নিজস্ব প্রতিনিধি।, আগরতলা, ১০ ডিসেম্বর:
শিশু দত্তক নেওয়া এক মহৎ কাজ। শিশুকে দত্তক দেবার সময় শিশুর ভবিষ্যৎ, তার সুরক্ষা ও বড় হবার বিষয়ে যাতে কোন ত্রুটি ও গাফিলতি না থাকে সে বিষয়ে রাজ্য সরকার সচেষ্ট রয়েছে। সমাজের যেসকল ব্যক্তি শিশু দত্তক নিতে আগ্রহী তারা যাতে আরও সচেতন হন সে লক্ষ্যে সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তর নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা মন্ত্রী টিন্তু রায় আজ প্রজ্ঞাভবনের ৩নং হলে আয়োজিত শিশু দত্তক গ্রহণকারী ও সম্ভাব্য দত্তক গ্রহণকারী অভিভাবকদের নিয়ে একদিনের আলোচনাচক্রে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন। সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তর এই আলোচনাচক্রের আয়োজন করে। এতে বিভিন্ন দপ্তরের পদস্থ আধিকারিকগণ ছাড়াও জেলা সমাজশিক্ষা পরিদর্শক, সিডিপিও, সিএমও এবং অভিভাবকগণ অংশ নেন। আলোচনাচক্রের উদ্বোধন করে সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা মন্ত্রী টিস্কু রায় বলেন, শিশুরা দেশের ভবিষ্যৎ। আজ আমরা বিকশিত ভারতের কথা বলছি। ভারতকে বিশ্বগুরু করার ভাবনা চলছে। তাই সর্বাগ্রে আমাদের শিশুদেরকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের রাজ্যে অনেক অনাথ ও অসহায় শিশু রয়েছে। রাজ্যে রয়েছে ৪৪টি হোম। এই হোমগুলিতে প্রায় ১ হাজার শিশু রয়েছে। দিব্যাঙ্গ, অনাথ ও হোমের শিশুদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, খেলাধুলা প্রভৃতি পরিষেবা দেবার জন্য সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তর আন্তরিক রয়েছে। তিনি বলেন, আগ্রহী অভিভাবকরা শুধু মা-বাবা নেই এমন বাচ্চা নয়, যেসকল বাচ্চা হোমে থেকে ক্লাস ওয়ান, টু, থ্রি বা ফোর এ পড়াশোনা করে তাদেরও দত্তক নিতে পারেন। এজন্য দেশে একটা সিঙ্গেল পোর্টাল আছে তাতে তারা আবেদন করতে পারেন। দত্তক নেবার জন্য আইনকে সরলীকরণ করার প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এই ধরণের আলোচনাচক্র জেলা পর্যায়ে সংগঠিত করার জন্য দপ্তরের চিন্তাভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তর সমাজে পিছিয়ে পড়া, অন্তিম ব্যক্তি তাদের উন্নয়নে অগ্রাধিকার দিয়েছে। এই দপ্তর মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত নানা কর্মসূচি রূপায়ণ করে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ত্রিপুরা রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন জয়ন্তী দেববর্মা দপ্তরের এই উদ্যোগকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, দিব্যাঙ্গজনরাও আজ সমাজে পিছিয়ে নেই। আলোচনায় অংশ নিয়ে সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের সচিব তাপস রায় শিশু দত্তক গ্রহণের নিয়মাবলী বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব তথা অধিকর্তা তপন কুমার দাস। এছাড়া আলোচনায় অংশ নেন শিশু দত্তক গ্রহণকারী অনুপ্রভা দেব, অনুপা ঘোষ দাস এবং সম্ভাব্য শিশু দত্তক গ্রহণকারী পূজা রায়। সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের অতিরিক্ত অধিকর্তা এল রাঞ্জল।

