একলা চলো নীতির পক্ষেই জোর সওয়াল করেছেন৷
এদিন, বৈঠক হয়েছে ঠিকই৷ তবে, বামেদের সঙ্গে জোট নিয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হল না৷ বিষয়টি এখনও কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর উপরই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷ তবে, তৃণমূলের সঙ্গে কোনও জোট হচ্ছে না তা স্পষ্ট করেছে হাইকম্যান্ড৷ আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের সঙ্গে জোট কররা দাবিতে সোমবার রাহুল গান্ধীর বাড়িতে গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের ১২ জন নেতা৷ প্রায় দেড় ঘন্টা বৈঠক করেন তাঁরা৷ বৈঠকে রাহুল গান্ধীর সামনে বামেদের সঙ্গে জোটের ফায়দাগুলিকে তুলে ধরা হয়৷ অন্যদিকে, তৃণমূলের সঙ্গে যে কোনওভাবেই জোট করা যাবে না তা প্রদেশ নেতৃত্ব জানিয়েছেন কংগ্রেস সহ-সভাপতিকে৷ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অধীর চৌধুরী জানান, রাহুল গান্ধীর তাঁদের কথা গুরুত্ব দিয়ে শুনেছেন৷ বিষয়টি সোনিয়াকে জাানাবেন বলে আশ্বস্তও করেছেন৷ পুরো বিষয় বিবেচনা করে খুব শীঘ্রই কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আশাবাদী প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব৷
এদিকে, এদিনের বৈঠকে প্রদেশ কংগ্রেসের কেউ কেউ আবার একলা চলো নীতির পক্ষেও সওয়াল করেছেন বলে জানা গিয়েছে৷ তাঁদের যুক্তি, এখন জোট হলেও ভবিষ্যতে ক্ষতির মুখে পড়তে পারে কংগ্রেস৷ জোটের পক্ষে যারা রয়েছেন- অধীর চৌধুরী, প্রদীপ ভট্টাচার্য্য, আবু হাসেম খান চৌধুরী, ওমপ্রকাশ মিশ্র, মৈনুল হক,এবং আব্দুল মান্নান৷ জোটের বিপক্ষে হলেন দীপা দাশমুন্সি, মানস ভঁুইয়া এবং অভিজিৎ মুখার্জী৷
এদিকে, বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের আঁতাত নিয়ে শুধু বঙ্গেই নয় বামশাসিত ত্রিপুরাতেও রাজনৈতিক মহলে জোর আলোচনা চলছে৷ ত্রিপুরায় বামফ্রন্ট ক্ষমতায় রয়েছে৷ বামফ্রন্টের প্রধান বিরোধী হচ্ছে কংগ্রেস৷ ত্রিপুরায় কংগ্রেস নেতারা পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছেন সিপিএমের সাথে কোনওভাবেই যাতে কংগ্রেসের জোট না হয়৷ এই প্রসঙ্গে সম্প্রতি ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিনহা সহ দলের অন্যান্য নেতারা হাইকমান্ডকে জানিয়ে দিয়েছে৷ এখন দেখার বিষয় হচ্ছে হাইকমান্ড বামেদের সাথে জোটে যায় কিনা৷
অন্যদিকে, সম্প্রতি কলকাতায় অনুষ্ঠিত সিপিএমর প্লেনামে কংগ্রেসের সাথে জোটের ইঙ্গিত দিয়েছেন দলটির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি৷ সেই প্লেনামের পরই কংগ্রেস-সিপিএমে জোট নিয়ে শুরু হয় জোর আলোচনা৷ দেশে সিপিএমের ভরাডুবি হচ্ছে একের পর এক নির্বাচনে৷ এই পরিস্থিতিতে সিপিএমকে তথা বামেদের ঘুরে দাঁড়ানোর একমাত্র অবলম্বন হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ৷ বঙ্গে হারানো জমি ফিরে পাওয়ার জন্য সিপিএম কংগ্রেসের সাথে জোটে যাওয়ার জন্য সবুজ সঙ্কেত দিয়ে দিয়েছে ইতিমধ্যেই৷ তবে কংগ্রেসের তরফ থেকে জোটের ব্যাপারে কোন পাক্কা সিদ্ধান্ত জানানো হয়৷ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্যই রাহুল গান্ধীর সঙ্গে সোমবার দিল্লীতে বৈঠকে বসেছেন বঙ্গের কংগ্রেস নেতারা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *