অসহিষ্ণুতা ও কেন্দ্রীয় বঞ্চনা গুরুত্ব পেল বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণে

Governor Speech Assemblyনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৮ জানুয়ারি৷৷ অসহিষ্ণুতা, দেশের আর্থিক প্রবৃদ্ধির হার, কেন্দ্রীয় বাজেটে ব্লক গ্র্যান্টসের আওতায় অর্থ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া এবং কর্মচারী বেতন ভাতা ও পেনশন বাবদ খরচের হিসাব না করে চতুদর্শ অর্থ কমিশনের বঞ্চনা সমস্ত কিছু বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে রাজ্যপালের ভাষণে স্থান পেয়েছে৷ এদিন, ভাষণে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন কাজকর্ম নিয়ে সন্তোষ্টি ব্যক্ত করার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করা হয়েছে৷
তবে, রাজ্যগুলিকে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে অর্থ সরবরাহ নিয়ে ৯০,১০ অনুপাতের আর্থিক সহায়তা বরাদ্দ রাখার যে দাবি ভাষণে জানানো হয়েছে তাতে অনেকটাই তথ্যগত ত্রুটি ফুটে উঠেছে৷ সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ সরবরাহে উত্তরপূর্বাঞ্চল সহ মোট ১১টি রাজ্যকে কোন কোন প্রকল্পে ১০০ শতাংশ, কোন কোন প্রকল্পে ৯০,১০ এবং কোন কোন প্রকল্পে ৮০,২০ অনুপাতে অর্থ বরাদ্দে সম্মত হয়েছে৷ রাজ্যের অর্থমন্ত্রী ভানুলাল সাহা কয়েকদিন আগে এই তথ্য তুলে ধরেছিলেন৷ পাশাপাশি কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে রাজ্যের অনেকটা স্বস্তি মিলবে বলে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন৷ কিন্তু আজ রাজ্যপালের ভাষণে যে দাবি জানানো হয়েছে তাতে তথ্যগত ত্রুটিই ফুটে উঠেছে৷
[vsw id=”_pxqow9776U” source=”youtube” width=”325″ height=”244″ autoplay=”yes”]এদিন তিনি ভাষণে বলেন, দেশের বিভিন্ন অংশে সাম্প্রদায়িক উদ্বেগ মাথাচারা দিয়ে উঠছে৷ যার ফলে দেশের গণতান্ত্রিক ভিত্তি, নাগরিকদের ব্যক্তি স্বাধীনতা সংকটাপন্ন এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার সৃষ্টি হচ্ছে৷ মৌলবাদী শক্তিগুলি তাদের কুৎসিত রূপ নিয়ে মাথাচারা দিয়ে উঠছে৷ মানুষ পরস্পরের ধর্মের প্রতি অসহিষ্ণুতা প্রকাশ করতে শুরু করেছে৷ এই ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়া হিংসাত্মক ঘটনা দেশের গণতন্ত্রের এবং ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি আঘাত হানতে পারে বলে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন৷
এদিন তিনি ভারতের আর্থিক প্রবৃদ্ধির হার ৭২৫ শতাংশ বলে দেখানো হচ্ছে যা অর্থনীতির এক নতুন ফর্মুলা অনুযায়ী এখনও বিতর্কিত রয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন৷ তিনি দাবি করেন, প্রবৃদ্ধির পুনুরুত্থানের জন্য ভারতকে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে দরিদ্র মানুষ লাভবান হন এবং তাঁদের ক্রয় ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়৷ কেন্দ্রীয় বাজেটে রাজ্যের জন্য ব্লক গ্রান্টস’র আওতায় অর্থ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, এবিষয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন৷ পাশাপাশি দাবি জানান, এই প্রকল্পগুলির জন্য আর্থিক সহায়তা পুণরায় চালু করার জন্য৷ যাতে রাজ্যভিত্তিক উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা, রাজস্ব সংক্রান্ত ঘাটতি ইত্যাদি মেটানো সম্ভব হয়৷
এদিন তিনি আরও বলেন, কর্মচারীদের বেতন-ভাতা এবং পেনশন বাবদ খরচের সঠিক হিসাব না করে ত্রয়োদশ অর্থ কমিশন যেভাবে ব্যয় বরাদ্দ দিয়েছিল চতুর্দশ অর্থ কমিশনও বহু অনুদানকে বিবেচনার আওতায় আনে নি৷ যেমন রাজ্যভিত্তিক বিশেষ অনুদানসমূহ৷ কিন্তু এই অনুদানগুলি রাজ্যের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে দরকার হয়ে পড়ে বলে তিনি মন্তব্য করেন৷ চতুর্দশ অর্থ কমিশন ত্রিপুরা উপজাতি স্ব-শাসিত জেলা পরিষদের জন্যও কোন অনুদানের সুপারিশ করেনি বলে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *