বিশাখাপত্তনমে গুগলের ১৫ বিলিয়ন ডলারের এআই হাব, ভারতে সর্ববৃহৎ ডেটা সেন্টার গড়ে তোলার পরিকল্পনা

নয়াদিল্লি/বিশাখাপত্তনম, ১৪ অক্টোবর: বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ প্রযুক্তি সংস্থা গুগল ঘোষণা করেছে, আগামী পাঁচ বছরে তারা ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে ১৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হাব গড়ে তোলার জন্য। এটি হবে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে গুগলের সবচেয়ে বড় এআই প্রকল্প।

নয়াদিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে গুগল ক্লাউডের সিইও থমাস কুরিয়ান জানান, “যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে এটিই হবে আমাদের বৃহত্তম এআই হাব।” এই এআই হাবটি গড়ে তোলা হবে অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলীয় শহর বিশাখাপত্তনমে, যেখানে গুগলের মূল সংস্থা আলফাবেট ইনক একটি ১-গিগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ডেটা সেন্টার ক্যাম্পাস তৈরি করবে।

প্রথমদিকে অন্ধ্রপ্রদেশের কর্মকর্তারা এই বিনিয়োগের পরিমাণ ১০ বিলিয়ন ডলার বলে উল্লেখ করেছিলেন, তবে গুগলের তরফে তা বাড়িয়ে ১৫ বিলিয়ন ডলার করা হয়েছে।

বিশ্বব্যাপী বড় প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর পরিষেবার ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে ডেটা সেন্টার পরিকাঠামো তৈরির প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। গুগল একাই এই বছর প্রায় ৮৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করার পরিকল্পনা নিয়েছে ডেটা সেন্টার সম্প্রসারণে।

এআই প্রযুক্তি ব্যবহারে প্রচুর কম্পিউটিং শক্তি প্রয়োজন, যার ফলে বিশেষায়িত ডেটা সেন্টারের চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়েছে। এই ধরনের ডেটা সেন্টারে হাজার হাজার চিপ সংযুক্ত করে বিশাল কম্পিউটিং ক্লাস্টার তৈরি করা হয়।

এর আগেই মাইক্রোসফট ও অ্যামাজনের মতো প্রযুক্তি জায়ান্টরা ভারতে কয়েক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে একাধিক ডেটা সেন্টার তৈরি করেছে। ভারতে প্রায় এক বিলিয়ন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী থাকায় এটি বিশ্বের প্রযুক্তি বাজারে একটি গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য হয়ে উঠেছে।

রয়টার্স জুলাই মাসে প্রথম গুগলের এই পরিকল্পনার খবর প্রকাশ করেছিল। রিপোর্টে বলা হয়, বিশাখাপত্তনমের এই ডেটা সেন্টার হবে এশিয়ার মধ্যে বিনিয়োগ ও ক্ষমতার দিক থেকে সর্ববৃহৎ। এই প্রকল্পটি গুগলের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় (সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডসহ) ডেটা সেন্টার সম্প্রসারণ কর্মসূচির একটি অংশ।

অন্ধ্রপ্রদেশের আইটি মন্ত্রী নারা লোকেশ এই বিনিয়োগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “ডেটা যেখানে নতুন তেল, সেখানে এই ধরনের উদ্যোগ আমাদের জন্য কৌশলগত সুবিধা এনে দেবে।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই এআই হাব শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত পরিকাঠামোই নয়, ভারতের ডিজিটাল ইকোনমি ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।