পশ্চিম আসনে পুনঃভোটের দাবীতে রাজ্যজুড়ে মিছিল ও সভা সিপিএমের

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৯ এপ্রিল৷৷ ত্রিপুরা পশ্চিম আসনে পুনর্ভোটের পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য শাসকদল বিজেপিকে দায়ী করল বামফ্রন্ট৷ শুধু তাই নয়, নির্বাচন কমিশনকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন বাম নেতৃত্ব৷ আজ আগরতলায় পুনর্ভোটের দাবিতে মিছিল শেষে প্যারাডাইস চৌমুহনিতে আয়োজিত পথসভায় ত্রিপুরা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক বিজন ধর শাসকদল বিজেপি এবং নির্বাচন কমিশনকে বিঁধে শক্তি সঞ্চয়ে লড়াই জারি রাখার আহ্বান করেছেন৷


সোমবার আগরতলা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন মহকুমায় পশ্চিম আসনে পুনর্ভোটের দাবিতে বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে মিছিল ও সভা সংগঠিত হয়েছে৷ আগরতলায় বামফ্রন্টের মিছিলে পা মিলিয়েছেন বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য মানিক সরকার-সহ সিপিএমের একাধিক শীর্ষ নেতৃত্ব৷ আজ মেলারমাঠে অবস্থিত সিপিএম পার্টি অফিসের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়ে বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে প্যারাডাইস চৌমুহনি গিয়ে সমাপ্ত হয়৷ সেখানেই একটি পথসভার আয়োজন করা হয়েছিল৷ পথসভায় বক্তব্য পেশ করেন ত্রিপুরা পশ্চিম আসনে বামফ্রন্ট প্রার্থী শঙ্করপ্রসাদ দত্ত এবং বামফ্রন্টের আহ্বায়ক বিজন ধর৷
এদিন শঙ্করপ্রসাদ দত্ত তাঁর ভাষণে দাবি করেন, ত্রিপুরা পশ্চিম আসনে কয়েকটি বুথ বাদ দিলে সমস্ত বুথেই রিগিং হয়েছে৷ তাঁর কথায়, প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে ৪৬৪টি বুথে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ নির্বাচন কমিশনে জানানো হয়েছিল৷ কিন্তু পরবর্তীতে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৪৬-এ৷ তাঁর অভিযোগ, ত্রিপুরায় গণতন্ত্র নিধনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে৷ তবে, এই প্রক্রিয়া নতুন নয়, ২০১৪ সাল থেকেই বিভিন্ন গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান একের পর এক আক্রান্ত হচ্ছে৷ তাঁর মতে, নির্দিষ্ট একটি ধর্মীয় দেশ গঠনে স্বৈরতান্ত্রিক চিন্তাধারার প্রতিফলন এখন ত্রিপুরায়ও লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ ফলে, গণতন্ত্র রক্ষায় কমিশনকে দায়িত্ব নিতে হবে৷ তাঁর কথায়, নির্বাচন কমিশন গণতন্ত্রের রক্ষক৷ মানুষের ভোটাধিকার রক্ষার দায়িত্বও তাই কমিশনকে নিতে হবে৷ তাঁর বক্তব্য, পুনভর্োট না করা পর্যন্ত জনগণের লড়াই জারি থাকবে৷


এদিকে, ত্রিপুরা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক বিজন ধর আজ শাসকদল বিজেপি এবং নির্বাচন কমিশনকে ভোট প্রক্রিয়া নিয়ে একসাথে বিঁধেছেন৷ তিনি ত্রিপুরা পশ্চিম আসনে পুনভর্োটের জন্য বিজেপিকে দায়ী করেছেন৷ তাঁর অভিযোগ, সারা দেশেই ভোট প্রক্রিয়াকে বাতিল করে ধর্মীয় রাষ্ট্রে পরিণত করার যে চেষ্টা শুরু হয়েছে তাতে অপশক্তি সাহস পেয়েছে৷ সাথে তারা সুযোগও পেয়েছেন৷ তাই, ভোট কারচুপির ঘটনা এ-রাজ্যে ঘটেছে৷ পাশাপাশি বলেন, নির্বাচন কমিশন প্রতিশ্রুতি খেলাপ করেছে৷ সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিলেও, সেই দায়িত্ব পালনে এবং প্রতিশ্রুতি রক্ষায় কমিশন ব্যর্থতার নজির স্থাপন করেছে৷ তিনি উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, ডিজিটাল যুগে ১৮ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পরও ত্রিপুরা পশ্চিম আসনে পুনভর্োট নিয়ে নির্বাচন কমিশন কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি৷ এই ব্যর্থতার দায় কমিশনকেই নিতে হবে৷ সাথে যোগ করেন, রাজ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় শীঘ্রই পুনভর্োটের ঘোষণা দিক কমিশন৷ নইলে লড়াই এভাবেই জারি রাখবে বামফ্রন্ট৷ তাঁর কথায়, বামেরা এখন দুর্বল ঠিকই৷ কিন্তু শক্তি সঞ্চয়ের চেষ্টা চলছে৷ তাঁর বিশ্বাস, অগণতান্ত্রিক সমস্ত পদক্ষেপের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখতে বামেদের শক্তি সঞ্চয় হবেই৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *