কলকাতা, ১৮ জানুয়ারি (হি.স.) : ঘরের কাজে মহিলাদের, বিশেষত ঠাকুর ঘরে পুজো করতে গেলে প্রবীণ নাগরিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছে কলকাতা পুলিশ। গত চারদিনে অগ্নিকাণ্ডের তিনটি ঘটনার পরে এই বিষয়ে একটি নির্দেশিকা জারি করছে লালবাজার।
বৃহস্পতিবার পুলিশ সূত্রের জানা যায়, শহরে পর পর এমন ঘটনা ঘটার পরে আগামীদিনে এই ধরনের দুর্ঘটনা ঠেকাতে একটি গাইডলাইনও তৈরি করা হচ্ছে। যা প্রবীণ নাগরিকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। শহরে যে তিনটি ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে প্রথমটি ঘটে গত শনিবার। কালীঘাটের হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের বাড়িতে একা থাকতেন বীণা কাটিয়াল (৮৯)। প্রতিদিনের মতো সেদিন ঠাকুর ঘরে পুজো করছিলেন তিনি। আচমকা প্রদীপ থেকে আগুন লেগে যায় তাঁর শাড়িতে। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা খবর দেন দমকলে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় ওই বৃদ্ধাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
ঠাকুর ঘরে পুজো করতে গিয়ে মঙ্গলবার পর্ণশ্রীতে মৃত্যু হয় ছবি মজুমদার (৮৯) নামে এক বৃদ্ধার। স্বামীর মৃত্যুর পরে মেয়ের বাড়িতেই থাকতেন তিনি। সকাল-সন্ধ্যা পুজোর জন্য যেতেন নিজের বাড়িতে। সেখানে প্রদীপের আগুন থেকে মৃত্যু হয় তাঁর।
ওই দুজন শুধু নন। পরিসংখ্যান বলছে, ঠাকুরঘরে পুজো করতে গিয়ে শহরে নভেম্বর মাস থেকে এখনও পর্যন্ত ৯ জন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন। এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। পুলিশ কর্তাদের বক্তব্য, শীতের সময়ে এই ধরনের ঘটনা বেড়ে গিয়েছে। গায়ের চাদর অসাবধানতাবশত জ্বলন্ত প্রদীপের উপর পড়ে গিয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে।
এই পরিস্থিতিতে বাড়িতে একা থাকলে সংশ্লিষ্ট বাসিন্দাকে প্রদীপ না জ্বালালোর আর্জি জানানো হচ্ছে পুলিশের পক্ষ থেকে। যদি জ্বালাতেই হয় সেক্ষেত্রে সতর্ক থাকার কথাও বলা হবে। পাশাপাশি হাতের কাছে স্থানীয় থানা, নিকট আত্মীয়দের নম্বর রাখারও পরামর্শ দেবে পুলিশ। বাড়ির বয়স্কদের বদলে যাতে অন্যরা পুজোর প্রদীপ জ্বালান এবং প্রবীণরা ঠাকুর ঘরে গেলে নজর রাখেন, সেটাও চাইছে লালবাজার।
প্রবীণদের স্বার্থে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রণামের মাধ্যমে এই গাইডলাইন প্রচার করার পরিকল্পনা নিয়েছে কলকাতা পুলিশ। ফেসবুক পেজেও এনিয়ে সচেতন করা হবে। কলকাতার পাশাপাশি বিধাননগর কমিশনারেটও এ বিষয়ে প্রচার শুরু করে দিয়েছে।

