বিভিন্ন দাবি-দাওয়ার ভিত্তিতে হাফলঙে ডিমা হাসাও জেলা কংগ্রেসের ধরনা

হাফলং (অসম), ১৪ জুলাই (হি.স.) : অসম পুলিশের কনস্টেবল হবিবুর রহমান হত্যার একমাত্র রাজসাক্ষী বিকাশ থাওসেনের দাখিলকৃত এজাহারের ন্যায্য তদন্তের দাবি, পিআরসি ভেরিফিক্যাশন ইস্যুতে ডিমা হাসাও জেলার স্থানীয় বাসিন্দাদের হেনস্তা এবং অসম মালার অধীনে দুই লেন সড়ক নির্মাণের জন্য যে সব গ্রামের মানুষের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, তাঁদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে না দেওয়ার প্রতিবাদে আজ শুক্রবার ডিমা হাসাও জেলা কংগ্রেস জেলাশাসকের কার্যালয়ের সামনে ধরনা কর্মসূচি পালন করেছে।

ধরনা কৰ্মসূচির পর ডিমা হাসাওয়ের জেলাশাসক সীমান্তকুমার দাসের মাধ্যমে এক স্মারকলিপি অসমের রাজ্যপালের উদ্দেশ্যে পাঠিয়েছেন প্রতিবাদকারীরা। এদিকে ধরনাস্থলে ডিমা হাসাও জেলা কংগ্রেসের সভাপতি সমরজিৎ হাফলংবার সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদে তানাশাহি রাজত্ব চলছে। ষষ্ঠ তফশিলির অধীনস্থ সবচেয়ে পুরনো উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের মুখ্য কার্যনির্বাহী সদস্য প্রতিমাসে চার থেকে পাঁচবার আদালতে হাজিরা দেন। তাছাড়া এই পরিষদ-প্রধানের বিরুদ্ধে চার্জশিটও রয়েছে। এই অবস্থায় আদর্শবান দল হিসেবে জাহির করা বিজেপি এমন একজনকে উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে রেখেছে যা লজ্জাজনক।
সমরজিৎ বলেন, চার্জশিটে এমন অভিযুক্ত ব্যক্তির সাংবিধানিক পদে থাকার কোনও অধিকার নেই। উত্তর কাছাড় পার্বত্য পরিষদের মুখ্য কার্যনির্বাহী সদস্য পদ থেকে অপসারিত করার দাবি তুলে তিনি বলেন, অসম পুলিশের কনস্টেবল হবিবুর রহমানের হত্যার একমাত্র রাজসাক্ষী বিকাশ থাওসেনকে আদালতে সাক্ষী না দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এমন-কি বিকাশ থাওসেনের স্ত্রীকে চাকরি ও অর্থের প্রলোভন দিয়ে বিকাশ থাওসেনকে আদালতে সাক্ষী না দেওয়ার চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে সমরজিৎ হাফলংবার উত্থাপন করে বলেন, এ নিয়ে বিকাশ থাওসেন থানায় এজাহার দাখিল করেছেন।

এমতাবস্থায় কনস্টেবল হবিবুর রহমানের পরিবারকে ন্যায় পাইয়ে দিতে দিশপুরের চাপে পুলিশ নতি স্বীকার না করে এর উপযুক্ত তদন্ত করার দাবি জানিয়েছেন ডিমা হাসাও জেলা কংগ্রেসের সভাপতি সমরজিৎ হাফলংবার।
পিআরসি ভেরিফিক্যাশন ইস্যুতে জেলা কংগ্রেস সভাপতি বলেন, পিআরসি ভেরিফিক্যাশন নিয়ে ডিমা হাসাও জেলার স্থায়ী বাসিন্দাদের যেভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে, তা বন্ধ করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, অসম মালা-র অধীনে দিয়ুংমুখ-হাফলং তিনআলি থেকে লোয়ার হাফলং পর্যন্ত দুইলেন রাস্তা নির্মাণের জন্য গ্রামের মানুষের জমি অধিগ্রহণ করার পরও ওই সব গ্রামবাসীদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেওয়া হয়নি।

এ নিয়ে গ্রামবাসীরা গৌহাটি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলে হাইকোর্ট উত্তর কাছাড় পার্বত্য পরিষদ কর্তৃপক্ষকে জমি অধিগ্রহণের শিকার গ্রামের বাসিন্দাদের ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিলে পার্বত্য পরিষদ এখন পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে না দিয়ে আদালতকে অবমাননা করার অভিযোগ তুলে সমরজিৎ হাফলংবার বলেন, বরং ওই সকল গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে মামলা করে তাঁদের জেলে পুরে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি সমরজিৎ হাফলংবার।