নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৪ মার্চ৷৷ জীবনের কঠিন লড়াইয়ের মুখে প্রজ্ঞামণি দাস৷ অনাথ শিশুটির এক করুন কাহিনী উঠে আসলো গোমতী জেলার উদয়পুর পশ্চিম খিলপাড়া এলাকা থেকে৷প্রজ্ঞামণি দাস বয়স নয় বছর৷ পিতৃমাতৃহীন এই অনাথ শিশুটির এক করুন কাহিনী উঠে আসলো গোমতী জেলার উদয়পুর পশ্চিম খিলপাড়া এলাকা থেকে৷নয় বছরের এই শিশুটি এখনো পর্যন্ত কোনো বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেনি, যদি সে ঠিক সময় ভর্তি হতো তাহলে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়াশোনা করত কিন্তু এখনো শিশুটি সুকলের বেঞ্চে বসে নিজের স্বপ্ণ পূরণের মুখোমুখি হতে পারছে না এমনকি বন্ধুদের সাথে খেলার মাঠে খেলতে পারছে না৷ ছোটবেলায় এই শিশুটি মা-বাবাকে হারিয়েছে, তার জন্মের প্রমাণপত্র সঠিক সময়ে বের হবে, আর সেই অজুহাত দেখিয়ে কোন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে ভর্তি করাচ্ছেনা৷ অসহত্ত্বের সমস্ত বাধা টপকে শিশুটি পড়তে চাইছে, নিজের বাবা মাকে শৈশবেই হারিয়েছে৷ কিন্তু তবু প্রজ্ঞার প্রান জুড়ে শুধুই পড়াশুনার তাগিদ৷ নিজের জেঠু এবং জেঠিমার কাছে একটু একটু করে বড় হচ্ছে প্রজ্ঞা৷ তারাও চাইছে ছোট্ট প্রজ্ঞা পড়াশোনা করে মানুষের মত মানুষ হয়ে উঠুক৷ কিন্তু শিশুটির পড়াশোনার ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সরকারি ব্যবস্থাপনা৷ বাবা প্রণব দাস এবং মা মন্ত্রী দাস প্রয়াত হয়েছেন৷ কিন্তু তাদের ছোট্ট প্রজ্ঞামণি দাস এখনো বাবা-মাকে খুঁজে বেড়ায়৷ আর পাঁচটি শিশুর মত সেও মা বাবার হাত ধরে সুকলে যেতে চেয়েছিল কিন্তু ভাগ্য সেটা হতে দেয়নি৷ উদয়পুরের পশ্চিম খিলপাড়ার এই ঘটনাটি সংশ্লিষ্ট মহলে আলোচিত হচ্ছে৷ সরকারি খাতায় নাম না তুলেও জেঠু এবং জেঠিমার কাছে পড়াশোনা করছে প্রজ্ঞা৷ এক শিক্ষা অধিকর্তা তিকিমুলের উদয়পুরের শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের সচেতন করেন৷ প্রজ্ঞার মা-বাবার মৃত্যুর পর বিকাল গার্জিয়ান জেঠু এবং জেঠিমা থাকা সত্ত্বেও সে বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারছে না৷ উদয়পুরের রমেশ সুকল ইংলিশ মিডিয়াম সুকল সহ বেশ কয়েকটি সুকল শিশুটির ভর্তি নিয়ে নানান তালবাহানা করে আসছে৷শিশুটির সেই দুঃসময়ের সংবাদ যায় রাজ্য শিশু সুরক্ষা ও অধিকার কমিশনের কাছে৷ খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাজ্য শিশু সুরক্ষা ও অধিকার কমিশনের সদস্য শর্মিলা চৌধুরী ছুটে যান উদয়পুর পশ্চিম খিলপাড়া স্থিত প্রজ্ঞার জেঠুর বাড়িতে৷ সেখানে গিয়ে শিশুটির জেঠু এবং জেঠিমার সাথে দীর্ঘক্ষণ কথাবার্তা বলে সম্পূর্ণ ঘটনাটি জানতে পারেন৷ পরে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কমিশনের সদস্যা শর্মিলা চৌধুরী জানিয়েছেন এটি একটি নিত্যান্তই হৃদয়বিদারক ঘটনা, সব শিশুরই বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করার অধিকার রয়েছে৷ আর তাই শিশুটি যাতে বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা করে তার স্বপ্ণ পূরণে এগিয়ে যেতে পারে তার জন্য রাজ্য শিশু সুরক্ষা ও অধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে অবশ্যই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে৷
2023-03-24