আগরতলা, ২২ নভেম্বর: ৮২ মাইল বাজার সংলগ্ন কাঞ্চনচড়া দারলং বস্তি এসবি স্কুলের চিত্র অত্যন্ত নাজুক। সিলিং ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থেকে শুরু করে প্রশাসনিক উদাসীনতা—নানা সমস্যায় এখন কার্যত পটল পাটনে ঠেকেছে বিদ্যালয়টির অবস্থা। স্থানীয়দের অভিযোগ, এডিসি প্রশাসনের অধীনে থাকা এই স্কুলটি চরম গাফিলতির মধ্য দিয়ে চলছে, যা ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
বিদ্যালয়ের নথি অনুযায়ী, স্কুলে মোট ৩৭ জন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি রয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকা মিলে রয়েছেন ৫ জন। কিন্তু বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা স্কুল পরিদর্শনে গেলে দেখা যায়, উপস্থিত রয়েছে মাত্র ১৭ জন ছাত্র-ছাত্রী। তিনটি শ্রেণিকক্ষ মিলে পাওয়া যায় কেবলমাত্র তিনজন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে।
এর পাশাপাশি আরও বড় প্রশ্ন উঠে আসে মিড-ডে মিল নিয়ে। পরিদর্শনের সময় কিচেন রুম বন্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। দায়িত্বপ্রাপ্ত মিড-ডে মিল কর্মীও উপস্থিত ছিলেন না। পরে এক শিক্ষক ফোন করে ডেকে আনেন তাঁকে, এবং সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে তিনি তড়িঘড়ি রান্নার কাজ শুরু করেন। নিয়মিত খাবার সরবরাহে এই ধরনের অনিয়ম ছাত্র-ছাত্রীদের পুষ্টির ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।
এদিকে, শ্রেণিকক্ষের সিলিং বহুদিন ধরে ভগ্নদশায় পড়ে আছে। যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে বলে শিক্ষকরাই জানান। অথচ এখনো পর্যন্ত কোনও সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সরকার ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার মানোন্নয়নে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করলেও এই স্কুলে তার উল্টো বাস্তবতা চোখে পড়ে—অবকাঠামো জরাজীর্ণ, উপস্থিতি কম, আর শিক্ষার পরিবেশ কার্যত ভেঙে পড়ার মুখে।
অভিভাবকরা দাবি করেছেন, যদি দ্রুত স্কুলের পরিকাঠামো মেরামত, মিড-ডে মিলের মানোন্নয়ন এবং শিক্ষক উপস্থিতি নিশ্চিত না করা হয়, তবে তাদের সন্তানদের নিরাপত্তা ও শিক্ষার ভবিষ্যৎ দুটোই বিপন্ন হয়ে পড়বে।
স্থানীয় প্রশাসনের তরফে ঘটনার বিষয়ে কোনও মন্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি। তবে এলাকাবাসী দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এডিসি প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।

