তেজপুর (অসম), ০৩ আগস্ট, (হি.স.) : চৈনিক হামলা তথা আক্ৰমণ প্ৰতিহত করতে ভারতীয় বায়ুসেনা যথেষ্ট সক্ষম৷ তেজপুরে বৃহস্পতিবার আত্মপ্রত্যয়ের সঙ্গে এই মন্তব্য করেছেন এয়ার কমান্ডার কেভিআর রাজু ৷ তাছাড়া অত্যাধুনিক সুখোই যুদ্ধবিমানের ওপর চিনের সাইবার হামলা সংক্রান্ত খবরকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন রাজু৷
অরুণাচল প্রদেশকে চিন-ভুখণ্ড বলে যে দাবি পড়শি রাষ্ট্রটি যে সময় করছে ঠিক সে সময়ই আজ তেজপুরে ভারতীয় বায়ুসেনা ঘাঁটিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এভাবেই তাঁর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বায়ুসেনা আধিকারিক কেভিআর রাজু।
আজকের অনুষ্ঠান ছিল মূলত গত চার জুলাই অরুণাচল প্ৰদেশে বন্যার্ত ও ভূমিধসে আক্রান্তদের উদ্ধার অভিযানে গিয়ে যে তিন পাইলট হেলিকপ্টার দুৰ্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন সেই বীর শহিদ বায়ুসেনার পাইলটদের প্রতিবেশী রাজ্য (অরুণাচল প্রদেশ) সরকারের তরফ থেকে এককালীন ৫০ লক্ষ করে টাকা ক্ষতিপূরণ বাবদ দেওয়া হয়েছে। অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্ৰীর প্রতিনিধি হিসেবে রাজ্যের জনস্বাস্থ্যমন্ত্ৰী বামাং ফেলিক্স এবং ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতরের সংসদীয়সচিব ন্যামার কারবাক এই টাকার চেক তুলে দিয়েছেন বায়ুসেনার আধিকারিক কেভিআর রাজুর হাতে।
প্রসঙ্গত, বায়ুসেনার চপার দুর্ঘটনায় সেদিন মারা গিয়েছিলেন উইং কমান্ডার মনদীপসিং ধীলন, কমান্ডিং অফিসার ফ্লাইট লেফট্যানান্ট কো-পাইলট পিকে সিং এবং সার্জেন্ট রাজেন্দ্র যশবন্ত গুজর।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, টানা কয়েকদিনের ধারা বর্ষণ ও ভয়ংকর বন্যার কবলে পড়ে অরুণাচল প্রদেশের বিভিন্ন জায়গায় ধস পড়ে জাতীয় ও পূর্ত সড়ক বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এমতাবস্থায় পাপুমপারে জেলার সাগালি নামের এক জায়গায় ভূমিধসে আটক অসংখ্য যাত্রীকে উদ্ধারে মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু সেনাবাহিনীর সাহায্য চেয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চার জুলাই পাপুমপারে জেলার ছাগালির নিকটবর্তী পিলপুটু হেলিপ্যাড থেকে ভারতীয় বায়ুসেনার অ্যাডভান্সড লাইট (আইএএফ এএলএইচ) হেলিকপ্টারটি ওড়ান দিয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল ছাগলিতে ভূমিধসে আটক যাত্রীদের উদ্ধার করে নাহরলাগুনে তাঁদের পৌঁছে দেওয়া।
এদিন বিকেল প্রায় ৩.৪৮ মিনিট নাগাদ হেলিকপ্টারটি সাগালি এলাকায় সংঘটিত ভূমিধসে আটক ৪১ জন যাত্রীকে উদ্ধার করে নাহরলগুনে নিয়ে এসেছিল। এর পর বাকি ৪৩ জন আটক যাত্রীকে নাহরলগুন থেকে সাগালিতে নিয়ে গিয়েছিল। তাদের সবাইকে সফল উদ্ধার করে তড়িঘড়ি হেলিকপ্টারটি নিয়ে নাহরলগুনের উদ্দেশে উড়ান দিয়েছিল। সে সময়ই বিপত্তি ঘটে। অরুণাচল প্রদেশে বিকেল চারটের পর বায়ুসেনার উড়ানে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই চারটে বেজে যাচ্ছে দেখে তড়িঘড়ি শর্টকাট বায়ুপথে গন্তব্যস্থলে যাওয়ার চেষ্টা করার ফলে ইউপিয়ার (পাপুমপারে জেলা সদরের প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে) ঘন দুর্গম জঙ্গলে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।