কৈলাসহরে বিচার সভায় নৃশংস খুন

নিজস্ব প্রতিনিধি, কৈলাসহর, ২৮ এপ্রিল ৷৷ ঊনকোটি জেলার কৈলাসহরের ইরানি থানার যুবরাজনগরে বিচার সভায় প্রকাশ্য দিবালোকে নৃশংসভাবে খুন হল এক ব্যক্তি৷ নিহতের নাম মাহমুদ হোসেন৷ বিকেল সাড়ে তিনটা নাগাদ রোমহর্ষক এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সংগঠিত হয়৷ হাসিম আলী নামে এক যুবক ছুরি দিয়ে গলার শ্বাসনালি কেটে তাকে হত্যা করে৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুহূর্তেই এলাকায় তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়৷ খুনি হাসিম আলীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ৷ তার ভাই শাহিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশের পদস্থ আধিকারিক সহ অতিরিক্ত পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে ছুটে যায়৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ ও টিএসআর এলাকায় টহল দিচ্ছে৷

ঘটনার সূত্রপাত আর্থিক লেনদেনকে কেন্দ্র করে৷ ঘটনার বিস্তারিত বিবরণে জানা যায়, যুবরাজনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের মাহমুদ হোসেন এবং ইরানি এলাকার শাহিন আলী পেশায় দুজনই রাজমিস্ত্রি৷ তারা ধলাই জেলার আমবাসার ডুলুবাড়িতে কাজ করতো৷ টাকা পয়সা নিয়ে দুজনের মধ্যে গত ২২ এপ্রিল বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়৷ মাহমুদের আক্রমণে শাহিনের হাত ভেঙে যায়৷ এব্যাপারে আমবাসা থানায় মামলা দায়ের করে শাহিন৷ পরবর্তী সময় বাড়িতে এসে স্থানীয় লিগ্যাল এইড ক্লিনিকের দ্বারস্থ হয় শাহিন৷ লিগ্যাল এইড ক্লিনিক থেকে উভয় পক্ষকে মীমাংসা করার জন্য নোটিশ জারি করা হয়৷ ক্লিনিকের ইনচার্জ কামাল মোসদ্দর এবং পিএলভি আজমির হোসেন খান সহ উভয় পক্ষের লোকজনরা সীমাংসা বৈঠকে রবিবার বিকেলে উপস্থিত হন৷ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় অভিযুক্ত মাহমুদ অসুস্থ শাহিনকে চিকিৎসাবাবদ ৫ হাজার টাকা দেবে৷ মাহমুদের পরিবার থেকে এই টাকা কমিয়ে তিন হাজার টাকা করার অনুরোধ জানায়৷ এনিয়ে মতভেদ দেখা দেয়৷ উভয় পক্ষই পঞ্চায়েত অফিস কক্ষের বাইরে আসা মাত্রই শাহিনের বড় ভাই হাসিম আলী ছুরি দিয়ে মাহমুদের গলায় আঘাত করে৷ তাতে ঘটনাস্থলেই রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ে মাহমুদ এবং মারা যায়৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা তুঙ্গে উঠে৷ পার্শ্ববর্তী এলাকার লোকজনরাও ছুটে আসে৷ খবর পাঠানো হয় ইরানি থানায়৷ পুলিশ শাহিনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়৷ জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় মীমাংসা বৈঠকে মাহমুদকে মারধর করার পরিকল্পনা তাদের আগে থেকেই ছিল৷ মূল অভিযুক্ত হাসিম আলী পলাতক৷ তাকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *