অসম রাজ্য সরকার চালু করল ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি’ স্কিম, মৃতদেহ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া সহজতর করা হবে

গুয়াহাটি, ২৩ জুন : অসম সরকার সম্প্রতি একটি মানবিক এবং সামাজিক দায়বদ্ধতাপূর্ণ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে যার নাম ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি’ স্কিম। রাজ্য মন্ত্রিসভার অনুমোদিত এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো অসমের নিবাসী কোনো ব্যক্তি দেশের অন্য রাজ্যে মৃত্যুবরণ করলে, তার মৃতদেহ সম্মানের সঙ্গে এবং ঝঞ্ঝাটমুক্তভাবে অসমে ফিরিয়ে আনা। এই স্কিমটি বিশেষ করে সেইসব দরিদ্র ও প্রান্তিক পরিবারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, যারা অর্থনৈতিক বা লজিস্টিক সমস্যার কারণে প্রিয়জনের মৃতদেহ ফিরিয়ে আনতে সমস্যায় পড়েন।

প্রধানমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এই স্কিমের ঘোষণা দিয়ে বলেন, গত কয়েক বছরে সরকার অনেক অনুরোধ পেয়েছে — বিশেষ করে দরিদ্র শ্রেণি থেকে — যারা তাদের আত্মীয় বা প্রিয়জনের দেহ অন্য রাজ্য থেকে ফিরিয়ে আনতে হিমশিম খাচ্ছেন। এই সমস্যা দূর করতেই ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি’ স্কিম চালু করা হয়েছে, যাতে কেউ মৃত্যুর পর অসমে সম্মানজনক বিদায় থেকে বঞ্চিত না হন।

স্কিমটি অসমে বসবাসকারী সকল নাগরিকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে, মৃত্যুর কারণ বা আর্থিক অবস্থার বিবেচনা ছাড়াই। শুধুমাত্র অপরাধমূলক ঘটনার ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য নয়। যেকোনো আত্মীয়, বন্ধু বা পরিচিত ব্যক্তি মৃত ব্যক্তির সম্পর্কে তথ্য জানিয়ে এই প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবেন। খুব শীঘ্রই একটি ডিজিটাল বা টেলিফোনিক রিপোর্টিং ব্যবস্থাও চালু হবে, যার মাধ্যমে সহজেই মৃত্যুর তথ্য জানানো যাবে।

এই স্কিমের অধীনে, কোনো মৃত্যু ঘটলে প্রথমে সেটি স্থানীয় পুলিশ স্টেশন বা নির্ধারিত পদ্ধতিতে রিপোর্ট করতে হবে। এরপর রাজ্য নোডাল অফিসার (ডিআইজি বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদা) অথবা জেলার নোডাল অফিসার (এসএসপি) বিষয়টি যাচাই করে মৃতদেহ ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করবেন। এই প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট রাজ্যের প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে সমস্ত আন্তঃরাজ্য লজিস্টিক এবং প্রশাসনিক বাধা দূর করা হবে, যাতে দ্রুত এবং সম্মানজনকভাবে মৃতদেহ ফিরিয়ে আনা যায়।

‘শ্রদ্ধাঞ্জলি’ স্কিমটি অসম সরকারের মানবিক মুখের প্রতিফলন। এটি শুধু একটি প্রশাসনিক পদক্ষেপ নয়, বরং শোকাহত পরিবারগুলির পাশে দাঁড়ানোর এক আন্তরিক প্রয়াস। অভিবাসী শ্রমিক ও অন্যান্য রাজ্যে কর্মরত অসমীয় নাগরিকদের জন্য এই স্কিম বিশেষভাবে সহায়ক হবে। সরকারের পক্ষ থেকে শীঘ্রই স্কিমটির সম্পূর্ণ কার্যকরী রূপরেখা প্রকাশ করা হবে। এই পদক্ষেপটি নাগরিকদের প্রতি সরকারের দায়িত্ববোধ এবং সহানুভূতির স্পষ্ট নিদর্শন।