ক্যানিং, ০৬ আগস্ট (হিস)৷৷ এক গৃহবধূকে ঘুন করে শ্বশুর বানিতেই ঘরের মধ্যে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগে আটক স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি৷ ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৫ পরগণার সোনারপুর থানার হরিনাভির চক্রবর্তী পাড়ায়৷ নিহতের নাম পায়েল বসু চক্রবর্তী (৩৪)৷ পায়েল নিজে একজন
আইনজীবী ছিলেন৷ কলকাতা হাইকোর্টে প্র্যাকটিস ও করতেন৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় যথেষ্ঠ চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে৷ জানাগেছে, প্রায় বারো বছর আগে পায়েলের সাথে একই পাড়ার জয়দীপ বসুর বিয়ে হয় প্রণয়েকর সুত্রে৷ জয়দীপ ও পায়েলের একটি বছর পাঁচেকের শিশুকন্যা ও রয়েছে৷ পায়েলের এলাকায় ভালো সুনাম ছিল৷ আইন চর্চার পাশাপাশি বিভিন্ন সাংসৃকতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত পায়েল ভানো নাচও করতেন৷ কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরেই পায়েলের উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচারের অভিযোগ রয়েছে তার শ্বশুর বাড়ির বিরুদ্ধে৷ কিন্তু একই পাড়ায় বাড়ি হওয়ার কারনে পায়েলের বাবা মা এ বিষয়ে সেভাবে হস্তক্ষেপ করতেন না৷ তবে শ্বশুর বাড়ির অত্যাচারে কিছুদিন আগে বাপের বাড়িতে ফিরে গিয়েছিল পায়েল৷ কিন্তু মাস খানেক আগে তাকে আবার ও শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে আসে জয়দীপ৷ এতো কিছুর পরেও পায়েলের উপর এতোটুকু অত্যাচার কমায়নি পেশায় গাড়ির ব্যবসায়ী জয়দীপ৷ এমনকি স্ত্রী ও মেয়ের জন্য কোনরকম খরচ পত্র ও দিতেন না তিনি৷ রবিবার সকালে পায়েলের স্বামী জয়দীপ তাদের মেয়ে ঋতিকাকে পায়েলের বাপের বাড়িতে দিয়ে আসেন৷ ঘটনার কয়েক ঘন্টা পরে এলাকার মানুষজন জানতে পারেন যে দোতলার ঘরে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলছে পায়েল৷ সাথে সাথে পায়েলকে উদ্ধার করে স্থানীয় সুভাষগ্রাম প্রাথমিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন৷ মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই মৃতার শ্বশুর বাড়ি ঘিরে ফেলেন এলাকার মানুষজন৷ ঘটনাস্থলে আসেন রাজপুর সোনারপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পল্লব দাস৷ খবর পেয়ে আসে সোনারপুর থানার পুলিশ৷ উত্তেজিত জনাতাকে শান্ত করে অভিযুক্ত পায়েলের স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়িকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে নিয়ে যায় সোনারপুর থানার পুলিশ৷
এই ঘটনা সম্পর্কে স্থানীয় বাসিন্দা ও মৃতার বাপের পাড়ির লোকেদের অভিযোগ খুন করা হয়েছে পায়েল কে৷ এ বিষয়ে পায়েলের মা সন্ধ্যা চক্রবর্তী বলেন, ওরা ভালোবাসা করে বিয়ে করেছিল৷ বিয়ের পর কয়েকবছর ভালই ছিল৷ কিন্তু গত দু তিন বছর ধরে ওদের মধ্যে সাংসারিক অশান্তি লেগে ছিল৷ আমরা মেয়েকে বুঝিয়েছিলাম৷ ও অনেক যন্ত্রণা সহ্য করেও ওখানে সংসার করছিলো৷ কিন্তু দিনের পর দিন পায়েলের উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যতন বেড়েই চলছিলো৷ আমাদের ধারনা ওকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ আমি দোষীদের শাস্তি চাই৷ অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, পায়েল খুবই ভালো মেয়ে৷ কিন্তু জয়দীপ প্রতিদিন মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরে ওর উপর অত্যাচার করতো৷ আমাদের ধারনা পায়েলকে খুন করা হয়েছে৷ এ বিষয়ে রাজপুর সোনারপুর পুরসভার পল্লব দাস বলেন, অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা৷ পুলিশ ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দিক৷ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে সোনারপুর থানার পুলিশ৷
2017-08-07

