নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৮ মে৷৷ গণধোলাইয়ের হাত নেশাকারবারিদের রক্ষা করে নিজেদের হেফাজতে নিতে গিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে পুলিশের খন্ডযুদ্ধ বেঁধেছে খোয়াই জেলার কল্যাণপুরে৷ এতে ক্রুদ্ধ গ্রামবাসীর আক্রমণে কল্যাণপুর থানার ওসি-সহ তিন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন৷ তাঁদের মধ্যে ওসি সন্তোষ শীলের আঘাত গুরুতর বলে জানা গেছে৷

কল্যাণপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, বিনয় চৌমুহনি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে নেশা সামগ্রীর কারবার চলছিল৷ নেশার কবলে পড়ে স্থানীয় যুবকরা বিপথে চালিত হচ্ছে৷ ওই এলাকার বাসিন্দা অমরেশ দেববর্মার নিজ বাড়িতেই নেশা সামগ্রী বিক্রি করতেন৷ পুলিশের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে নেশার কারবারে গ্রামবাসীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন৷ তাঁরা অমরেশ দেববর্মাকে হাতেনাতে পাকড়াও করার সুযোগ খুঁজছিলেন৷পুলিশের কথায়, আজ দুপুরে নেশা সামগ্রী বিক্রি করার সময় গ্রামবাসী অমরেশ দেববর্মার বাড়িতে চড়াও হন৷ ওই সময় বিনয় দেববর্মা নামের এক যুবক তার কাছ থেকে নেশা সামগ্রী কিনছিল৷ পুলিশ জানিয়েছে, অমরেশ এবং বিনয়ের সাথে প্রথমে গ্রামবাসীর বাকবিতণ্ডা শুরু হয়৷ কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই গ্রামবাসী উত্তেজিত হয়ে অমরেশ দেববর্মাকে মারধর শুরু করেন৷
বিনয় চৌমুহনিতে গণ্ডগোল হচ্ছে খবর পেয়ে কল্যাণপুর থানার পুলিশ ছুটে যায় এবং উত্তেজিত গ্রামবাসীর হাত থেকে অমরেশ দেববর্মাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে৷ এতে গ্রামবাসীরা পুলিশের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে ইট, পাটকেল ছুঁড়তে শুরু করেন৷ পুলিশ জানিয়েছে, গ্রামবাসীরা লাঠি নিয়েও পুলিশের উপর আক্রমণ করেছে৷ পরিস্থিতি বেগতিক দেখে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানোর জন্য বার্তা পাঠানো হয়৷
খবর পেয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলায় অতিরিক্ত বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছলে অবস্থার উন্নতি হয়৷ পুরো এলাকা পুলিশ টিএসআর বাহিনী দিয়ে মোড়ে দেওয়া হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে৷ পুলিশ অমরেশ দেববর্মা এবং বিনয় দেববর্মাকে গ্রেফতার করেছে৷ এনডিপিএস ধারায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে৷
এদিকে, গ্রামবাসীদের আক্রমণে কল্যাণপুর থানার ওসি সন্তোষ শীল-সহ তিন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন৷ আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে৷ কল্যাণপুর থানার ওসি সন্তোষ শীলের আঘাত গুরুতর বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন৷ অন্যদিকে, প্রসেনজিত নামে আরও এক যুবক মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে৷ তার অবস্থা সংকটজনক হওয়ায়ে তাকে কল্যাণপুর থেকে আগরতলায় জি বি হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে৷ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার অবস্থা বিপদমুক্ত নয়৷
এদিনের ঘটনায় পুলিশ স্বতপ্রণোদিত একটি মামলা নিয়েছে৷ মামলায় হাতে নিয়েই পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে৷ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ হচ্ছে কর্তব্যরত অবস্থায় পুলিশ কর্মীদের উপর হামলার৷ এদিকে, এই ঘটনার পর গোটা এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে৷ বিশাল সংখ্যায় পুলিশ ও টিএসআর টহল দিচ্ছে৷ পুলিশের পদস্থ আধিকারীকরা ঘটনার দিকে নজর রেখে চলেছেন বলে সংবাদ সূত্রে জানা গিয়েছে৷ জানা গিয়েছে, আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হবে খুব শীঘ্রই৷

