
কলকাতা, ২৯ জুলাই (হি.স): বিজেপি নেতা মুকুল রায়কে নোটিশ পাঠাল কলকাতা পুলিশ। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৬০ ধারায় নোটিশ পাঠানো হয়েছে মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে ৷ আগামীকাল অর্থাৎ ৩০শে জুলাই দিল্লিতে মুকুল রায়কে জিজ্ঞাসাবাদের সম্ভাবনা রয়েছে ৷ ইতিমধ্যেই এই নোটিশের বিরোধিতা করে দিল্লি হাইকোর্টের একটি আবেদন করেছেন বিজেপি নেতা ৷ তাঁর দাবি যে মামলায় আগেই শাস্তি হয়ে গেছে, সেই মামলায় নতুন করে কী করে নোটিশ পাঠানো যেতে পারে ৷
বড়বাজারের একটি দুর্নীতি মামলায় আগামী ৩০ জুলাই মুকুল রায় ডেকে পাঠানো হয়েছে। দিল্লিতে গিয়েই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় কলকাতা পুলিশ । প্রতারণা ও দুর্নীতির অভিযোগে ওই মামলায় একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে মুকুল রায়ের নামও উঠে আসে । সে কারণেই প্রাক্তন এই তৃণমূল নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান তদন্তকারীরা । অন্যদিকে, বড়বাজারের আরও একটি জামিনযোগ্য মামলায় আদালতে উপস্থিত না হওয়ায়, মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে ব্যাঙ্কশাল আদালতে ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হয়েছে।
পুলিশের নোটিশ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা মুকুল রায় বলেন, ‘আমাকে সাক্ষী হিসেবে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল । ওদের চিঠি দিয়ে বলেছিলাম, আমি তো দিল্লিতে থাকি । দিল্লিতে আসো । এদিকে, এর আগে ব্যাঙ্কশাল আদালতে আমার নামে মামলা করে । দুটো জিনিস কীভাবে হয় । আমি দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছি’। মুকুল রায় বলেন, ‘মমতা কতটা প্রতিহিংসাপরায়ণ, সেটাই বোঝা যাচ্ছে । আরও অনেক নোটিশ আসতে পারে’।
তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একাধিকবার সরব হয়েছেন মুকুল রায় । লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির সাফল্যের নেপথ্যে একদা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ এই নেতার হাত রয়েছে বলে মনে করেন ওয়াকিবহাল মহল । মুকুল রায়ের কৌশলেই লোকসভা ভোটের পর কার্যত ভাঙন শুরু হয়ে গিয়েছিল তৃণমূলে । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের একাধিক নেতা কর্মীরা বিজেপিতে যোগ দেন । এরআগে, ষষ্ঠ দফার ভোটের দিন কলকাতায় মুকুল রায়ের গাড়িতে চলে দফায় দফায় তল্লাশি । আর এই ঘটনায় রীতিমত বিব্রত হয়ে পড়েন মুকুল রায় । তাঁকে হেনস্থা করার জন্যই এইভাবে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি ।
ভোটের দিন সকালে প্রথম কলকাতা বিমানবন্দরে তাঁর গাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ । এরপর কৈখালির কাছে যখন তাঁর গাড়ি পার হচ্ছিল, তখন ফের একবার তল্লাশি হয় । মুকুল রায় সংবাদমাধ্যমের সামনে অভিযোগ করেন যে ওই এলাকা দিয়েই রাজ্যের এক মন্ত্রীর গাড়িও গিয়েছে, কিন্তু সেই গাড়িতে কোনও তল্লাশি হয়নি । যদিও কোন মন্ত্রীর গাড়ি যাচ্ছিল, তা উল্লেখ করেননি মুকুল রায় । এই মুহুর্তে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির এই প্রেক্ষাপটে মুকুল রায়কে পুলিশি নোটিশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

