আগরতলা, ১০ সেপ্টেম্বর : দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে আমবাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী। কিন্তু নাইলাহা বাড়ি এলাকায় আসতেই বিরোধী দলনেতার গাড়ি আটকে কালো পতাকা দেখিয়ে গো-ব্যাক স্লোগান তুলেছে অরাজনৈতিক দল জনজাতি সমাজ। তাঁদের অভিযোগ, ত্রিপুরার ঐতিহ্যবাহী পোশাক রিসা-কে অপমান করেছেন জিতেন্দ্র চৌধুরী। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা আমবাসায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এদিকে, সিপিআইএমের তরফ থেকে পাল্টা বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশাল পুলিশ বাহিনীকে মোতায়েন করা হয়েছে।
ঘটনার বিবরণে জানা গিয়েছে, আজ আমবাসা টাউন হলে প্রয়াত কমরেড সীতারাম ইয়েচুরির প্রথম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে একটি স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানেই অংশ নিতে আমবাসার পথে ছিলেন জিতেন্দ্র চৌধুরী। কিন্তু নাইলাহা বাড়ি এলাকায় প্রবেশ করতেই জনজাতি সমাজের সদস্যরা তাঁর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে, বিপুল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয় এবং বিরোধী দলনেতাকে নিরাপত্তার মধ্যে সভাস্থলে পৌঁছে দেওয়া হয়।
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী জনজাতি সমাজের এক সদস্য সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, কিছুদিন আগে বিরোধী দলনেতা রিশার বিষয়ে এমন মন্তব্য করেছেন যা জনজাতি সম্প্রদায়ের সংস্কৃতিকে অপমান করেছে। এই অপমান শুধু জনজাতিদের নয়, গোটা ত্রিপুরাবাসীর। জিতেন্দ্র চৌধুরী নিজে একজন জনজাতি হয়েও কিভাবে রিসা মতো গর্বের পোশাক নিয়ে এমন মন্তব্য করতে পারেন, প্রশ্ন তুলেন তিনি। তাঁদের দাবি, জিতেন্দ্র চৌধুরী যেন অবিলম্বে গোটা ত্রিপুরাবাসীর কাছে ক্ষমা চান।অন্যথায় আগামী দিনে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটবে জনজাতি সমাজ।
এই ঘটনার পরপরই আমবাসা টাউন হল থেকে সিপিআইএমের পক্ষ থেকে পাল্টা প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয়। সেখানে জিতেন্দ্র চৌধুরী নিজেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, আমি যখন বন, তথ্য সংস্কৃতি মন্ত্রী ছিলাম,তখনই প্রথম ত্রিপুরায় রিসা চালু করেছি। আজ আমার বিরুদ্ধেই এই মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আসলে এটা এক রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। বিজেপি সরকার জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরাতে এই ধরণের চক্রান্ত করছে। তাঁর অভিযোগ, তাঁদের উদ্দেশ্য স্পষ্ট সিপিআইএমের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা এবং বিভাজনের রাজনীতি করে জনজাতি সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করা।
আজকের তথাকথিত জনজাতি সমাজের বিক্ষোভের আড়ালে ছিল বিজেপির জনজাতি মোর্চার সদস্যরা। এই ঘটনা ত্রিপুরার রাজনৈতিক সমীকরণে নতুন করে উত্তাপ ছড়াতে পারে। বিশেষত, আগামী নির্বাচনের আগে জনজাতি ভোটব্যাঙ্ক নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে টানাপোড়েন বাড়ছে।

