নয়াদিল্লি, ৩০ ডিসেম্বর: মঙ্গলবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাশিয়ার উত্তরপশ্চিম অঞ্চলে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবনে ইউক্রেনের আক্রমণ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। মোদী জানিয়েছেন, সব পক্ষকে উচিত আলোচনায় মনোযোগী হওয়া এবং এমন কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া যা কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
রাশিয়া সোমবার জানায় যে, ইউক্রেন তাদের ৯১টি দীর্ঘপাল্লার ড্রোন দিয়ে পুতিনের সরকারি বাসভবনকে আক্রমণ করতে চেয়েছিল, যদিও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
মোদী বলেন, “রাশিয়ার ফেডারেশন প্রেসিডেন্টের বাসভবনে আক্রমণের খবর নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।” তিনি আরও যোগ করেছেন, “চলমান কূটনৈতিক প্রচেষ্টা যুদ্ধ বন্ধ করার এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার সর্বাধিক উপযুক্ত পথ। আমরা সংশ্লিষ্ট সকলকে আহ্বান জানাই, যাতে তারা এই প্রচেষ্টাগুলোর প্রতি মনোযোগী থাকে এবং এমন কোনো কাজ না করে যা এই প্রচেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।”
পুতিন এবং জেলেনস্কির সাথে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে চলমান যুদ্ধের পর, মোদী বারবার বলেছেন, “এটা যুদ্ধের যুগ নয়।” তিনি দাবি করেছেন যে, সমাধান যুদ্ধের মাঠে পাওয়া সম্ভব নয় এবং বন্দুকের ছায়ায় আলোচনা সফল হতে পারে না।
লাভরভ বলেছেন, ইউক্রেনের ড্রোন আক্রমণটি রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা ধ্বংস হয়ে যায়, এবং এতে কোনো ক্ষতি বা আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। তবে তিনি জানান, রাশিয়ার আলোচনার অবস্থান পর্যালোচনা করা হবে।
জেলেনস্কি লাভরভের অভিযোগকে “রাশিয়ান মিথ্যা” বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন, “এটা একটি পূর্ণাঙ্গ কাল্পনিক গল্প, যা রাশিয়ার আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি অজুহাত তৈরি করতে এবং ইউক্রেনকে আরও আক্রমণ করতে ব্যবহৃত হবে।”
এদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে ভারতকে রাশিয়া থেকে তেল ও সামরিক সরঞ্জাম কেনা কমানোর জন্য গত কয়েক মাসে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবুও, ভারত তার কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন বজায় রেখেছে। সম্প্রতি, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের ভারত সফরের সময়, ভারত ও রাশিয়া একাধিক অর্থনৈতিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যার মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্য ঠিক করতে পাঁচ বছর মেয়াদী পরিকল্পনা এবং ভারতীয় শ্রমিকদের জন্য গতিশীলতা চুক্তি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ভারতের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদী আবারও শান্তির জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন, তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছে যে, এই মুহূর্তে যুদ্ধের সমাপ্তি খুবই কঠিন হতে পারে।

