আগরতলা, ২৫ মার্চ (হি. স.) : বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বহিঃরাজ্যে ভ্রমণ এড়ানোর পরামর্শ দিলেন কোভিড সংক্রান্ত টেকনিক্যাল এডভাজরি কমিটির সদস্য-রা৷ কারণ, সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত-দের অধিকাংশের ভ্রমণ ইতিহাস রয়েছে৷ বিশেষ করে উত্তর প্রদেশ-এ কুম্ভ ফেরত প্রায় সকলের দেহে করোনা-র সংক্রমণ মিলেছে৷ আজ সাংবাদিক সম্মেলনে এ-কথা জানিয়েছেন কমিটির সদস্য ডা: তপন মজুমদার৷
আজ সাংবাদিক সম্মেলনের শুরু-তে কমিটির চেয়ারম্যান ডা: সুব্রত বৈদ্য বলেন, আমাদের দেশে কোভিড-র সংক্রমণ অনেকটাই কমেছিল৷ কিন্ত, গত কিছুদিন ধরে পুনরায় করোনা-র প্রকোপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ তেমনি, ত্রিপুরায় গত ফেব্রুয়ারি-তে করোনা-র একটি মামলা-ও সামনে আসেনি৷ কিন্ত, এখন ৪০ জন করোনা আক্রান্ত রয়েছেন রাজ্যে৷ তিনি বলেন, গত বছর করোনা মোকাবিলায় কোন প্রতিরোধক ব্যবস্থা ছিল না৷ কিন্ত, এখন আমাদের কাছে টিকা রয়েছে৷ টিকা-র মাধ্যমে করোনা ঠেকানো অনেকটাই সম্ভব বলে দাবি করেন তিনি৷
এদিন মাইক্রো বায়োলজিস্ট ডা: তপন মজুমদার বলেন, করোনা-র সংক্রমণ কমার সাথে সাথেই ভ্রমণ-র প্রবণতা বেড়েছে৷ ফলে, এখন ভ্রমণ-এ যাওয়ার সময় করোনা সংক্রমিত না থাকলেও ফিরে আসার পর অনেকের দেহে করোনা-র সংক্রমণ পাওয়া যাচ্ছে৷ তাই তাঁর পরামর্শ, বহিঃরাজ্য থেকে ভ্রমণ করে ত্রিপুরায় কোভিড টেস্ট করুন৷ তাতে, সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা কম হবে৷ তিনি বলেন, সম্প্রতি কুম্ভ ফেরত অনেকের দেহে করোনা-র সংক্রামন পাওয়া গিয়েছে৷ তাতে স্পষ্ট, ভ্রমণ-এ গিয়ে তারা সংক্রমিত হয়ে ফিরেছেন৷
অতীতের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করে তিনি বলেন, গত বছর যখন সারা বিশ্বে করোনা তাণ্ডব চালাচ্ছিল তখন আমাদের সংক্রমণ-র হার কম ছিল৷ তেমনি, যখন দেশের অন্যান্য প্রান্তে করোনা মারাত্মক রূপ নিয়েছিল তখন ত্রিপুরায় সংক্রমণ কম ছিল৷ কিন্ত, পরবর্তী সময়ে ত্রিপুরা-তেও করোনা-র প্রকোপ মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল৷ তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, করোনা-র দ্বিতীয় ঢেউ ত্রিপুরায় আছড়ে পড়লে আগামী দুই মাস-এ সংক্রামিতের হার হু হু করে বাড়বে৷ তাই, করোনা-র পরীক্ষায় জোর দিতে হবে৷ তাঁর কথায়, সম্প্রতি অনেকের মধ্যে করোনা-র নমুনা পরীক্ষায় অনীহা লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ শুধু তাই নয়, কোভিড থেকে বাচার জন্য মাস্ক পরিধান, সামাজিক দুরুত্ব বজায় এবং হাত ধোয়ার অভ্যাস অনেকেই ছেড়ে দিয়েছেন৷ এই অসাবধানতা আগামী দিনে বড় বিপদ ডেকে আনবে, উদ্বেগের সুরে বলেন তিনি৷
তাঁর উপদেশ, করোনা-র টিকাকরণ-এ স্বতঃস্ফুর্তভাবে সকলের এগিয়ে আসা উচিত৷ তাতে, করোনা সংক্রমিত এড়ানো না গেলেও সংক্রমণের মাত্রা মারাত্মক হবে না, দৃঢ়তার সাথে বলেন তিনি৷ সাথে তিনি যোগ করেন, টিকা নেওয়ার পর মাস্ক পরিধান, সামাজিক দুরুত্ব বজায় এবং হাত ধোয়ার অভ্যাস শুরু করা হলে করোনা-র ভয়াবহতা থেকে অনেকটাই নিস্তার মিলবে৷ ত্রিপুরাবাসী-র কাছে তিনি আবেদন করেন, বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ভ্রমণ এড়ানোর চেষ্টা করুন৷ অগত্য বহিঃরাজ্যে যেতে হলে ফিরে এসে করোনা-র নমুনা পরীক্ষা করুন৷ একই কথা বলেন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা: সঞ্জীব দেববর্মা-ও৷ তাঁর আবেদন, অপ্রয়োজনে ভ্রমণ আপাতত বাদ দিন৷ নিজেকে সুরক্ষিত রাখুন, সাথে করোনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করুন৷