নিজস্ব প্রতিনিধি, চুড়াইবাড়ি, ১০ জানুয়ারি৷৷ দুর্নীতির অখড়ায় পরিণত পেঁচারথল ব্লক৷ একদিকে পেঁচারথল এলাকার গরিব মেহনতি মানুষ আর অন্যদিকে পেঁচারথল ব্লক আধিকারিক মহাশয়ের ভারী পকেট৷ পেঁচারথল এলাকার জাতি উপজাতি অংশের গরিব মেহনতি মানুষের নামে বেনামে টাকা আত্মসাৎ করছে পেঁচারথল ব্লক আধিকারিক থেকে শুরু করে শাসক দলের নেতারা৷ এক কথায় অর্থ লুটপাটের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্লক হচ্ছে পেঁচারথল আর ডি ব্লক৷ ঊনকোটি জেলার পেঁচারথল এর প্রত্যন্ত উপজাতি এলাকায় উন্নয়নের নামে সরকারি অর্থের হরির লুট চলছে৷ আর হরির লুটের প্রসাদ থেকে যেন পেঁচারথলের সিঁকি আদুলি নেতারাও বাদ যান না৷ এভাবেই চলছে অর্থের নয়ছয়৷
গত বছরের শেষের দিকে পেঁচারথল ব্লকে অধীনে বিভিন্ন এডিসি ভিলেজ গ্রামোন্নয়ন দপ্তরে অর্থের ঘোটালার সীমা নাই৷ উত্তর ধনিছড়া এডিসি ভিলেজের দুই নং ওয়ার্ডের ব্রহ্মদত্ত চাকমার নামে রিংওয়েল রিপিয়ারিং এর নামে ৮ হাজার ৫০০ টাকা পুরো আত্মসাৎ হয়েছে৷ গত বছরের ৩১ অক্টোবর এর কাইল নং এফ১২(১৩)/বিডিও/পিএলটি/টিএফসি (ডিআরসি /২০১৪-১৫৷
একইভাবে ভিলেজের একই ওয়ার্ডের বাসিন্দা মরত চাকমা পিতা রাজেন্দ্র চাকমার পুকুর খননের নামে চার তৃতীয়াংশ টাকার আত্মসাৎ ঘটিয়েছে৷ ভিলেজ কর্তৃপক্ষ ফাইলনং এফ-১৭(১৩)পিএলটি /এমজিএনরেগা/ ২০১৪-১৫, ১০৯২৪-৩৪ উনার ওয়ার্ক অর্ডারে মোট ৮৫ হাজার ৫৪৫ টাকা আসে আধকানি পুকুর নির্মাণের জন্য৷ কিন্তু সুবিধাভোগীকে শীতঘুমে রেখে কর্তৃপক্ষ মাত্র ২০ হাজার টাকা ব্যয় করে৷ ধানের জমিতে একটি ছোট গর্ত তৈরি করে দিয়ে বাকি অধিকাংশ টাকাই উদয়পূর্তি করে নেন৷ আবার একই ভিলেজেরল শাসক সিপিএম এর ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের অধিচন্দ্র ত্রিপুরা পিতা মৃত বিষ্ণু কুমার চাকমার নামে ভিলেজের টিএফসি ফান্ডের থেকে প্রায় ৪ হাজার টাকা আসে পুরানো রিংওয়েল রিপিয়ারিং এর নামে৷ কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে শাসকদলীয় ঐ ব্রাঞ্চ ম্যানেজার সে নিজেও জানে না যে ওর নামে সরকারি অর্থ আসছে৷ অর্থাৎ সেক্ষেত্রে আবারো প্রমাণিত হল যে বাঘের উপরে টাগও বিদ্যমান৷ আবার ঐ ক্ষুদ্র নেতা কেন্দ্রীয় প্রকল্পে ইন্দিরা আবাস যোজনায় তিন তিনবার ঘরও হাতিয়ে নিয়েছেন৷
একইভাবে ভিলেজের বিজিনধন চাকমা পিতা, রাজেন্দ্র চাকমার নামে আধকানি পুকুর নির্মাণের নামে ৮১ হাজার ৩৬০ টাকা আসলেও শাসক দলের চুনোপঁুটি নেতার দাপটে মাত্র প্রায় ২০ হাজার টাকার মত কাজ করে অধিকাংশ টাকাই নিজেদের পকেটে রাখতে সমর্থ হয়েছে৷ যার ওয়াকর্ডার নম্বর এফ নং ১৭(১৩)/পিও/পিএলটি / এনজিএনরেগা তারিখ- ১১/১২/১৫৷ তার থেকেও সবচেয়ে বড় আলোচ্য বিষয় হল শাসক দল সিপিএমের নেতারা যে মৃত ব্যক্তির নামে টাকা ধার্য্য করে সে টাকায় নিজেদের পরিবার পরিচালনা করে এসেছেন৷ একজন মৃত ব্যক্তির নামে সরকারি অর্থ মঞ্জুর করে সে অর্থ নিজেদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করা হয়ত সাধারণ মানুষ জানেনা৷
উত্তর ধনিছড়া ভিলেজের শাসকদলের সাফকুমার ডার্লং পিতা জিসমা ডার্লং এর নামে ১৭(১৩) /পিও / পিটিএল/ এমজিএন রেগা /২০১৪/১৫/৪৪ ২৮/৩৮ ওয়ার্ক অর্ডারে মোট ৮০ হাজার ৮৯৫ টাকার পুকুর তৈরির কাজ আসে৷ কিন্তু সাফকুমার নামের ঐ বেনিফিসিয়ারি অনেক পূর্বেই মারা যান৷ কিন্তু পেঁচারথলের শাসক দলের নেতারা যে নিজেদের ইচ্ছে মত সরকারি অর্থের আদ্ধশ্রাদ্ধ ঘটাতে পারেন তারই জ্বলন্ত প্রমাণ হিসাবে ব্লকের আধিকারিকের সঙ্গে হরিহর আত্মার সম্পর্ক রেখে তারই জ্বলন্ত প্রমাণ দিলেন৷ একজন মৃত ব্যক্তির নামে লক্ষ লক্ষ টাকা ধার্য করে কিভাবে সমস্ত সরকারি অর্থ নিজেরা আত্মসাৎ করেন তাই এখন পেঁচারথলবাসীদের লক্ষ টাকার প্রশ্ণ? অর্থাৎ তা থেকে এটাই প্রমাণ যে রাজ্যের অন্যান্য ব্লকগুলোকে ছাপিয়ে পেঁচারথল ব্লক এখন অর্থ নয়ছয়ে হাজারগুণ এগিয়ে রয়েছে৷
2016-01-11