নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১০ ফেব্রুয়ারি৷৷ সারা দেশের সাথে আজ রাজ্যেও জাতীয় কৃমিনাশক দিবস পালন করা হয়৷ আগরতলায় রাজ্যের মূল অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় মুক্তধারা হলে৷ প্রদীপ জ্বালিয়ে এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্য সচিব যশপাল সিং ১০১৯ বছর বয়সের ছেলে-মেয়েদেরকে ১০০ শতাংশ কৃমিমুক্ত হতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন৷ তিনি বলেন, মাটির মাধ্যমে মানুষে সংক্রামিত কৃমি তিন ধরনের৷ এগুলি হল গোলকৃমি, হুক কৃমি ও চাবুক কৃমি৷ কৃমি এক ধরণের রোগ৷ এরফলে অ্যামিনিয়া, খিদে মন্দা, জ্বর, অপুষ্টি, মানসিক যন্ত্রনা ইত্যাদি হয়৷ এর থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রয়োজন জনসচেতনতা৷ তিনি বলেন, আমরা গত বছর ৬৫ শতাংশ সফলতা পেয়েছি৷ পর্যায়ক্রমে এই সফলতা ১০০ শতাংশ পৌঁছাতে চাই৷ এবছর ব্লক থেকে জেলা পর্যায়ে ১-১৯ বছর বয়সের সাড়ে এগার লক্ষ ছেলে মেয়েকে কৃমিনাশক ঔষধ খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে৷ এজন্য ৪,৮১৮ টি বিদ্যালয় ও ৯৯১১ টি অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্র নির্দিষ্ট করা হয়েছে৷ এই কাজে প্রায় ২৪ হাজার স্বাস্থ্য কর্মী নিয়োজিত রয়েছেন৷ বিশেষ অতিথির ভাষণে বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের প্রধান সচিব ড কে রাজেশ্বর রাও প্রতিটি বিদ্যালয়ে প্রার্থনা চলাকালীন সময় সকল ছাত্র-ছাত্রীকে এ বিষয়ে সচেতন করতে শিক্ষক সমাজের প্রতি আহ্বান জানান৷ সম্মানিত অতিথির ভাষণে সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব চৈতন্য মুর্ত্তি বলেন, রাজ্যে ৯,৯১১ টি অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্রে ২ লক্ষ ৮৪ হাজার শিশু রয়েছে৷ সকল সুপারভাইজার ও অঙ্গনওয়াড়ী কর্মীকে এই কাজে নিযুক্ত করা হয়েছে৷ তবে এ ব্যাপারে অভিভাবকদের আরো সচেষ্ট হতে হবে৷ স্বাগত ভাষণে পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধক দপ্তরের অধিকর্তা ডা, কে এর ভৌমিক বলেন, সারা পৃথিবীতে প্রায় ১০০ কোটি মানুষ এ রোগে আক্রান্ত৷ ভারতে প্রয়া ২২ কোটি৷ রাজ্যে এড প্রতিরোধে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে৷ অনুষ্ঠানে বহু ছাত্র-ছাত্রী, স্বাস্থ্য কর্মী ছাড়াও বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা প্রশান্ত কুমার গোয়েল, স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা ডা, জেকে দেববর্মা ও পশ্চিম জেলার জেলা শাসক ডা, মিলিন্দ রামটেকে প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন৷ মুখ্যসচিব শ্রীসিং শিশুবিহার সুকলের ছাত্র অভিরাজ পালকে অ্যালবেনডাজল ট্যাবলেট খাইয়ে এই কর্মসূচির সুচনা করেন৷ জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন ত্রিপুরা ও পরিবার কল্যাণ এবং রোগ প্রতিরোধক দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷ অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয় মনোজ্ঞ সাংসৃকতিক অনুষ্ঠান৷ সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের সচিব এন নাগরাজু৷ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পশ্চিম জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা, গৌতম দেবনাথ৷
কৈলাসহর
ঊনকোটি জেলাতেও আজ জাতীয় কৃমিনাশক দিবস পালন করা হয়েছে৷ এই উপলক্ষ্যে জেলাভিত্তিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি হয় শ্রীরামপুর সূর্যমনি উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে৷ স্বাস্থ্য দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত উক্ত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে ঊনকোটি জেলার অতিরিক্ত জেলা শাসক গোপিকা রঞ্জন দাস বলেন, শিশুসহ ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্যকে সুস্থ-সবল রাখার জন্য দেহ থেকে কৃমি নাশ করা একান্ত প্রয়োজন৷ কারণ কৃমির মাধ্যমেই দেহে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হয়ে থাকে৷ কৃমিনাশক দিবস উদযাপনের মাধ্যমে সকলে সচেতন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন৷ প্রধান অতিথির ভাষণে ঊনকোটি জিলা পরিষদের সভাধিপতি কল্পনা দেবনাথ বলেন, মানুষের জীবনে স্বাস্থ্যই হল পরম সম্পদ৷ একে সুস্থ ও নীরোগ রাখার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহন করতে হবে৷ তিনি জেলার প্রতিটি শিশু যাতে কৃমিনাশক ঐষধ সেবন করতে পারে তার জন্য স্বাস্থ্য দপ্তরকে বিশেষ দৃষ্টি রাখার জন্য অনুরোধ জানান৷ জাতীয় কৃমিনাশক দিবসের তাৎপর্ৎ ব্যাখা করতে গিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের অতিরিক্ত অধিকর্তা এন ডার্লং বলেন, ঊনকোটি জেলার ৩৬৬ টি বিদ্যালয়ে ৫-১৯ বছরের ৬৬ হাজার ১৬ জন ছাত্রছাত্রীকে এবং ৬৫৮ টি অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্রে ১-৫ বছরের ২৬ হাজার ৩১২ জন শিশুকে কৃমিনাশক ঔষধ খাওয়ানো হবে৷ এছাড়া বক্তব্য রাখেন জেলা টিকাকরণ আধিকারিক ডা, নীহার রঞ্জন দাস৷ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শ্রীরামপুর সূর্যমনি উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ ভট্টাচার্য এবং স্বাগত ভাষন দেন বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রণয়কান্তি সেন৷
আমবাসা ঃ-
ধলাইয়ে কুলাই দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের সভা গৃহে ধলাই জেলা শাসক ডা, সন্দীপ আর রাঠোড় জেলা ভিত্তিক জাতীয় কৃমিনাশক দিবসের উদ্বোধন করেন৷ উদ্বোধন ধলাই জেলা শাসক ডা, সন্দীপ আর রাঠোড় তিনি এই দিবসের উদ্দেশ্য ব্যাখা করে বলেন, কৃমির জন্য মানুষের দেহে বিভিন্ন ধরনের রোগের সৃষ্টি হয়৷ কৃমির থেকে মুক্তি পেতে কৃমি নাশক ঔষধ খাওয়া প্রয়োজন৷ অন্যান্যদের মধ্যে আলোচনা করেন ধলাই জেলা শিক্ষা আধিকারিক শুভ রঞ্জন দাস, অনুষ্ঠানের সভাপতি কুলাই দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মন্দিরা দেববর্মা প্রমুখ৷ স্বাগত ভাষন দেন জেলা কৃমিনাশক কর্মসূচীর নোডাল অফিসার ডা, আশিষ দাস৷ কুলাই দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ে ছেলে-মেয়েদের আনুষ্ঠানিক ভাবে কৃমিনাশক ঔষধ খাওয়ান ধলাইর জেলাশাসক এবং অন্যান্য অতিথিগণ৷ আজ ধলাই জেলার ৮৭৬ টি সরকারী বেসরকারী সুকলের এবং ১২৮২ টি অঙ্গনওওয়াড়ী কেন্দ্রে ১ বছর থেকে ১৯ বছর বয়সী এবং বিদ্যালয়ের বহির্ভূত ছেলেমেয়েকে কৃমিনাশক ঔষধ খাওয়ানো হয়৷ কৃমিনাশক ঔষধ খাওয়ানোর লক্ষ্য মাত্রা নেয়া হয়েছে ১ লক্ষ ৩৯ হাজার ৪২৪ জন৷
জিরানীয়া ঃ জাতীয় কৃমিনাশক দিবস উপলক্ষে আজ জিরানীয়া মহকুমার ১-১৯ বছর বয়সী ৪২,০৫১ জন ছেলে মেয়েদের কৃমিনাশক ঔষুধ খাওয়ানো হয়েছে৷ এর মধ্যে বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের জিরানীয়া কার্যালয়ের উদ্যোগে মহকুমার সরকারী ও বেসরকারী বিদ্যালয়ের ৩২ হাজার ১৬ জন এবং সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের জিরানীয়া কার্যালয়ের উদ্যোগে বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্রের ১-৫ বছর বয়সী ১-,১৩৫ জন শিশুকে এি ঔষধ খাওয়ানো হয়৷ সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় পরিদর্শক কার্যালয় থেকে এ সংবাদ জানানো হয়েছে৷
2016-02-11

