ধর্মনগরে রেল ট্যাঙ্ক ওয়াগন আনলোডিং সুবিধার উদ্বোধন, বিগত সরকারকে অপদার্থ আখ্যা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানালেন জ্বালানী যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলবে

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৯ মার্চ ৷৷ ত্রিপুরা রাজ্যে বর্তমানে যে সরকার গঠিত হয়েছে তা শুধু বিজেপি – আইপিএফটির সরকার নয়, এই সরকার

ধর্মনগরে রেল ট্যাঙ্ক ওয়াগন আনলোডিং সুবিধার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব৷

৩৭ লক্ষ ত্রিপুরাবাসীর সরকার৷ প্রত্যেক জনগণ যাতে এই সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচির ফসল ভোগ করতে পারেন সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করবে রাজ্য সরকার৷ আজ ধর্মনগর রেল স্টেশন সংলগ্ণ স্থানে ব্রডগেজ রেল ট্যাংঙ্ক ওয়াগনের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ তিনি বলেন, আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতবাসীকে একটাই মন্ত্র দিয়েছেন, তা হল সবকা সাথ সবকা বিকাশ৷ এই মন্ত্রের মাধ্যমেই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে৷ দেশের প্রধানমন্ত্রী বিকাল মন্ত্র অনুসরণ করবে বিজেপি – আইপিএফটি সরকার৷

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একটা সময় উত্তর প্রদেশ ও বিহারে জাতপাত ভিত্তিক রাজনীতির মাধ্যমে উভয় রাজ্যকে দেশের মধ্যে বদনাম করে তুলেছিল তৎকালীন রাজ্য সরকার৷ সেই জায়গা থেকে উভয় রাজ্যকে বদনামের হাত থেকে মুক্তি দিয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ ঠিক সেই ভাবেই সবকা সাথ সবকা বিকাশের মন্ত্রের মাধ্যমে ত্রিপুরার ৩৭ লক্ষ জনগণকে মুক্তির পথ দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বিগত সরকারের আমলে দেখা যেত বর্ষার সময় রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে দুর্ভোগের সৃষ্টি হলে তারা নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকতো৷ ফলে সেই সময় রাজ্যে পেট্রোপণ্যসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের জন্য অনেক দুখ কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে৷ আজকের এই ব্রডগেজ রেল ট্যাঙ্ক ওয়াগন আনলোডিং সুবিধার উদ্বোধনের মাধ্যমে রাজ্যবাসী সেই দুঘ যন্ত্রণার হাত থেকে মুক্তি পাবেন বলে মুখ্যমন্ত্রী আশা ব্যক্ত করেন৷ তিনি বলেন, এখন থেকে রাজ্যে আর পেট্রোপণ্যের অভাব হবে না৷ পেট্রোল সংগ্রহের জন্য কাউকে আর দীর্ঘ লাইন দিতে হবেনা৷ রাজ্যে এতদিন যারা পেট্রোল ডিজেলের কলোবাজারী করে আসছিল তাদের সনাক্ত করে শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দেন৷

এছাড়াও ত্রিপুরাকে যারা নেশা কারবারীর স্বর্গ রাজ্যে পরিণত করেছিল তাদের বিরুদ্ধেও দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, আগামী ৩ বছরের মধ্যে ত্রিপুরা রাজ্যকে মডেল রাজ্যে পরিণত করা হবে৷ সেই দিশাতেই রাজ্য সরকার কাজ করবে৷ রাজ্য সরকারের প্রতিটি দপ্তরকে ১০০ দিনের কাজ্যের লক্ষ্যমাত্রা করে দেওয়া হয়েছে৷ মরাজ্যের উন্নয়নের ক্ষেত্রে এখন থেকে কোনো ধরনের অপরাধমূলক কাজকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না বলেও মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব আরোপ কনের৷ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে রাজস্ব দপ্তরের মন্ত্রী নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মা বলেন, এখটা অগ্রগামী দেশ বা রাজ্যের পরিকাঠামেমা অনেকগুলো উপাদানের উপর নির্ভরশীল৷ এর মধ্যে অন্যতম উন্নততর যোগাযোগ ব্যবস্থা৷ আর যোগাযোগ ব্যবস্থার অন্যতম উপায় হল পেট্রোপণ্যের সরবরাহ৷

আজকের এই ব্রডগেজ রেল ট্যাংক ওয়াগন আনলোডিং সুবিধা চালু হওয়ার ফলে রাজ্যের উন্নয়নের কাজ আরও ত্বরান্বিত হবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন৷ বিশেষ অতিথির ভাষণে খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতা স্বার্থ সুরক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব বলেন, আমাদের রাজ্যে ব্রডগেজ রেল চালু হওয়ার পূর্বে প্রায় ৭০ শতাংশ পেট্রোপণ্য মিটারগ্যাজে ধর্মনগরে আসতো৷ বর্ষার সময় জাতীয় সড়ক বন্ধ হয়ে পড়লে রাজ্যে পেট্রোল ডিজেলের সংকট দেখা দিত৷ কিন্তু বিগত সরকার পেট্রোল ডিজেলের মজুত বান্ডার গড়ে তোলার জন্য বিশেষ  কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেন নি৷ ফলে রাজ্যবাসীকে অনেক দুখ যন্ত্রনার শিকার হতে হয়েছিল৷ বর্তমান রাজ্য সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এখন থেকে রাজ্যের জনগণকে আর দুখ কষ্টের শিকার হতে হবে না বলে তিনি আশা প্রসাখ করেন৷ অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বিধায়ক বিশ্ববন্ধু সেন, ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের চিফ জেনারেল ম্যানেজার  উত্তীয় ভট্টাচার্য্য প্রমুখ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *