নয়াদিল্লি, ২০ সেপ্টেম্বর (হি.স.): বিরোধীদের আপত্তি উপেক্ষা করে রাজ্যসভায় পাশ কৃষি বিল । রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিংয়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনল বিরোধী দলগুলি। রবিবার তুমুল হাঙ্গামার মধ্যে ধ্বনি ভোটে এই বিল পাশ হয়ে যায় কৃষি বিল। আর এই বিল পাশ হয়ে যাওয়ার পরে রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিংয়ের বিরুদ্ধে একযোগে অনাস্থা প্রস্তাব আনল ১২টি বিরোধী রাজনৈতিক দল। তাঁর বিরুদ্ধে দেশের সংসদীয় গণতান্ত্রিক রীতির ক্ষতি করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিরোধীদের ক্ষোভের মূলে কৃষি বিলের উপরে বিতর্কের উপরে কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমরের জবাবি ভাষণের সময় ঘিরে। সভার এদিনের মতো অধিবেশনের সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় সোমবার পর্যন্ত কৃষিমন্ত্রীর জবাবি ভাষণ পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছিল বিরোধীরা। কিন্তু তা খারিজ করে দেন তখন সভা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ডেপুটি চেয়ারম্যান। এটি ‘নিয়মবিরুদ্ধ’ দাবি করে তাঁকে রুল বুক দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন। তার পরেও নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন ডেপুটি চেয়ারম্যান। এতেই রুষ্ট বিরোধী শিবির।
কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ আহমেদ প্যাটেল বলেন, ‘ওঁনার (রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান) গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য রক্ষা করা উচিত। কিন্তু তার পরিবর্তে আজ ওঁনার যে হাবভাব ছিল, তাতে গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য ও প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই তাঁর বিরুদ্ধে আমরা অনাস্থা প্রস্তাব আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
প্রসঙ্গত, রবিবার দু’টি কৃষি বিল নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্যসভা। বিল দুটি সংসদের সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি তোলেন বিরোধীরা। সেই হই-হট্টগোলের মধ্যেই করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যসভার অধিবেশনের নির্ধারিত সময় তথা দুপুর একটা পেরিয়ে যায়। আগামীকাল (সোমবার) পর্যন্ত কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমরের জবাব স্থগিত রাখার আর্জি জানান বিরোধীরা। কিন্তু সেই আর্জি খারিজ করে দেন হরিবংশ। যিনি সেই সময়ে রাজ্যসভার সভাপতিত্ব করছিলেন। তারইমধ্যে বিলদুটি সংসদের সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর যে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছিল, তা গৃহীত না হওয়ায় বিরোধীরা সংসদের উচ্চকক্ষে রীতিমতো হাঙ্গামা শুরু করেন।
‘নিয়মবিরুদ্ধ’ কাজের অভিযোগ তুলে ওয়েলে হট্টগোল করতে থাকেন বিরোধীরা। রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যানকে রুল বুক দেখানোর চেষ্টা করেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। পরে তিনি টুইটারেও সরব হন । টুইটারে তিনি মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সংসদীয় ব্যবস্থা এবং গণতন্ত্রকে হত্যার অভিযোগ এনেছেন । নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার করা একটি ভিডিয়োতে তিনি বলেছেন, ‘সরকার আমাদের কৃষক বিলের বিরোধিতা করার সুযোগ দেয়নি। রাজ্যসভায় এই বিল পাশ করানোর মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা যে তাদের নেই তা সরকার ভালো করেই জানাত। আমাদের বিক্ষোভ যাতে দেশবাসী দেখতে না পায় তাই রাজ্যসভারটিভি-র সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।’