BRAKING NEWS

বড়জোড়ার ফুলবেড়িয়ায় বচসার জেরে টোটো চালকের হাতে প্রহৃত ভ্যান চালকের মৃত্যু

বাঁকুড়া,২৪ জুন (হি. স.) : যাত্রী তোলাকে কেন্দ্র করে টোটো ও ভ্যান চালকের মধ্যে বচসা থেকে ভ্যান চালকের মাথায় লাঠির বাড়িতে মৃত্যুর জেরে ধুন্ধুমার বড়জোড়ার ফুলবেড়িয়া। অভিযুক্ত টোটো চালকের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি ও ভ্যান চালকের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবিতে সোমবার সকাল থেকেই ফুলবেড়িয়া মোড়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় বাউড়ি সমাজ উন্নয়ন পর্ষদ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায় রবিবার বড়জোড়া থানার ফুলবেড়িয়া মোড়ে ভ্যান চালক দিলীপ বাউড়ি তার কয়েকজন আত্মীয়কে ভ্যানে চাপায়।নিয়ম ভেঙে টোটোর যাত্রী ভ্যানে নিয়ে যাচ্ছে এই অভিযোগে টোটো চালক অভিজিৎ ভূঁই-এর সাথে ভ্যান চালক দিলীপের বচসা বাঁধে। বচসা চলাকালীন উত্তেজিত অভিজিৎ ভ্যান চালকের মাথায় লাঠি মারে।লাঠির ঘায়ে গুরুতর জখম হয় ভ্যান চালক।তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।রবিবার রাতেই ভ্যান চালকের মৃত্যু হয়।টোটো চালকের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চেয়ে সোমবার সকাল থেকে ফুলবেড়িয়া মোড়ে বাঁকুড়া-দুর্গাপুর ৯ নং রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান বাউরি উন্নয়ন পর্ষদের বড়জোড়া ব্লক কমিটির সদস্যরা। ফলে এই ব্যস্ততম সড়ক পথটি অবরুদ্ধ হয়ে পড়ায় দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস সহ আটকে পড়ে বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলে যাতায়াতকারি অসংখ্য পন্যবাহী গাড়ি ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মৃত দীলিপ বাউরির বাড়ি ফুলবেড়িয়ার ক্যানেল পাড়ে। পেশায় তিনি ভ্যান চালক ছিলেন। রবিবার রাতের দিকে দীলিপ বাউরির মারা যাবার খবর প্রচার হতেই বাউরি উন্নয়ন পর্ষদের নেতারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। বড়জোড়া ব্লক কমিটির নেতারা ,বড়জোড়া বেলিয়াতোড় এলাকার সমস্ত বাউরি অধ্যুষিত গ্রামের মানুষজনকে সোমবার সকাল ৯ টায় ফুলবেড়িয়া মোড়ে রাস্তা অবরোধ করার নির্দেশ দেন। সেইমত এদিন ৯ নং রাজ্য সড়ক অবরোধ করে অভিযুক্ত টোটো চালকের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি ও ক্ষতিপূরণের দাবি করা হয়।

বাউরি উন্নয়ন পর্ষদের বড়জোড়া ব্লক সভাপতি বাপি বাউরি বলেন, দীলিপ বাউরি ভ্যান চালাতেন। তার কয়েকজন আত্মীয় আসায় তিনি ভ্যানে চাপিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তার প্যাসেঞ্জার তুলে নিয়ে যাচ্ছে বলে পেশায় টোটো চালক পাশের চাঁন্দুড়িয়া গ্রামের যুবক অভিজিৎ ভুঁই-এর সঙ্গে দীলিপের ঝগড়া বাঁধে। দুজনের বচসা চলতে চলতে আচমকা টোটোতে থাকা একটি লাঠি দিয়ে দীলিপের মাথার পিছনে আঘাত করে অভিজিৎ ভুঁই। হুমড়ি খেয়ে পড়ে অচেতন হয়ে যায় দীলিপ। সঙ্গে সঙ্গে তাকে বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর সেখান থেকে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। রাতের দিকে তিনি মারা যান।

বাউরি সমাজ থেকে দাবি করা হয়েছে এখনও তথাকথিত বর্ণ হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে বাউরি দলিত খেটে খাওয়া মানুষ শোষণ ও নিপীড়নের শিকার। আর যেন কেউ নিম্ন শ্রেণির মানুষ জনের প্রতি অত্যাচার না করে তার জন্য দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই অভিযুক্তের। মৃতের কাকিমা যশোদা বাউরি বলেন দীলিপের ২ টি ছেলে মেয়ে। একমাত্র রোজগেরে ছিলেন । ওদের ভবিষ্যতের জন্য অভিযুক্তকে ৩ বিঘা চাষ জমি, এবং নগদ টাকার প্রতিশ্রুতি না পেলে অবরোধ থেকে সরবেন না। শেষমেশ পুলিশ উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করে অবরোধ তোলে। পাশাপাশি নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানায় পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *